বিরামপুরে ডিমের বাজারে আগুন

এম,ডি রেজওয়ান আলী (বিরামপুর) দিনাজপুর প্রতিনিধি-দিনাজপুর বিরামপুরে ডিমের বাজারে আবারও আগুন। আজ (২৭ আগষ্ট) রবিবার দিনাজপুর বিরামপুর উপজেলা বাজার ঘুরে জানা যায়,১৫-২০ দিনের ব্যবধানে আবারও বেড়েছে ডিমের দাম। খামার পর্যায়ে প্রতি হালি ডিম ৪১.৫০ টাকা দরে বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা টাকা মূল্যে। উল্লেখ্য বাংলাদেশ পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদ (বিপিকেআরজেপি) এবং পোলট্রি প্রফেশনালস বাংলাদেশ (পিপিবি)-এ নির্ধারিত মূল্য তালিকায় খামার পর্যায়ে লাল (বাদামি) ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১০.৩৫ টাকা এবং সাদা ডিমের দাম ধরা হয়েছে ১০.১৫ টাকা আরও জানা যায়,গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে হঠাৎ ডিমের হালি ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন ও ভোক্তা অধিদপ্তর। এর পর থেকে বাজারগুলোতে নিয়মিত অভিযান চালানোর এক সপ্তাহের মধ্যেই ডিমের বাজার কমে ৩৫ টাকা হালিতে বিক্রি শুরু হয়েছিল৷ কিন্তু ১৫-২০ দিনের ব্যবধানে পুনরায় ডিমের দাম বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৫৫-৬০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে। গ্রাম এলাকার বাজারগুলোতে প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। দিনের পর দিন ওষুধ ও খাদ্যের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এ দামে ডিম বিক্রি করেও লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে জানান উপজেলার বাসিন্দারা,পাশাপাশি স্হানীয় উপজেলার অধিকাংশ পোলট্রি খামার গণ। বিরামপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের দেওয়া তথ্যমতে,উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে কয়েক হাজার পোলট্রি খামার রয়েছে। যেগুলোর মধ্যে লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে প্রায় ৬৫টি ও ব্রয়লার মুরগির খামার রয়েছে প্রায় ৪২২টি। ডিম উৎপাদনের জন্য লেয়ার খামারে দেশি বার্ডসহ মুরগির সংখ্যা কয়েক লাখ। যেগুলো থেকে বছরে ৪৫ লাখ পিচ ডিম পাওয়া যায়। উপজেলায় প্রতিদিন গড়ে ডিম উৎপাদন হচ্ছে ২ লাখ ৬ হাজার ২৩২ পিস। উপজেলায় চাহিদা রয়েছে বছরে ৬ কোটি। রোববার সন্ধ্যার দিকেও উপজেলা সহ পাশ্ববর্তী কয়েকটি উপজেলার বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,এক সপ্তাহ আগেও যে ডিমের দাম ৩৫ টাকা হালি বিক্রি হতো তা এখন ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন,পশু খাদ্যের দাম পর্যায়ক্রমে বাড়ানো ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে পরিবহণ খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। উপজেলার পোলট্রি খামারি গণ বলেন,বেশি টাকায় খাবার,ওষুধ ও বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে আমাদের। তার পরও এ দামে ডিম বিক্রি করেও আমরা লোকসানে আছি। উপজেলার ইউনিয়ন বাজারে ডিম কিনতে আসা ক্রেতারা বলেন,গত এক সপ্তাহ আগে ৪০ টাকা হালি ডিম কিনেছি। আজকে প্রতি হালি ৬০ টাকা চাচ্ছে সকল দোকানদার। বিরামপুর পৌরসভার গ্রামের মুদি দোকানিরা বলেন,আমরা প্রতি ডিমে ৫০ পয়সা লাভ করি। সেখানে দোকান খরচ বাদ দিলে ২৫ পয়সা টিকে। বেশি দামে কিনে তো আর কম দামে বিক্রি করব না। প্রতি হালি ৬০ টাকা দরে খুচরা বাজারে ডিম বিক্রি করেছিলেন উপজেলার বাজারের মুদি দোকানি। তিনি বলেন,আজকে পাইকারের কাছ থেকে ৪৮ টাকা হালি দরে তিনি কিনেছেন।বাংলাদেশ পোলট্রি রক্ষা জাতীয় কমিটির তথ্য মতে জানা যায়,খাবারের মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ডিমের দাম আবারও বেড়েছে। তাই বাজারে পোলট্রি খাদ্যের দাম স্বাভাবিক থাকলে ডিম ও মুরগির মাংসের দামও স্বাভাবিক থাকবে। এবিষয়ে খাদ্য অধিদপ্তর সূত্র মতে জানা যায়,ভোক্তা পর্যায়ে দামের খোঁজখবর নিয়ে শিগগিরই অভিযান চালানো হবে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ সূত্র মতে জানা যায়,এক মাসে ভুট্টা,সয়াবিন,সয়াবিনের খৈলসহ কোনো পোলট্রি খাদ্যসামগ্রীর দাম কমেনি বরং বেড়েছে। এতে কিছু দিন ডিম কম দামে বিক্রি করে লোকসান গুনতে হয়েছে খামারিদের। তাবে সরকারি নির্দেশনা না মেনে বাজারের পণ্য বিক্রয় করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান।

Exit mobile version