বরগুনা: বরগুনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত একটি মদনটাক পাখি উদ্ধার করে এক ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে পাখিটি জবাই করে মাংস ভাগ করে নিয়ে উল্লাস করেছে এলাকাবাসী।
পাখিটির মাংস কেটে ভাগ করার অনেক সময় পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে বন বিভাগের লোকজন। তবে এ ঘটনায় গাঢাকা দিয়েছে ইউপি সদস্য।
আজ সোমবার ( ১০ মার্চ) সদরের ১নং বদরখালী ইউনিয়নের তেতুলবাড়িয়া হাই স্কুল সড়ক (কানার বাড়ি) এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
পাখি উদ্ধারের খবর পেয়ে বন ও পরিবেশ কর্মী আরিফ রহমান ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই বিলুপ্তপ্রায় পাখিটি জবাই করে মাংস ভাগ করার নেতৃত্ব দেয় ওই এলাকার ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম সহ এলাকার বাসিন্দা আব্বাস মিয়া ও মনির খলিফা।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল ১০ টার দিকে তেতুলবাড়িয়া নদীর পাড়ে একটি ফসলি মাঠের পাশে খেলা করছিলো ৭-১০ বছরের কয়েকজন যুবক। এসময় ডানায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মদনটাক পাখিটি আহত হয়ে আশ্রয় নেয়ার জন্য নদীর পাড়ে বসে। শিশুরা আব্বাস মিয়াকে জানালে সে ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম ও মনির খলিফাকে সাথে নিয়ে পাখিটিকে ধরে নিয়ে জবাই করে। এসময় এলাকার লোকজন জড়ো হলে তারা মাংস ভাগাভাগি করে উল্লাস করে।
বন ও পরিবেশ কর্মী আরিফ রহমান এবিষয়ে বলেন, মদনটাক পাখিটি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আহত হয়ে আশ্রয় নেয়ার জন্য গিয়ে প্রাণ হারালো গ্রামবাসীর হাতে। সবার সামনে মদনটাক পাখিটি জবাই করে উল্লাস করে।
দুদিন আগেই বন্যপ্রাণী দিবস পালন হলো, অথচ আমরা সচেতন করতে পারিনি আমাদের চারপাশের মানুষদের। তাহলে প্রতি বছর দিবস পালন করে লাভ কি! একজন জনপ্রতিনিধির নেতৃত্বে এই জঘন্য কাজ সংঘটিত হয়েছে। এই দায় সবার।
আরিফ রহমান বলেন, এখানে পাশেই বিষখালি নদীর মাঝের চরে অনেক পাতা বন আছে। এ পাখিগুলো নিরাপদ জায়গায় খুঁজে। এটা একটা পাখি না আরো পাখি আছে এখানে। পাখি গুলিবিদ্ধ মানেই এটা প্রমাণ করে যে, পেশাদার পাখি শিকারি এখনো পাখি শিকার করছে।
এদিকে এই ঘটনার পর গাঢাকা দিয়েছে ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম ও অন্যান্যরা। মুঠোফোনে কল দিয়ে বন্ধ পাওয়া যায় তাদের ফোন নাম্বার।
বরগুনা সদরের বিট অফিসার জালাল আহমেদ খান ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁড়া অজুহাত দিয়ে জানান, সড়ক পথ ভাঙা থাকায় আমাদের পৌঁছাতে সময় লেগেছে। তবে, আমরা পৌঁছানোর আগেই পাখিটি জবাই করে হত্যা করে মাংস ভাগ করে নিয়েছে এলাকার লোকজন। আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি পাশাপাশি আলামত জব্দের চেষ্টা করছি। এই ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।