গাইবান্ধায় স্বামীর মৃত্যুর খবরে স্ত্রীর মৃত্যু!

বায়েজীদ,পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) :
দীর্ঘদিনের ভালবাসার সাজানো-গোছানো সংসারের অবসান ঘটিয়ে একই দিনে মাত্র ৪ ঘন্টার ব্যবধানে
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে উপজেলার খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়নের তালুক হরিদাস গ্রামে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নওশা আকন্দ দম্পতির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মেয়ের বাড়ি সদর উপজেলার হাট লক্ষ্মীপুর গ্রামে বেড়াতে গিয়ে মৃত্যু হয় নজির হোসেনের। এর পর স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় তার স্ত্রী রশিদা বেগমের (৬৫)।
নজির হোসেন একই গ্রামের মৃত নসিম উদ্দিন আকন্দের ছেলে। তিনি অবসরপ্রাপ্ত আনসার সদস্য ছিলেন। অবসরের পর নজির হোসেন বাড়িতেই কৃষি পেশায় নিয়োজিত ছিলেন । ৫ ছেলে, ৩ মেয়ে ও নাতি-নাতনি নিয়ে ছিল তার সংসার।
তাদের এমন মৃত্যুর খবরে এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। শত শত মানুষ মৃত দম্পতিকে একনজর দেখার জন্য ভিড় করেন ওই বাড়িতে।
মরহুম নজির হোসেন আকন্দের নাতি মো. হাফিজুর রহমান বলেন, আমার দাদা বেশ কিছুদিন ধরে একাধিক জটিল রোগে ভুগছিলেন। বার্ধক্যজনিত কারণেও তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। আমরা তাকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছার কাছে আমাদের হার মানতে হলো। এক সপ্তাহ আগে তিনি মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে যান, যেখানে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তিনি বলেন, দাদা ও দাদির মধ্যে গভীর ভালোবাসার এক অনন্য বন্ধন ছিল। স্বামীর মৃত্যু সংবাদ দাদি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি। এই শোক সইতে না পেরে, তিনি একই দিনে মাত্র ৪ ঘন্টা পর দুনিয়া থেকে বিদায় নেন। তাদের এই বিদায় আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
১০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় জানাজা শেষে তাঁদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে বলেও জানান তিনি।
সবশেষে তিনি তার দাদা-দাদির আত্মার শান্তির জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
সাদুল্যাপুর খোর্দ্দকোমরপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নওশা আকন্দ বলেন, স্বামী নজির হোসেনের মৃত্যুর ৪ ঘণ্টার ব্যবধানে স্ত্রীরও মৃত্যু হয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর এমন মৃত্যু দুঃখজনক।
Exit mobile version