মুসলিম-অমুসলিম পরে বুঝলেও চলবে। প্রথমে ধনী বুঝুন। আজকে আপনাকে ধনী জিনিসটা ভালোভাবে চিনিয়ে দিব। উপরের ছবির এই লোকদের সবাই চেনেন। তারা বিশ্বের সেরা ধনী বলে পরিচিত। আসলে, তাদের প্রতিষ্ঠান অনেক বড়, তারা অনেক বড় ব্যাবসা করে। এদের সবারই নিজস্ব জেট-বিমান আছে। সেগুলো তাদের স্টাটাস এর সাথে মানানসই। তবে, সম্পদ থাকলেই ধনী হয় না। আসল ধনী হলো তারা, যারা নিজের বিলাসিতার জন্য অযথা খরচ করে। তেমন কিছু বিলাসী ধনী দেখবো।
উপরের ছবিতে যে ছোট বিমানটি দেখা যাচ্ছে, ওটা একটি প্রাইভেট জেট। বড়টি একটি যাত্রীবাহী বিমান। বড় বিমানটা Airbus-320 অথবা Boeing-737। Airbus ও Boeing এই দুইটা হলো বিমান প্রস্ততকারক কোম্পানির নাম। বড় প্লেন, Airbus-320 বা Boeing-737 সাধারনত ব্যাক্তিগত হয় না। এয়ারলাইনসগুলো যাত্রী পরিবহন করার জন্য এই ধরনের বড় প্লেন কেনে। দুনিয়াতে মাত্র কয়েকজন মানুষের ব্যাক্তিগত Airbus-320 বা Boeing-737 আছে। তাদের মধ্যে বিশেষ দুইজন ধনী ব্যাক্তিকে চিনিয়ে দিচ্ছি।
উপরের ছবিতে, ডানপাশে একটি বড় বিমান, এবং বাম পাশে দুটি ছোট বিমান দেখছেন। এটা হলো বিশ্বের একমাত্র বাড়ি, যেখানে Boeing-737 বিমান পার্ক করা থাকে। এটা হলো হলিউডের অভিনেতা John Travolta এর বাড়ী। তিনি নিজেই একজন পাইলট। বড় বিমানটি উড়ানোর জন্য নিজের বাসার সামনে ২ কিলোমিটার লম্বা রান-ওয়ে বানিয়েছে। আবারও বলছি – তিনি বিশ্বের একমাত্র মানুষ যে এমন বড় সাইজের Boeing-737 বিমান নিজের বাসায় রাখেন।
উপরে ছবিতে, ডানপাশের ছোট বিমানটি হলো Airbus-320। হ্যাঁ, এটি হলো একটি সাধারন যাত্রীবাহী বিমান। এটার সাইজ Boeing-737 এর সমান। বাম পাশের বড় বিমানটি হলো Airbus-380। এটা বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাইজের যাত্রীবাহী বিমান। সারা দুনিয়াতে এই বিমান আছে মাত্র ২৫০ টি। শুধুমাত্র বড় এয়ারলাইনস ছাড়া, বেশিরভাগ এয়ারলাইন্স এই Airbus-380 বিমান কিনতে পারে না। দুনিয়াতে মাত্র একজন মানুষ আছে, যার ব্যাক্তিগত Airbus-380 আছে।
এই লোকটি সৌদী যুবরাজ ওয়ালিদ বিন তালাল। ছবিতে তিনি নিজের Airbus-380 এর ভেতরে বসে আছেন। এটা ব্যাক্তি মালিকানায় বিশ্বের একমাত্র Airbus-380 বিমান। এই প্লেনের ভেতরে, গাড়ি ঢুকিয়ে নেওয়া যায়। প্লেনের ভেতরে, ঘোড়া ও উটের জন্য বিশেষ ঘর আছে। এই প্লেনে একটি নামাজের ঘর আছে, যেটা স্বয়ংক্রিয় ভাবে মক্কার দিকে ঘুরে যায়। উল্লেখ্য, যুবরাজ ওয়ালিদ John Travolta এর মতন প্লেন চালাতে পারেন না। তাই হয়তো, প্লেনটি নিজের বাড়িতে রাখেন না।
এতক্ষন বিমানের ব্যাপারে অনেক কিছু বুঝিয়ে বলতে হয়েছে। কিন্তু উপরের ছবির এই বাড়িটির ব্যাপারে তেমন কিছুই বলা লাগবে না। বিষয়টা ভারতীয়দের মুখস্ত ; আর বাংলাদেশীরাও জানে। এটি ভারতীয় শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির বাড়ি। মুম্বাই শহরে অবস্থিত এই বাড়িটি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যায়বহুল বাসস্থান। খরচ হয়েছে ১০০ কোটি ডলার। বিলাসিতার এমন উদাহরন ভারতবর্ষে আর নেই।
অযথা খরচ করে বিলাসিতা করা ধনীর তালিকা পরিপুর্ন করতে হলে, উপরের ছবির এই দুইজনের নাম থাকতে হবে। হাসনাল বলকিয়ার ৭০০০ গাড়ি আছে। বিশ্বে আর কারো এত গাড়ি নেই। রশিদ মাকতুম এর এতগুলো গাড়ী নেই। তবে তার বিলাসিতা হলো, দামী ও স্পেশাল গাড়ি কেনা। তিনি দুবাইতে থাকলেও, লন্ডনের বিভিন্ন রাস্তায় তার ১৬০ টি ফেরারী গাড়ি পড়ে ছিলো। এই বিষয়ে লন্ডন সিটি কতৃপক্ষ অভিযোগ করলে, মাকতুম তখন লন্ডন শহরে শুধুমাত্র তার ফেরারী গাড়িগুলো সাজিয়ে রাখার জন্য একটি বিল্ডিং কিনেছেলেন।
এতক্ষন যাদের নিয়ে আলোচনা করলাম, তারাই হলো আসল ধনী। তারা অযথা বিলাসিতার জন্য কোটি ডলার খরচ করে। ওই ৫ জনের মধ্যে, ৩ জনই মুসলিম। আমি সেরা ধনীদের কথা বলেছি, আপনি অন্যান্য সাধারন ধনীদের খুঁজে দেখুন। তেমন ধরনের অযথা বিলাসিতা করা ধনী, সবচেয়ে বেশী দেখতে পাওয়া যায় মধ্যপ্রাচ্যে।
আমাদের দেশে খাল বিল ভরাট করে আবাসিক এলাকা বানায়। দুবাইতে সমুদ্র ভরাট করে কৃত্তিম দ্বীপ বানিয়ে, সেখানে আবাসিক এলাকা বানায়। তেমন আবাসিক এলাকায় প্রত্যেক বড়ির পেছনে সমুদ্র সৈকত থাকে। ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে কাতারে “লুসাইল” নামক নতুন একটি শহর বানিয়েছিলো। মক্কায় কাবা ঘরের পাশে যে ঘড়িওয়ালা বিল্ডিং দেখা যায়, ওটা বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিল্ডিং। খরচ হয়েছিল ১৫০০ কোটি ডলার। মুকেশ আম্বানির বাড়ির ১৫ গুণ বেশি। ওটা একটি হোটেল কমপ্লেক্স।
মধ্যপ্রাচ্যে পানির নীচে হোটেল আছে, ইনডোর স্টেডিয়াম আছে। এমন ATM মেশিন আছে যেখান থেকে টাকার পরিবর্তে স্বর্ণের টুকরো বের হয়। শপিং মলের মধ্যে কৃত্তিম খাল বানিয়ে রেখেছে। অন্যান্য দেশে গাড়ি চালনোর প্রতিযোগিতা হয়, দুবাইতে হয় প্লেন চালানোর প্রতিযোগিতা। শখের জন্য মানুষ কুকুর বেড়াল পোষে ; মধ্যপ্রাচ্যের মানুষ বাঘ সিংহ পোষে। এগুলো সবই সাধারন ধনীর জন্য।
এতক্ষন ধরে শুধু একটা কথাই বোঝাতে চাইছি – কোটি টাকা ফালতু খরচ করে যারা বিলাসিতা করে ; তেমন ধনীদের প্রায় সবাই মুসলিম।
উত্তরের জন্য অনুরোধ করেছেন