গোপাল চন্দ্র রায়-ডোমার(নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ বছর জুড়ে চিতই পিঠা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন রুস্তম আলী(৫৩)। শীত এলেই পিঠা খেতে ভিড় জমায় ডোমার রেল ঘুমটির উপর রুস্তমের পিঠার দোকানে। বিশেষ করে ছোট পরিবার গুলো বেশি আসে। ধান কুটে চাল আবার চাল কুটে আটা তাও আবার হাতে ভানা। তারপর বিভিন্ন উপকরন মিশিয়ে সেদ্ধ করে নানান পদের পিঠা। ছোট পরিবারগুলোর জন্য একটু কষ্টসাধ্য। তাই খাটুনি না করে অল্প খরচে একখানা চিতই পিঠা। এজন্য অনেকে নিজে খেয়ে আবার পরিবারের জন্য সাথে নিয়ে যায়। পিঠা তৈরিতে রুস্তমের দোকানে রয়েছে ৪টি ভ্রাম্যমান আলোক চুলা। একসাথে সিদ্ধ হয় ৪টি চিতই পিঠা। চিতই পিঠা তৈরীতে তেমন কোন উপকরন লাগে না। প্রয়োজন আটা,লবন ও পানি।
ডোমার রেল ঘুমটি সংলগ্ন রেল লাইনের উপরে খোলা আকাশের নীচে বসে তার দোকান। আবার ট্রেন আসার সময় হলে সরিয়ে নেয় দোকান। প্রতিদিন বিকেল থেকে রাত অবধি চলে বেচাকেনা। একখানা চিতই পিঠা বিক্রি করে ৫টাকা করে। সাথে মরিচ ও সরিষা বাটা।
ডোমার পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা পিঠা বিক্রেতা রুস্তম জানায়, গত ২০ বছর ধরে পিঠা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছি। সারা বছর পিঠা বিক্রি করলেও বর্ষাকালে প্রকৃতির কারনে ঠিকমতো দোকানদারি হয়না।
শীতের সময় পিঠা বিক্রি বেশী হয়। প্রতিদিন ২০কেজি চালের আটার পিঠা বিক্রি হয়। চাল এবং আটা তৈরীতে বাড়িতে দুইজন মহিলা কাজ করে। সব খরচ বাদ দিয়ে ৩থেকে ৪শত টাকা লাভ হয়। আবার ঝড় বৃষ্টিতে দোকান বন্ধ থাকে। এভাবেই অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে জীবন যুদ্ধে টিকে আছে রুস্তম।
এক ছেলে ও এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে অনেক আগে। ছোট মেয়ে সাবিনা ইয়াছমিন(১৯) ডোমার সরকারী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। আর ছোট ছেলে বাধন ইসলাম(১৬) মডেল পাবলিক স্কুলের ছাত্র। সারা বছর পিঠা বিক্রি করে সংসার চলে। সেই সাথে ছেলে মেয়ের পড়ালেখা।