এই প্রশ্ন টি অসম্পূর্ণ। এটা ঠিক নয় যে স্ত্রীদের সেক্স এ অনীহা আছে। কোনো স্ত্রী যদি তার স্বামীর সঙ্গে সেক্স এ অনীহা প্রকাশ করে তার মানে এই নয় যে তার সেক্সে অনীহা আছে। প্রশ্নটা হওয়া উচিৎ এই রকম ।
অনেক স্ত্রী ই স্বামীর সঙ্গে সেক্স করতে অনীহা প্রকাশ করে কেন?
উত্তর :
১. আমাদেরই এই দেশ গুলোতে পুরুষদের সেক্স এর প্রতি মাত্রারিক্ত আকর্ষণ থাকলেও সেক্স সম্মন্ধে জানার আগ্রহ কম। আরো ভালো ভাবে বললে ভালো যে নারীদের সেক্স সমন্ধে জানার ইচ্ছা কম। পুরুষরা নিজেদের সেক্স ও সেক্স জীবন সম্পর্কে খুব সচেতন। কিন্তু যখন নারীদের সেক্স ও সেক্স জীবন নিয়ে সচেতন হবার প্রসঙ্গ আসে তখন এড়িয়ে যায় বা নারীদের সেক্স নিয়ে বদনাম করে।
তাই এইরকম প্রশ্ন ওঠে যে কোনো নারী কেনো সেক্স নিয়ে অনীহা দেখায়।
২. পুরুষরা বুজতে চায় না যে নারীদের সেক্স নিয়ে মানসিকতা , চাওয়া পাওয়া, ভাবনা চিন্তা ইত্যাদী পুরুষদের থেকে অনেকটা আলাদা। পুরুষরা নিজের ভাবনা চিন্তা অনুসারে নারীদের সেক্স ও সেক্স জীবন কে বিশ্লেষণ করতে যায়। আর তাই প্রায়ই ভুল ধারনা তৈরি করে।
তাই এইরকম প্রশ্ন ওঠে যে কোনো নারী কেনো সেক্স নিয়ে অনীহা দেখায়।
৩. আমাদের সমাজে নারীদের যৌনতা কে খুব নিচু নজরে দেখা হয়। তাকে নানা ভাবে অপমানিত করা ও দাবিয়ে দেয়া হয়। যে নারী সেক্স নিয়ে কথা বার্তা বলে বা নিজের যৌনিতার অভিব্যাক্তি করে, তাদের সঙ্গে দুশ্চরিত্রা, পতিতা, বেশ্যা ইত্যাদি ট্যাগলাইন জুড়ে দেয়া হয়। যার ফলে নারী তার যৌনতা নিয়ে কিছুই প্রকাশ করে না। আর পুরুষরা আরও অন্ধকারে ঘুরে বেড়ায়।
তখন এরা নিজেদের এই বলে সান্তনা দেয় যে নারীদেরকে বোজা কঠিন।
৪. নারীদের যৌনতাকে দাবিয়ে রাখা হয় বলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যৌনতার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
৫. পুরুষ নিজের উত্তেজনা মেটানোর জন্যে স্ত্রীর ইচ্ছা অনিচ্ছার তোয়াক্কা না করেই প্রয়োজনে জোর করে সঙ্গম করে। যেটা কে ধর্ষণ বলে। এই ভাবে বেশিরভাগ নারীরাই নিজের স্বামী কর্তৃক ধর্ষিত হয়। এটা কালক্রমে স্ত্রীর মধ্যে স্বামীর সঙ্গে সঙ্গমে আকর্ষণ হারিয়ে ফেলে।
আমি এই Quora তেই এমন অনেক বাংলাদেশী পূরুষ এর সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েছিলাম যেখানে এরা স্ত্রী কে ধর্ষন করা কে অধিকার বলে মনে করে। এটা ভাবার কোনো কারণ নেই যে অল্প শিক্ষিত পুরুষদেরই এই রকম মনোভাব দেখা যায় । উচ্চ শিক্ষিত পুরুষদেরও অনেকের এই মনো ভাব আছে। কিছু দিন আগে এক বাংলাদেশী MBBS ছাত্রের সঙ্গে এই রকম একটা তর্কে জড়িয়ে পড়ি।
এটা ভাবার কোনো কারণ নেই যে ভারতের পূরুষ রা এই রকম ভাবেন না। যদিও শহরের শিক্ষিত পুরুষদের মধ্যে মানসিকতা অনেক উন্নত হয়েছে। আর যাদের মানসিকতায় এখনও ওই রকম নিম্ন মানের, তারা প্রকাশ করতে লজ্জা পায়।
৬. আজকাল পুরুষদের যৌণ জীবনে পর্নো অনেক ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলেছে। পুরুষেরা পর্নো সেক্স আর বাস্তব জীবনের সেক্স কে গুলিয়ে ফেলেন। তারা পর্নে যা দেখেন সেটাই স্ত্রীর সঙ্গে করতে চান। যেমন বেশিরভাগ স্বামীর anal sex করার ইচ্ছা থাকে । আর এই জন্যে তারা স্ত্রীর কে জোর করেন । আর এই সব করতে গিয়ে স্ত্রীরা sexual injuries বা যৌণ আঘাত পান। আবার স্বামীরা এমন সব কাজ করতে বলেন যা স্ত্রীরা করা পছন্দ করেন না। যেমন oral sex।
ফলে স্ত্রীরা স্বামীর সঙ্গে সঙ্গমে অনীহা প্রকাশ করে।
৭. সমকামিতা একটা বাস্তব সত্য। এটা কোনো রোগ নয়। জীব বিজ্ঞানীরা এটাকে রোগ বলেন না।
অনেক স্ত্রী ই সমকামি হয়ে থাকেন। তারা কোনো পুরুষের সঙ্গে সঙ্গমে আনন্দ পান না। তাই স্বামীর সঙ্গে সঙ্গমে তাদের অনীহা থাকে।
৮. সমকামিতার মতো আকামিতা ( asexual ) এক ধরনের যৌনতা। এঁরা কোনো ধরনের যৌনতা পছন্দ করে না। এদের সংখ্যা কম হলেও আছে। কিছু স্ত্রী সত্যিই আকামি হয়ে থাকেন।
৯. কিছু নারী বা পুরুষ demisexual হয়ে থাকেন। এঁরা শুধু মাত্র এমন কারু সঙ্গে যৌনতা পছন্দ করেন যার প্রতি এদের আসক্তি আছে। পুরোপুরি না হলেও নারীদের মধ্যে আংশিক demisexuality দেখা যায়। নারীরা সাধারণত নিজের পছন্দের পুরুষ এর সঙ্গে সঙ্গমে বেশি আগ্রহী হয়। তাই স্বামীর জন্যে তার মনে আবেগ না থাকলে সে স্বামীর সঙ্গে সঙ্গমে আকর্ষণ অনুভব করে না।
১০. যে কোনো নারী শারীরিক বা মানসিক ভাবে সুস্থ না হলে সে স্বামীর সঙ্গে সঙ্গমে আকর্ষণ হারিয়ে ফেলে। এমন কি ছোটো সমস্যাও তার যৌণ জীবনে প্রভাব ফেলে।
আরো অনেক কিছু বোঝার আছে। আগে এগুলোই ভালো করে বুজুন।