খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এর শিক্ষক ড. মোঃ সেলিম হোসাইনের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের শাস্তির দাবি

প্রেস বিজ্ঞপ্তি                                                                                               তারিখ: ০৩ ডিসেম্বর ২০২১

 

 

 

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মাসুদ রানা ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “ছাত্রলীগের চাঁদাবাজ নেতাদের দ্বারা মানসিক অত্যাচারের শিকার হয়ে খুলনা প্রকৌশলী ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সেলিম হোসাইনের মৃত্যুতে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছি।”ড. সেলিম হোসাইন ছিলেন ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনুয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ও লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ। হলের ডাইনিং ম্যানেজার নিয়োগে নিজের মনোনিত লোককে নিয়োগ দিতে দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে চাপ প্রয়োগ করছিলেন ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান। গত ৩০ নভেম্বর ড. সেলিম  যখন বাড়ি ফিরছিলেন তখন ছাত্রলীগের  সাধারণ সম্পাদকসহ ৪০-৪৫ জন নেতা-কর্মী তাঁর পথ রোধ করে। তাঁকে তার রুমে বিভাগীয় রুমে যেতে বাধ্য করা হয় এবং সেখানে মানসিক অত্যাচার করা হয়। এরপর বাসায় ফিরে  স্টোক করে মারা যান ড. সেলিম হোসাইন। নেতৃবৃন্দ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা ছাত্র-শিক্ষকদের আন্দোলনের প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করেছেন।

 

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, “সাধারণ শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের উপর ছাত্রলীগের হামলা ও শারীরিক – মানসিক নিপীড়নের ঘটনা নতুন কিছু নয়। এমন ঘটনা আগেও বহুবার ঘটেছে। ছাত্র রাজনীতির নামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসা ছাত্রলীগের এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনাগুলোর বিচার প্রক্রিয়ার ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে দেখব, আইনানুগ বিচার হচ্ছে না বা বিচারপ্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে। যেমন দীর্ঘদিন অতিক্রম করলেও বুয়েটের আবরার হত্যার রায় এখনোও হয়নি। বিচারহীনতার এই ব্যবস্থা রাষ্ট্র -সরকার চালু রেখেছে সন্ত্রাসীদের রক্ষার জন্যই।”

 

তাঁরা আরও বলেন, “এই ঘটনার ফলে কিছু শিক্ষক -শিক্ষার্থী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করাকেই এ ধরনের সংকটগুলো থেকে সমাধানের উপায় বলে মনে করছেন। আমাদের বক্তব্য প্রত্যাখ্যানের আগে আমরা তাদের ভেবে দেখার অনুরোধ করছি, এভাবে কি সমস্যার যৌক্তিক সমাধান হবে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং ছাত্ররাজনীতি কি এক জিনিস? ছাত্ররাজনীতি ছাত্র-জনতার অধিকার আদায়ের হাতিয়ার। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ হলে শাসকশ্রেণির মদদপুষ্ট অপরাজনীতি ও দখলদারিত্ব বন্ধ হবে না। কিন্তু আপনি এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারবেন না। বিরাজনীতিকরণ শাসকগোষ্ঠীকেই সহায়তা করে। তাই ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আওয়াজ না তুলে ছাত্ররাজনীতির নামে যারা চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায় তাদের রাজনীতিকে বয়কট করুন। ছাত্র রাজনীতির গণতান্ত্রিক ও ছাত্র স্বার্থের ধারাকে শক্তিশালী করুন- এখানেই সমাধান।”

 

পরিশেষে, নেতৃবৃন্দ কর্তৃপক্ষের প্রতি দোষীদের বিচার ও শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানান।

Exit mobile version