তানোরে বিসমিল্লাহ হিমাগারে আলু  সংরক্ষণ করে কৃষকের মাথায় হাত

তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর তানোরে মেসার্স বিসমিল্লাহ্ কোল্ড স্টোরেজে (হিমাগার) উদ্বোধনী বছরেই আলু সংরক্ষণ করে কৃষকেরা লোকসানের মুখে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হিমাগারে রাখা আলুতে গাছ গজিয়েছে, আলুর মুখ লুজ এবং ওজনে কম হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলায় এমন হয়েছে বলে কৃষকেরা মনে করছে।
স্থানীয়রা বলছে, অধিক মুনাফা লুটতে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত আলু সংরক্ষণ করায় প্রতি বস্তায় ৮ থেকে ১০ কেজি করে আলু  কম হচ্ছে। এতে কৃষকেরা লাখ লাখ টাকা ক্ষতির মুখে পড়েছে।তবে
হিমাগার মালিক  কৃষকের গলা কেটে ঠিকই নিজের পকেট ভারি করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক বলেন, হিমাগারের ধারণ ক্ষমতা সর্বোচ্চ সাড়ে চার লাখ বস্তা।কিন্ত্ত ধারণ ক্ষমতার অধিক আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে, ধারণ ক্ষমতার বেশী আলু সংরক্ষণ করায় বস্তা সর্বোচ্চ  ১০ কেজি করে আলু কম হয়েছে। তারা আরো বলেন, সরকারি নির্দেশনা রয়েছে ৫০ কেজির বেশী ওজনের বস্তায় আলু সংরক্ষণ করা যাবে না, তবে এখানে ৬০ থেকে ৭৫ কেজি ওজনের বস্তায় আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান,রাজশাহী সিটির সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের ঘনিষ্ঠ সহচর বজলুর রশিদ।গত আলু মৌসুমে তানোর-চৌবাড়িয়া রাস্তার মালার মোড়ে কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণ করেন। তবে তিন ফসলী কৃষি জমিতে কোল্ড স্টোরেজ নির্মাণে কৃষি জমির শ্রেণী পরিবর্তন করা হয়নি।
তানোর পৌর এলাকার কৃষক টিপু জানান, রাশিদুলের নামে বুকিংয়ে তিনি ৮০০ বস্তা আলু রেখেছিলেন। কদিন আগে আলু বিক্রি করার জন্য মেঝেতে ফেলা হয়। কিন্তু বেশির ভাগ আলুতে গাছ বের হয়েছে এবং মুখ লুজ হয়ে গেছে। কি কারনে এরকম হতে পারে জানতে চাইলে তিনি জানান, হাওয়া ও গ্যাস কম এবং যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে আলুর এঅবস্থা হয়। হাওয়া ও গ্যাস কম দিলে বিদ্যুৎ বিল কম আসবে।
শুধু তাই না প্রতি বস্তায় ৬০ কেজি করে ওজন হওয়ার কথা। কিন্তু  প্রতি বস্তায় ৫২ কেজি করে ওজন হয়েছে। ৮০০ বস্তা আলুর বিপরীতে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। তিনিসহ যে সকল আলু রাখা কৃষকদের এমন অবস্থা হয়েছে তারা সবাই মিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কৃষক রাশিদুল জানান, সম্প্রতি ৭২ বস্তা আলু বিক্রি করার জন্য মেঝেতে ফেলা হয়। প্রায় আলুর মুখ নষ্ট হয়েছে। তবে আমার আলুতে গাছ গজায়নি। ৭২ বস্তা আলুর বিপরীতে ৫৭ বস্তা টিকেছে। কারন বস্তা প্রতি ৮ থেকে ১০ কেজি করে আলু কম। এটা হিমাগার কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও অনিয়মের কারনে লোকসান গুনতে হচ্ছে। সরেজমিনে তদন্ত করলেই হিমাগারের অনিয়ম দূর্নীতি ধরা পড়বে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
এবিষয়ে জানতে হিমাগার ম্যানেজার হেলালের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলা হলে তিনি জানান, আমাদের হিমাগারে এরকম হওয়ার কথা না, আপনি এসে দেখতে পারেন।এদিকে হিমাগার মালিক বজলুর রশিদকে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হলে তিনিও অস্বীকার করে বলেন, যার আলু, যে সময় এসব ধরা পড়েছে ওই সময় বলতে হবে এখন এসব বলে লাভ হবে না।
এবিষয়ে জানতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিনহাজুল ইসলামের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তারা কেউ রিসিভ করেননি। এবিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহা পরিচালক জানান,  বস্তায় ৫০ কেজির উপরে আলু
রাখার কোনো সুযোগ নেই। তিনি  বলেন, এবিষয়ে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ব্যবস্হা নিতে বলা হবে।#
Exit mobile version