অনলাইনের মাধ্যমে মালামাল এনে দেয়ার কথা বলে প্রতারনা করে টাকা আত্মসাৎ করার অপরাধে ০১

সাইবার প্রতারককে আটক করেছে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম।

 

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

অনলাইনের মাধ্যমে মালামাল এনে দেয়ার কথা বলে প্রতারনা করে টাকা আত্মসাৎ করার অপরাধে ০১ জন সাইবার প্রতারককে আটক করেছে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম।

১। র‌্যাব প্রতিষ্ঠারলগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস্য উদঘাটন,অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। র‌্যাব-৭ চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, বিপুল পরিমান অবৈধ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার, মাদক উদ্ধার, ছিনতাইকারী, অপহরনকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারন জনগনের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

২। জনৈক ভুক্তভোগী র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম বরাবর অভিযোগ করেন যে, তিনি গত ১৭ জানুয়ারি ২০২২ খ্রিঃ তারিখে ঈযরহবংব চৎড়ফঁপঃ ওসঢ়ড়ৎঃবৎ (ডযড়ষবংধষব, চৎব-ড়ৎফবৎ, ঝযরঢ়ঢ়রহম) রহ ইধহমষধফবংয নামীয় একটি ফেইসবুক গ্রুপে শীতের পন্যের চাহিদা চেয়ে একটি পোষ্ট করেন। তার দেয়া পোষ্টে এস এম তানভিরুল আলম নামক এক ব্যক্তি কমেন্ট বক্সে ওহনড়ী সব ধষষ ধাধরষধনষব বলে ইনবক্স করে। পরবর্তীতে উক্ত ব্যক্তির সাথে ভিকটিমের ম্যাসেঞ্জার আইডিতে কথোপকথন হয়। কথোপকথনে বর্ণিত ব্যক্তির সাথে ভিকটিমের পন্যের পরিমান সহ দাম নির্ধারণ হয় ২০,০০০/- টাকা। পন্যের দামের ৫০% অগ্রীম প্রদান পূর্বক বাকি টাকা পন্য হাতে পেয়ে পরিশোধের বিষয়ে আলোচনা হয়। আলোচনাকালে উক্ত ব্যক্তি পাসপোর্ট, চাইনিজ ভিসা ও আইডি কার্ডের ছবি ভিকটিমের ম্যাসেঞ্জারে পাঠায়। পন্যের মূল্য বাবদ অগ্রীম টাকা পাঠানোর মাধ্যম জানতে চাইলে বর্ণিত ব্যক্তি বিকাশে টাকা পাঠানোর জন্য বলে। এ প্রেক্ষিতে ভিকটিম তার ব্যবহৃত পারসোনাল বিকাশ নম্বর হতে বিভিন্ন সময়ে সর্বমোট ১০,০৭৫/- টাকা সেন্ড করে। পরবর্তীতে গত ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২খ্রিঃ তারিখে ভিকটিমের চাহিদা মোতাবেক পণ্যের জন্য বর্ণিত ব্যক্তির সাথে তার দেয়া নাম্বারে যোগযোগ করার চেষ্টা করলে উক্ত মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। কোনভাবেই তার সাথে যোগাযোগ করতে না পেরে ভিকটিম নিশ্চিত হন যে বর্ণিত ব্যক্তি তার সরলতার সুযোগ নিয়ে প্রতারণা করে উল্লেখিত টাকা আত্মসাৎ করেছে। অতঃপর গত ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ খ্রিঃ তারিখে বর্ণিত বিষয়ে ভিকটিম পাঁচলাইশ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এবং র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামকে অবহিত করেন। ভিকটিমের অভিযোগের প্রেক্ষিতে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম উক্ত আসামীকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে ব্যপক গোয়েন্দা নজরদারী এবং ছায়াতদন্ত শুরু করে। নজরদারী এবং ছায়াতদন্তের একপর্যায়ে র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম জানতে পারে যে, উক্ত আসামী চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়া থানাধীন রাহাত্তরপুল এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ১২ মার্চ ২০২২ইং তারিখ ২০৪৫ ঘটিকায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামের একটি আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী এস এম তানভিরুল আলম (২৫), পিতা-এস এম শাহ আলম, সাং-ছিপাতলী থানা-হাটহাজারী, জেলা-চট্টগ্রামকে আটক করে।

৩। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত আসামী অকপটে স¦ীকার করে যে, সে মোবাইলে অনলাইনের মাধ্যমে অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের সাথে প্রতারণা করেছে। এছাড়াও ধৃত আসামী আরো স্বীকার করে যে, সে চায়না হতে পন্য এনে দেওয়ার কথা বলে চায়না ভিসা ও পাসপোর্ট প্রদর্শনের মাধ্যমে বিশ্বাস স্থাপন করে অনেক লোকের নিকট হতে প্রতারনা করে বিকাশের মাধ্যমে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছে।

৪। মূলতঃ ধৃত আসামী তানভীর একজন সাইবার অপরাধী যার ফেসবুক-কেন্দ্রিক ব্যবসা রয়েছে, সে করোনা মহামারীকে কাজে লাগিয়ে তার “বিদেশী পণ্য সরবরাহের ব্যবসা” গড়ে তুলেছে। সে লোভনীয় মূল্যে অসংখ্য পণ্যে অফার করেছে, সেই পণ্যগুলির জন্য গ্রাহকের কাছ থেকে অগ্রিম টাকাও নিয়েছেন কিন্তু গ্রাহকদের তা সরবরাহ করেনি। সে অনলাইনে বিভিন্ন পণ্যের চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে নিম্নমানের পণ্য পাঠাচ্ছে এবং প্রায়ই আসল পণ্য না দিয়ে তার পরিবর্তে আলু, পটল, পেঁয়াজ বা সাবানের মতো পণ্য পাঠিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ আছে। বিকাশের টাকা গ্রহণের জন্য সে নিজের নাম্বার ব্যবহার না করে তার পরিচিত নিরক্ষর এবং নিম্ন আয়ের লোকদের মোবাইল নাম্বারকে তাদের অজান্তেই বিকাশ নম্বর হিসাবে ব্যবহার করে, যখন কেউ টাকা পাঠায়, তখন বিকাশ অ্যাকাউন্টধারীকে বলে যে কেউ তার চিকিৎসার জন্য টাকা পাঠিয়েছে।

৫। উল্লেখ্য যে, ধৃত আসামী কর্তৃক ইতিপূর্বে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে ম্যাসেঞ্জারে ভিকটিমের সাথে কথোপকথনের স্ক্রীন শর্টের ২৫ কপি আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়।

৬। গ্রেফতারকৃত আসামীর সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Exit mobile version