লিয়াকত হোসাইন লায়ন,জামালপুর প্রতিনিধি।। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান এমপি বলেছেন, আমাদের সকলকে নিজ নিজ ধর্ম পালনের পাশাপাশি অন্য ধর্মকে শ্রদ্ধা করতে শিখতে হবে। এর মাধ্যমে দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতির পরিবেশ আরও সুসংহত হবে।
ধর্মের সঠিক জ্ঞান মানুষকে আলোকিত করে। আর আলোকিত মানুষেরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুসংহত ও সুদৃঢ় করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
প্রতিমন্ত্রী আজ ২৩ ডিসেম্বর বুধবার সাতক্ষীরা
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিচালিত “ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ” শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা মূলক আন্তঃধর্মীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর আরো বলেন, কোন ধর্ম গ্রন্থই অন্য ধর্মের উপর আক্রমণের কথা বলেনা।
সকল ধর্মই ভালোবাসা, সহিষ্ণুতা আর মানবিকতার শিক্ষা দেয়। তাই কোন প্রকৃত ধার্মিক ব্যক্তি অন্য ধর্মের মানুষের অধিকার ক্ষুন্ন করতে পারেনা।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ঐতিহাসিক মদিনা সনদ, মহানবী (সা.) এর বিদায় হজ্জের ভাষণ, মক্কা বিজয়ের ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় মহানবী (সা.) অন্য ধর্মের অনুসারীদের প্রতি সদাচরণ করতেন। সকলকে নিয়েই তিনি সমাজ পরিচালনা করেছেন যে রাজনৈতিক দর্শন বঙ্গবন্ধু ধারণ করতেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের পরাজিত শক্তি, বঙ্গবন্ধুর হত্যার সাথে যারা জড়িত চক্র, দেশজুড়ে বোমা হামলাকারী সেই উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তিই আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশে
বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করে।
এই অপশক্তিকে সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন একত্রিত হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণকে সাথে নিয়ে প্রতিহত করা হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশ আমাদের সকলের। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ আমাদের সাংবিধানিক ভিত্তি। অশুভ চক্র যেন কোনভাবেই আর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে না পারে এ বিষয়ে সমাজের সকলকে সজাগ থাকতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার
দেশে প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০ টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছে। শত শত মন্দির, প্যাগোডা ও গীর্জা মেরামত, উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ সম্পন্ন করেছে।
ধর্মীয় ও নৈতিকতা শিক্ষার প্রসারের মাধ্যমে আগামী দিনের সুনাগরিক তৈরি করতে মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডা ভিত্তিক প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। উপাসনালয় ভিত্তিক এসব শিক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে
দেশে ইতোমধ্যে লক্ষ লক্ষ শিশু শিক্ষা গ্রহন করেছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির
এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তঃধর্মীয় সংলাপে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম, সাবেক সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মুজিবুর রহমান “ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সচেতনতা বৃদ্ধিকরণ করণ” শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আব্দুল্লাহ আল শাহীন, সাতক্ষীরা জেলার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশাররফ
মিশু, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার মজুমদার, কলারোয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ঘোসনাত কুমার,বিশিষ্ট ইসলামি আলোচক ড.আব্দুল মোমেন সিরাজী প্রমুখ।
সংলাপে সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, নির্বাহী অফিসারবৃন্দ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যবৃন্দ,
মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক, সংস্কৃতি কর্মী, বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধিগণ অংশ গ্রহণ করে সাতক্ষীরা জেলা সহ সারা বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি বৃদ্ধি ও সুসংহত করতে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন।