আদালতের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘণ দুমকিতে দোকান ভেঙ্গে প্রভাবশালীর জোড়পূর্বক জমি দখল এর অভিযোগ

দুমকি(পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর দুমকিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞার জমিতে জোড়পূর্বক দোকান ভেঙ্গে চলাচলের রাস্তা নির্মাণে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে একটি প্রভাবশালীচক্র। অবৈধ জনতাবদ্ধে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে স্টলদোকানের পেছনের দেয়াল ভেঙ্গে ভেতরে রাতারাতি বাউন্ডারি ওয়াল ও কথিত রাস্তা নির্মাণ করছে ওই প্রভাবশালীচক্রটি। এমন জবর-দখলে বাঁধা দেয়ায় বিরোধপূর্ণ সম্পত্তির প্রকৃত ওয়ারিশদের ওপর হামলা ও হুমকি-ধমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা শহরের নূতন বাজার এলাকায় দুমকি-বাউফল মহাসড়কের দক্ষিণ পাশরস্থ মৃত আবদুল মজিদ মাস্টারের স্ত্রী মমতাজ বেগম, দুই ছেলে কলেজ অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন, অধ্যক্ষ জামাল হোসেন, দু‘কন্যা মর্জিনা ও হেলেনা বেগমের দুমকি মৌজার এসএ ৪৩৮ খতিয়ানে ১২৪২ ও ১২৪৩ দাগের যৌথ মালিকানার জমিসহ ৭টি স্টল-দোকানঘর রয়েছে, যা বিভিন্ন ব্যবসায়িদের কাছে ভাড়া দেয়া হয়েছে। ওই স্টল দোকানের ভাড়াটে ব্যবসায়ি সর্দার এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. সহিদ সর্দারের কুপরামর্শে তার উঠতি ধনাঢ্য নিকটাত্মীয় জলিশা গ্রামের জনৈক মমতাজ মাস্টারের ছেলে ফেয়ার ইউনাইটেড গ্রুপের এমডি মো: মাসুদ আল মামুন বাবু ওরফে মুরগী বাবু গোপনে মেয়েদের ৬শতাংশ জমি ক্রয় করেন। বিষয় জানাজানির পর মৃত. মজিদ মাস্টারের বড় ছেলে অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন সুমন পটুয়াখালী বিজ্ঞ আদালতে একটি রিডাকশন মামলা দায়ের করেন। (মামলা নং ২৪/২৩ তারিখ ২/৩/২৩)। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অস্থায়ি নিষেধাজ্ঞাও প্রদান করেছেন।
এদিকে অস্থায়ি নিষেধাজ্ঞা টের পেয়ে গত বৃহস্পতিবার(১৬ মার্চ) রাত সাড়ে ১০ টার দিকে কতিপয় ভাড়াটে মাস্তান-সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজন ঘটনাস্থলে ত্রাস সৃষ্টি করে ওই দোকানের সামনে সাটারবন্ধ রেখে পেছনের দেয়াল ভেঙে ফেলে। এবং রাতারাতি বাউন্ডারি ওয়াল ও রাস্তা নির্মাণ কাজ দ্রæততার সাথে শুরু করে। এসব অবৈধ দখলদাড়িত্বে বাঁধা দিতে গেলে সন্ত্রাসী বাহিনী উপস্থিত লোকজনের সামনেই অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন সুমন ও তার পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এ বিষয়ে অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন সুমন দুমকি থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছেন। পুলিশ ডায়েরির সরেজমিন তদন্তে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা মেলায় কাজ বন্ধ করে দিলেও তারা তা মানছে না। পুলিশ চলে যাওয়ার পরে ফের পুরোদমে কাজ করছে। অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন অভিযোগ করেন, প্রভাবশালী মুরগি বাবু অঢেল কালোটাকার মালিক। অবৈধ অর্থের জোড়ে পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে আমাদের সম্পত্তি জোড়পূর্বক গ্রাস করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
জবর-দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে মেসার্স সরদার এন্টারপ্রাইজের মালিক মো: সহিদ সর্দার বলেন, নগদ টাকায় ওই জমি কিনে নিয়েছেন। ক্রয়কৃত জমির দোকান-স্টল ভেঙ্গে রাস্তা নির্মাণ কাজ করছেন। উল্টে তারা বে-আইনী ভাবে কবলাদারকে বাঁধা প্রদানসহ হয়রানি করছেন। ওই জমির কবলাদার (গ্রহিতা) ফেয়ার ইউনাইটেড লি:‘র মালিক মাসুদ আল-মামুন ওরফে বাবু বলেন, এখানে জোড়-দখলের কোন ঘটনাই ঘটেনি। বৈধ অর্থে জমি কিনেছি। নগদ টাকা নিয়ে একবছর ঘুড়িয়েছে। পরে স্বেচ্ছায় দু‘টি কবলা দলিলে সম্পত্তি বিক্রি করেছে। এটা গোপন দলিল নয়, রেজিষ্ট্রি অফিসে এসে প্রকাশে দলিল দিয়েছে। নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গের জবাবে বলেন, আদালতে মামলা বা নিষেধাজ্ঞার কোন নোটিশ পাইনি। অমান্যের অভিযোগ সঠিক নয়।
দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুস সালাম এঘটনায় সাধারণ ডায়েরির সত্যতা নিশ্চিৎ করে বলেন, কাজ আপাতত: বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অভিযোগ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। নিষেধাজ্ঞার প্রশ্নে বলেন, এটি দেওয়ানী বিষয়-আদালতে ফয়সালা হবে-এখানে পুলিশের কিছুই করার নেই।
#
Exit mobile version