ধর্মপাশা প্রতিনিধিঃ
ধর্মপাশা উপজেলার হিংগার বিল জলমহালে হাবিবুল্লাহর (৪৫ নামের এক পাহারাদারের হাত- পা রশি দিয়ে বেধে ওই জলমহালটিতে বিষ ঢেলে মাছ নিধন করা হয়েছে। উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা ও হিংড়া বিল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন ফরহাদ (৩৫) ও তাঁর লোকজন বুধবার রাতে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। জলমহালে বিষ ঢেলে মাছ নিধনেরর ঘটনায় উপজেলার সৈয়দপুর পূর্বপাড়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি ও জলমহালটির ইজারাদার কাইকোবাদ (৩২) বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার রাতে এ নিয়ে ধর্মপাশায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনাধীন থাবা উপজেলার হিংগার বিল জলমহালটির আয়তন সাত একর পাঁচ শতক। ১৪৩০থেকে ১৪৩২বঙ্গাব্দ পর্যন্ত তিনবছরের জন্য এই জলমহালটি বাৎসরিক ১৪হাজার ১১১হাজার টাকা ইজারামুল্যে ইজারা পায় উপজেলার সৈয়দপুর পূর্বপাড়া মৎসজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেড। এই সমিতির সভাপতি কাইকোবাদ (৩২) নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জলমহালটির ইজারামুল্য পরিশোধ করেন। এই জলমহালটির ইজারা পাওয়ার জন্য উপজেলার হিংড়া বিল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের পক্ষেও আবেদন করা হয়েছিল।কিন্তু জলমহাল ইজারা যাবতীয় শর্তাদি পূরণ না হওয়ায় ওই সমিতি এই জলমহালটি ইজারা পায়নি। উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা ও জলমহালটির পাহারাদার হাবিবুল্লাহ (৪৫) বলেন, আমাদের গ্রামের বাসিন্দা ও হিংড়ার বিল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন (ফরহাদের) নেতৃত্বে আরও চারজন ব্যক্তিকে নিয়ে বুধবার রাত অনুমান ১২টার দিকে একটি ডিঙি নৌকা যোগে আমাদের জলমহালটির খলাঘর এলাকায় আসে। টর্চ লাইটের আলোতে আমি সবাইকে চিনতে পেরেছি। ফরহাদের নির্দেশে তাঁরা আমার হাত পা রশি দিয়ে বেধে ফেলে আমাদের জলমহালটিতে বিষ ঢেলে দিয়েছে। পরে আমার চিৎকার শুনে এই জলমহালটির অপরপাশে বাঁধে থাকা পাহাদার আলী নূর (৩৫) এগিয়ে আসলে তাঁরা সেখান থেকে দ্রুত চলে যায়। হিংড়া বিল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন ফরহাদ বলেন. ওইদিন রাতে আমি বাড়িতে ছিলাম না। আমি ও আমার সমিতির লোকজনদের জড়িয়ে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা,বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। উপজেলার সৈয়দপুর পূর্বপাড়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি ও জলমহালটির ইজারাদার কাইকোবাদ বলেন, আমরা বৈধভাবে এই জলমহালটি ইজারা পেয়েছি। ইজারা পাওয়ার পর থেকেই এই জলমহালটিতে বাঁশ ,কাঠা দিয়ে ও পাঁচ লক্ষ টাকার বিভিন্ন জাতের পোনা মাছ ছেড়ে পাহারাদার নিযোজিত করে এটি রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছি। এখন পর্যন্ত আমাদের দশ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। জলমহালটিতে বিষঢেলে মাছ নিধন করায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পানিতে ভেসে উঠার পাশাপাশি অনেক মাছ কাটা (মাছ সংরক্ষণের স্থান) ছেড়ে চলে গেছে। এতে আমাদের ছয় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। ধর্মপাশা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুস সবুর বলেন, উপজেলার হিংগার বিল জলমহালে বিষ ঢেলে মাছ নিধন সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে এ ব্যপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।