১১ বছর ধরে নিখোঁজ জাকির হোসেনের সন্ধান চেয়ে ছাত্রশিবিরের বিবৃতি

২০১৩ সালের ৩ এপ্রিল ঢাকা থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহীনি কর্তৃক গ্রেপ্তারকৃত ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর পশ্চিম শাখার আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, মেধাবী ছাত্রনেতা হাফেজ জাকির হোসেনের সন্ধানের দাবীতে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তারের পর গুম হওয়া সন্তানের জন্য পিতামাতার প্রতিক্ষার প্রহর দীর্ঘ হলেও অমানবিক আচরণেই অটল রয়েছে প্রশাসন।

২০১৩ সালের ২ এপ্রিল দিবাগত রাত ৪টায় সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শ্যামলী রিং রোডের ১৯/৬ টিক্কাপাড়া, বাসা থেকে হাফেজ জাকির হোসেনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। পরের দিন ০৩ এপ্রিল ২০১৩ ইং তারিখে মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ এলাকায় অবস্থিত র‌্যাব-২ ক্যাম্প এবং মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানায় খোঁজ নেওয়া হয়। কিন্তু তাঁকে গ্রেপ্তারের কথা প্রশাসন অস্বীকার করে। পরে ৪ এপ্রিল তাঁর সন্ধানের বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানায় তার বড় ভাই কর্তৃক সাধারণ ডায়রি করা হয়।

সাধারণ ডাইরি নাম্বার-৩২৮। তাঁর খোঁজে সংগঠন ও পরিবারের পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে বহুবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ ১১ বছর হয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রশাসন কর্তৃক বারবার বিষয়টিকে উপেক্ষা করায় প্রমাণ হয় তারাই জাকির হোসেনকে গুম করে রেখেছে। অথচ তাঁর মা-বাবা আজও সন্তানের ফেরার অপেক্ষায় পথ চেয়ে আছেন। সহপাঠিরা তাঁকে ফিরে পাওয়ার আশায় প্রহর গুনছে। একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের মেধাবী ছাত্ররা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে এমনভাবে গুম হয়ে যাবে তা কল্পনাও করা যায়না। এটা কোন সভ্য রাষ্ট্রের আচরণ হতে পারেনা।

নেতৃবৃন্দ বলেন, অন্য সবার মত জাকির হোসেনও এদেশের সন্তান। সাংবিধানিকভাবে তার ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল আইনের ধারক-বাহকরাই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এই মেধাবী ছাত্রকে গুম করে রেখেছে। কোন সভ্য সমাজে এমন লোমহর্ষক আচরণ চিন্তা করা যায় না। এত কিছুর পরও আমরা বিশ্বাস করি জাকির হোসেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছেই নিরাপদে আছেন। আমরা আশা করি, কলিজার টুকরা সন্তানের জন্য প্রতিক্ষারত, বেদনাহত মা-বাবার প্রতিক্ষা আর দীর্ঘ করবে না প্রশাসন; তারা অবিলম্বে তাঁর সন্ধান প্রদান করবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের শপথ ও পোষাকের প্রতি সম্মান দেখিয়ে হলেও হাফেজ জাকির হোসেনকে তাঁর মা-বাবার কাছে ফিরিয়ে দিবে।

নেতৃবৃন্দ অমানবিকতার অবসান ঘটিয়ে জাকির হোসেনসহ গুম হওয়া সকল ছাত্র ও রাজনৈতিক ব্যক্তির সন্ধান ও মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

Exit mobile version