চিত্রনায়ক ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম ট্রাভেল এন্ড ট্যুরিজম আইকনিক আজীবন সম্মাননায় ভূষিত

 

সালাম মাহমুদ: জনপ্রিয় চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনায়ক ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম বাংলাদেশ পর্যটন বিকাশ কেন্দ্র আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভিস্তা অক্স প্রেজেন্টস আইকনিক অ্যাওয়ার্ড আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার কলাতলি ওস্তাদ জাহাঙ্গীর রিসোর্ট মিলনায়তনে বাংলাদেশ পর্যটন বিকাশ কেন্দ্রের উদ্যোগে, গ্লোবাল এভিয়েশন এন্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সহযোগিতায় ‘পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে আমাদের করণীয় ও মিডিয়ার ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা, ট্রাভেল-ট্যুরিজম ফেস্টিভাল-২০২৫ এবং ট্রাভেল এন্ড ট্যুরিজম আইকনিক অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে তাকে আজীবন সম্মানা অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সাবেক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত আলোকচিত্রী, এনটিভি’র পরিচালক আলহাজ্ব মোঃ নুরুদ্দিন আহমেদ, বিশেষ অতিথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হামিদা খানম, চিত্রনায়িকা মাসুদা নাসরিন রাকা, অনুষ্ঠান উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব হাফিজ রহমান ও দৈনিক গণকন্ঠের নির্বাহী সম্পাদক সালাম মাহমুদ ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলমের হাতে আজীবন সম্মাননা অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন। ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম গত ৩০ জানুয়ারি ঢাকার ইন্টার কন্টিনেন্টাল ক্রিস্টাল বলরুমে টেলিভিশন রিপোর্টার্স ইউনিটি অব বাংলাদেশ ট্রাব কর্তৃক ট্রাব আজীবন সম্মাননা অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন এবং গত ২২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) এটিএন বাংলা মিলনায়তনে বাবিসাস অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন। ইতিপূর্বে তিনি চলচ্চিত্র পরিচালনা ও অভিনয়ের জন্য বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাসসাস) কর্তৃক বাসসাস পুরস্কার, বাংলাদেশ কালচারাল রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন কর্তৃক বিসিআরএ অ্যাওয়ার্ড, এশিয়ান জার্নালিস্ট হিউম্যান রাইটস এন্ড কালচারাল ফাউন্ডেশন (এজাহিকাফ) কর্তৃক জজ ভূইয়া গ্রুপ-এজাহিকাফ অ্যাওয়ার্ড, সার্ক জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন কর্তৃক সার্ক গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ডসহ অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
শৈশব থেকেই মার্শাল আর্ট শিখেছেন জাহাঙ্গীর আলম। আশির দশকের শুরুতে ফাইট ডিরেক্টর হিসেবে যুক্ত হন সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে। ঢাকাই সিনেমায় প্রবর্তন করেন নতুনধারা। নামের আগে যুক্ত হয় ‘ওস্তাদ’ টাইটেল। সোহেল রানা, রুবেলসহ বহু নায়ককেই তিনি প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। একসময় নিজেও যুক্ত হন অভিনয়ে। শুরুটা হয় খলচরিত্র দিয়ে। পরে ভক্তদের অনুরোধে নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ক্যারাতে মাস্টার, লড়াকু, মাস্টার সামুরাই, পেশাদার খুনি, কুংফু কন্যা, কুংফু নায়ক, ওস্তাদ সাগরেদ, প্রেমিক রংবাজ এসব ছবি করে তুমুল জনপ্রিয়তাও পান তিনি।
২০০০ সালে পরবর্তী সময়ে চলচ্চিত্রে যখন অশ্লীলতা গ্রাস করে, তখন তিনি ধীরে ধীরে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি থেকে দূরে সরে আসেন। তবে নতুন করে চলচ্চিত্রে ফিরে আসার ইচ্ছা আছে তার।
এদিকে পর্যটননগরী কক্সবাজারে রিসোর্ট ব্যবসা শুরু করেছেন তিনি। কলাতলী থেকে মেরিন ড্রাইভের রাস্তায় পাহাড়ের পাদদেশে ‘ওস্তাদ জাহাঙ্গীর’ নামে এ রিসোর্ট গড়ে তুলেছেন তিনি। স্ত্রী একসময়ের মিস বাংলাদেশ ও চলচ্চিত্র নায়িকা রাকাকে নিয়ে রিসোর্টটি নিজেই দেখাশোনা করছেন এ অভিনেতা। সঙ্গে আছেন তার ছোট ভাই চলচ্চিত্র পরিচালক এমএ রহিম।
পারিবারিকভাবে কক্সবাজারের বাসিন্দা ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম। চলচ্চিত্রে যুক্ত হওয়ায় জীবনের সোনালি সময়টা কাটাতে হয়েছে ঢাকায়। তবে তখন থেকেই পরিকল্পনা ছিল কক্সবাজারে কিছু একটা করার। সেই ইচ্ছে থেকেই রিসোর্ট ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন তিনি।
প্রায় নয় বছর আগে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম কক্সবাজার কলাতলীতে গড়ে তুলেছিলেন একটি রিসোর্ট। সেটিকেই আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় নান্দনিক সাজে সাজিয়ে ‘ওস্তাদ জাহাঙ্গীর রিসোর্ট’ নতুনভাবে শুরু করেছেন। এ রিসোর্টটি নতুন করে গড়ে তোলার পেছনেও আছে চলচ্চিত্রের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা। ওস্তাদ জাহাঙ্গীর বলেন, চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের জন্য অনেকেই  কক্সবাজার আসেন। এখানে দুর্দান্ত সব লোকেশন রয়েছে। আমি চাই সাধারণ মানুষ ছাড়াও কক্সবাজারে চলচ্চিত্রের কাজে যারা আসেন, তারা যেন এখানে উঠেন। শুটিংয়ের জন্যও নির্মাতারা যেন এ রিসোর্ট ব্যবহার করতে পারে, এটাকে সেভাবেই আমি গড়ে তুলেছি। এটাকে আমি কক্সবাজারে এফডিসির দ্বিতীয় শাখা বানাতে চাই।
তিনি আরও বলেন, আমি নিজেও চলচ্চিত্রে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এরই মধ্যে এখানে একটি প্যানেল বসিয়েছি। আমার নতুন ছবির নাম ‘ডিজিটাল প্রেম’। ছবির গল্পে মার্শাল আর্টকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। আমি নিজেই প্রযোজনা, পরিচালনা এবং অভিনয় করব। শিগগিরই ছবিটির শুটিং শুরু করব। ছবির শুটিং হবে আমার এই রিসোর্টেই। মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের জন্য তার এ রিসোর্টে বছরজুড়েই দেওয়া হবে ৫০ শতাংশ ছাড় বলে জানান ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম। কয়েক বছর আগে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম প্রতিষ্ঠা করেন ফিল্ম স্টার ক্লাব। বর্তমানে ফিল্ম স্টার ক্লাবকে এগিয়ে নেয়ার জন্য ব্যাপকভাবে কার্যক্রম শুরু করেছেন।
Exit mobile version