আল্লামা সাঈদী কোরআনের রাজ প্রতিষ্ঠায় পেরেশান ছিলেন : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, আল্লামা সাঈদী এদেশের ইসলামী আন্দোলনের পথিকৃৎ ছিলেন। তিনি কোরআনের দাওয়াত নিয়ে দেশের সর্বত্র ছুটে যেতেন। তিনি কোরআনের রাজ প্রতিষ্ঠায় পেরেশান ছিলেন।

তিনি আজ বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে ভার্চুয়ালি আয়োজিত শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (রাহি.) এর ‘জীবন ও কর্ম’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান-এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা আবদুল হালিম, মরহুমের মেজোপুত্র শামিম বিন সাঈদী। এতে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী, লস্কর মো. তসলিম, কবির আহমাদ, মুজিবুর রহমান ভূঁইয়া, সহ-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আলমগীর হোসাইন প্রমুখ।

অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, আল্লামা সাঈদী সর্বদা মানুষদের সালাম দিতেন। এটি আল্লাহ রাসুল (সা.) একটি সুন্নাহ। তাঁকে যখন পিজি হাসপাতালে নিয়ে আসা হলো উপস্থিত লোকদের হাসি মুখে সালাম দিয়েছেন। তাঁর এই হাসি জান্নাতি হাসি।

তিনি বলেন, আল্লাম সাঈদীকে বাতিল শক্তি ভয় পেতো। কারণ তাঁর সুমিষ্ঠ কণ্ঠ মানুষদের কোরআনের পথে আহ্বান জানাতো। তাঁর আহ্বানে বহু মানুষ সত্য ও সুন্দরের পথে ফিরে এসেছে। বহু অমুসলিম তার মাহফিলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে। দেশের পাশাপাশি বিদেশেও বহু বিধর্মী ইসলামের সুশীতল ছায়ায় এসেছে।

অধ্যাপক মুজিব তাঁর কারা জীবনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমি যখন কারাগারে গিয়েছি তখন শীতকাল। আল্লামা আমার কারাগারে যাওয়ার কথা শুনে আমার জন্য শীতের কাপড়-চোপড় পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। আমি জানতে পারলাম কারাগারের গরিব কয়েদীদের পাশাপাশি কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তিনি নিয়মিত মেহমানদারি করতেন। তাঁদের বিভিন্ন সময়ে কাপড় উপহার প্রদান করতেন। তিনি ছিলেন উদার মনের অধিকারী। তিনি জুলুম শিকার হলেও নিজেকে সর্বদা অপরের খেদমতে নিয়োজিত রেখেছেন।

তিনি আরও বলেন, আল্লামা সাঈদীকে সরকার সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করেছে। তাঁর জন্য সরকার মেডিকেল বোর্ড গঠন করেনি। তাঁকে আগে যেখানে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল সেখানে নেওয়া হয়নি। সুকৌশলে মৃত্যুর মুখে ঠেলা দেওয়া হয়েছে। তাঁর জানাজা ঢাকায় করতে না দিয়ে সরকার শতাব্দীর নিকৃষ্ট কাজ করেছে।

আবদুল হালিম বলেন, আল্লামা সাঈদী সাহসিকতা ও বলিষ্ঠতার সাথে তাফসির ময়দানে ভূমিকা রেখেছেন। তিনি মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর তাফসিরে বহু শ্রমজীবী মানুষ অংশগ্রহণ করতো। তিনি ছিলেন দেশ-বিদেশের সুপরিচিত আলেমে দ্বীন ও দায়ী।

তাঁর মেজোপুত্র শামিম বিন সাঈদী আল্লামার স্মৃতিচারণ করে বলেন, তাঁর বাবা ১৯৮৫ সালে যখন তাঁদের ভবন তৈরি করেছিলেন, তখন তিনি শ্রমিকদের মজুরি অগ্রীম প্রদান করেছেন। তিনি তাঁদের জন্য বাসায় খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। আল্লামা সাঈদী যখন পিরোজপুর যেতেন কৃষকদের জড়িয়ে ধরতেন। তাঁদের আপ্যায়ন করতেন। নামাজের তাগিদ দিতেন। তিনি শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে বহু কথা বলেছেন।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেন, আল্লামা সাঈদীর মাহফিলে শ্রমজীবী মানুষরা মৌমাছির মতো ছুটে আসতেন। ১৯৭৬ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের তাফসির মাহফিলে তাঁর তাফসির শোনার জন্য মানুষ বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিল। তিনি আজন্ম বাতিলের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। মানুষদের সত্যের পথ দেখিয়েছেন।

Exit mobile version