বদলগাছী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ টাকার টিকেট ৫ টাকা প্রতিদিন হাজার টাকা পকেটস্থ

আব্দুল কাদের, বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি ঃ নওগাঁর বদলগাছী ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্হি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগিদের টিকেট ফি ৩ টাকার পরিবর্তে দীর্ঘ্য দিন থেকে ৫ টাকা আদায় করা হচ্ছে। আর অতিরিক্ত ২ টাকা সরকারী কোষাগারে জমা না করে টিকেট প্রদানকারী প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১২ শত টাকা পকটস্থ করছেন। প্রতিদিন গড় ৪শ থেকে ৫শ রোগির কাছে থেকে এভাবে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হলে ও যেন কেউ দেখার ছিলো না। গতকাল সোমবার সকাল ১১ টায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, আগত রোগিরা দীর্ঘ্য লাইন ধরে ৫ টাকা দিয়ে কাউন্টার থেকে টিকেট সংগ্রহ করে ডাক্তার দেখাচ্ছেন। উপজেলার সেনপাড়া গ্রামের মৃত জবান আলী মন্ডলের ছেলে হবিবর (৬০) ৫ টাকা দিয়ে টিকেট কেটে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ কানিস ফারহানার নিকট চিকিৎসা নিতে গিয়ে ৩ টাকা টিকেট এর পরিবর্তে ৫ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে এমন বিষয়টি নজরে আসলে তাৎক্ষনিক ভাবে টিকেট প্রদানকারী সাফিউলকে টিকেট কাউন্টার থেকে সড়িয়ে নেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টিকেট প্রদানকারী সাফিউল এর বড় ভাই রাফিউল প্রায় আড়াই বৎসর যাবত আউট সোসিং (মাষ্টার রোলে) চাকুরীরত থাকা অবস্থায় বিগত প্রায় ৬ মাস যাবত ৩ টাকা টিকেট এর পরিবর্তে ৫ টাকা আদায় করে। গত ১০ থেকে ১৫ দিন আগে রাফিউল চাকুরী থেকে অব্যহতি নিয়ে তার আপন ছোট ভাই সাফিউলকে ঐ পদে বসিয়ে দেন। আর সাফিউল পদ পেয়ে বড় ভাই রাফিউল এর পথ অনুসরন করে ৩ টাকার টিকেট ৫ টাকা আদায় করে আসছিল। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সুত্রে জানা যায়, চলতি বৎসর জুন মাসে বর্হি বিভাগে ৩২৮৫ জন রোগির নিকট ৩ টাকা হারে টিকেট বিক্রি দেখিয়ে ৯ হাজার আট শত পাঁচপান্ন টাকা, জুলাই মাসে ৩৮৮৭ জন রোগির নিকট থেকে ৩ টাকা হারে টিকেট বিক্রির টাকা জমা হয়েছে ১১ হাজার ছয় শত একষট্টি টাকা। চলতি আগষ্ট মাসে বর্হি বিভাগে টিকেট বিক্রয় থেকে যে টাকা আদায় করা হয়েছে তা এখনও সরকারী কোষাগারে জমা হয়নি। তবে মাসের শেষে ২৬৮১ নং কোডে টাকা জমা করা হবে বলে ক্যাশিয়ার আবুল কালাম আজাদ জানান।
এ বিষয়ে পূর্বে একই পদে চাকুরীরত রাফিউল এর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সব সময় ৫ টাকা করে টিকেট বিক্রয় করা হয়নি, ৩ টাকা করে ও নেওয়া হয়েছে। তবে মাঝে মধ্যে কিছু রোগির কাছে খুচরা টাকা না থাকলে ৫ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। বর্তমান টিকেট কাউন্টারে কর্মরত তার ছোট ভাই সাফিউল এর সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ও বড় ভাই রাফিউলের সুরের সাথে সুর মিলিয়ে ৫ টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে ৩ টাকা নেওয়ার কথা বলে। তবে মাঝে মধ্যে রোগির কাছে খুচরা টাকা না থাকলে ৫ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেন।
স্বাস্থ্য ও প.প কর্মকর্তা ডাঃ কানিজ ফারহানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানায়, প্রতিদিন গড় ৪ শত থেকে ৫ শত রোগি বর্হি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন। আর টিকেট এর মুল্য ৩ টাকা। সাফিউল নামে যে ছেলে টিকেট কাউন্টারে ছিল সে রোগিদের কাছে থেকে ৫ টাকা আদায় করছিল। এমন অভিযোগের সত্যতা পেয়ে সোমবার বেলা ১১ টার সময় তাকে টিকেট কাউন্টার থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

Exit mobile version