দিনাজপুরে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির উদ্যোগে বর্ধিত ১৫% ভ্যাট ও ১০% এস.ডি প্রত্যাহারের দাবীতে স্মরকলিপি প্রদান ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ১৬ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর আওতায় সারা দেশের ন্যায় একযোগে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি দিনাজপুর জেলা শাখার আয়োজনে দিনাজপুর প্রেসক্লাব সম্মুখ সড়কে “বর্ধিত ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্কের চাপে সংকটে বাংলাদেশের রেস্তোরাঁ ব্যবসা” -এই শ্লোগানকে সামনে রেখে ‘বর্ধিত ১৫% ভ্যাট ও ১০% এস.ডি’ প্রত্যাহারের দাবীতে সদস্যরা স্মারকলিপি প্রদান ও মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে।
মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির দিনাজপুর জেলা শাখার সভাপতি শ্যামল কুমার ঘোষ, সহ সাধারণ সম্পাদক সমর ঘোষ, কোষাধ্যক্ষ বোরহান উল গনি বাবু, দুলাল সাহা, মোঃ আজগর আলী, মোঃ আশরাফুল ইসলাম বাচ্চু ও মোঃ নেহাল। বক্তারা বলেন, রেস্তোরাঁ সেক্টরে সরকার ভ্যাটের হার ৫% হতে বৃদ্ধি করে ১৫% আরোপ করেছেন। আমাদের দাবী ছিলো ভ্যাট আরোও কমিয়ে রেস্তোরাঁ সেক্টরে ৩% নির্ধারণ করতে হবে। স্ট্রিট ফুড সহ সকল খাদ্য ব্যবসায়ীদের ভ্যাট নিবন্ধনের আওতায় আনতে হবে কিন্তু পরিতাপের বিষয় সরকার ভ্যাটের আওতা বৃদ্ধি না করে আমরা যারা নিয়মিত ভ্যাট দিয়ে আসছি এবং সকল ধরনের কমপ্লাইনস মেনে রেস্তোঁরা ব্যবসা করে আসছি তাদের উপরেই তিনগুন ভ্যাটের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া আরোও ১০% সম্পূরক শুল্ক বিদ্যমান আছে। বর্ধিত ভ্যাট ও এস.ডি সম্পূর্ন রূপে প্রত্যহারের দাবীতে আজ আমরা মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করছি। বক্তারা আরোও বলেন, সারা দেশে রেস্তোরাঁ রয়েছে ৪ লক্ষ ৮৫ হাজার এর অধিক। এর মধ্যে রেস্তোরাঁ সমিতির সদস্য’র সংখ্যা ৬০ হাজার। এই সেক্টরে কর্মরত রয়েছেন ৩০ লক্ষ শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারী। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে প্রায় ২ কোটি মানুষ এই সেক্টরের উপর নির্ভরশীল। আমরা বলতে চাই আইএমএফ এর শর্ত মানতে গিয়ে সরকার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর মতো দেশের জনগনের উপর ইচ্ছে মতো করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া কোনো পূর্ণাঙ্গ সমাধান হতে পারে না। কর আহরণ বৃদ্ধির জন্য ভ্যাট বৃদ্ধি করাই একমাত্র পদ্ধতি নয়, ভ্যাট ও শুল্কের মতো পরোক্ষ করের বদলে প্রত্যক্ষ আয়কর বৃদ্ধি করাই জনকল্যাণ মূলক রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট। রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ করের বদলে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে পরোক্ষ কর আদায়ের উপর বেশি নির্ভর করা হলে তা ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য বৃদ্ধি করবে। এই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প টিকিয়ে রাখতে বর্ধিত হারে ভ্যাট ও এস.ডি প্রত্যাহার করতে হবে অন্যথায় এই ব্যবসা বন্ধ করে আমাদের বিকল্প ব্যবসার চিন্তা করতে হবে। এ ব্যাপারে আমরা প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষন করছি। এতে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ কমপক্ষে ৩০% লোক খাওয়া-দাওয়া বিষয় রেস্তোরাঁর উপর নির্ভর করবে। রেস্তোরাঁ সেক্টরে কর্মসংস্থান তৈরী হবে, দেশের জিডিবিতে উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রাখবে এই সেক্টর, সুতরাং রেস্তোরাঁ সেক্টরের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন। রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা সোনার বাংলা গড়তে ঐক্যবদ্ধ। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক বরাবর ও বিভাগীয় কর্মকর্তা কাস্টম এক্সসাইজ ও ভ্যাট বিভাগ দিনাজপুর বরাবর রেস্তোঁরা মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ স্মারকলিপি প্রদান করেন। জেলা প্রশাসকের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন নেজারত ডেপুটি কালেক্টর সাহেল আহমেদ এবং কাস্টম এক্সসাইজ ও ভ্যাট বিভাগ দিনাজপুরের উপ কমিশনার মোহামমদ হাবিবুর রহমান।

 

Exit mobile version