গোপাল চন্দ্র রায়-ডোমার(নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ী ইউনিয়নের চিলাহাটির বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে করোনার টিকা প্রদানের জন্য টাকা নিচ্ছে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের কাছে নেয়া টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, ডোমার উপজেলার চিলাহাটি গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে ওই এলাকার ১৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে সরকারীভাবে করোনার টিকা দেয়া হচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের করোনার টিকা দেয়ার পরিবর্তে প্রত্যেকের কাছে ৩০টাকা থেকে ৫০ টাকা করে নিচ্ছে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষকরা। এরমধ্যে চিলাহাটি গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ, চিলাহাটি মার্চেন্ট উচ্চ বিদ্যালয়, মুক্তিরহাট হাইস্কুল, গোসাইগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজ, চিলাহাটি ফাজিল মাদ্রাসা অন্যতম।
চিলাহাটি মার্চেন্ট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
অভিযোগ করে বলেন, আনোয়ারুল স্যার ও রাজ্জাক স্যার আমাদের প্রত্যেকের কাছে ৩০ টাকা করে নিচ্ছে, আর টাকা না দিলে টিকা দেওয়া হবে না বলে শিক্ষার্থীদের বলেন।
চিলাহাটি গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দশম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী জানান, মিন্টু স্যার ও পরীক্ষা ম্যাডাম টিকা দেয়ার জন্য আমাদের কাছে ৩০ টাকা করে নিচ্ছে।
চিলাহাটি গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী জানান, আমার বিদ্যালয়ে টিকা প্রদানের কেন্দ্র করার জন্য এক লাখ ২০হাজার টাকা খরচ করে দুটি এসি কেনা হয়েছে। এজন্য ১৩টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছে ২০টাকা করে নেয়া হচ্ছে। চিলাহাটি মার্চেন্ট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, এসি কেনার টাকা যোগাতে সকল বিদ্যালয়ের সাথে আলোচনা করে ২০টাকা করে নেয়া হচ্ছে। আমার বিদ্যালয়ে এ যাবত ১৮হাজার টাকা উঠানো হয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আমাকে টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
চিলাহাটি ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের প্রত্যেকের কাছে ১০০ টাকা করে দাবি করে। পরে বিষয়টি নিয়ে গন্ডগোলের সৃষ্টি হলে ৫০ টাকা করে নেয়া হয়। এ ব্যাপারে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জাকির হোসেন জানান, প্রতিটি বিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে টাকা নিচ্ছে। আমরাও নিচ্ছি আর ছাত্রছাত্রীরা ডোমারে গেলে তাদের একটা খরচ হতো। আমরা মাইকিং করেছি। সেটার জন্য প্রত্যেকের কাছে ৫০ টাকা করে নিয়ে ২০টাকা প্রচার খরচ বাবদ আর ৩০টাকা চিলাহাটি গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষকে দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ রায়হান বারী জানান, বিষয়টি জানতে পেরে আমি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে জানিয়েছি।
এ ব্যাপারে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাকেরিনা বেগম জানান, শিক্ষার্থীদের কাছে টাকা নেয়ার অভিযোগের সত্যতা পেয়ে টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি।