মাসের ১৪ দিনই অনুপস্থিত সিনিয়র স্টাফ নার্স ক্লাস নেন প্রাইভেট নাসিং কলেজে!

দুমকি(পটুয়াখালী)পটুয়াখালী॥ পটুয়াখালীর দুমকিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্সের বিরুদ্ধে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে পুরো মাসের বেতন ভাতা গ্রহণের পাশাপাশি একই সময়ে অপর একটি বেসরকারি নার্সিং কলেজে দায়িত্ব পালনের অভিযোগ উঠেছে। মাসের ১৪ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে ১৫তম দিনে এসে পেছনের স্বাক্ষর দিয়ে পুরো মাসের বেতন ভাতা নিচ্ছেন দুমকি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স এসএম আজিজুল হক। অভিযোগ রয়েছে, স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সটির দায়িত্বরত কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. মীর শহীদুল হাসান শাহীনের একান্ত আনুগত্যর প্রভাবে কর্মস্থল ফাঁকি দিয়ে অপর একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে যুক্ত থেকে আর্থিক সুবিধা ভোগ করছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. মীর শহীদুল হাসান শাহীন অবশ্য বলছেন, ম্যানেজ নয়, বরং তাকে একাধিকবার বুঝানো হলেও তিনি কারো কথা শুনছেন না।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরজমিন পরিদর্শণকালে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স এস এম আজিজুল হক তার কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। সংবাদ কর্মীদের টের পেয়ে তার হাজিরা সিটি তাত্ক্ষণিক ছুটি দেখানো হয়েছে তবে অফিসিয়ালি ছুটির কোন ডকুমেন্টস দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
খোঁজনিয়ে জানাগেল, ওই সময়ে তিনি পটুয়াখালীর গাজী মুনিবুর রহমান নার্সিং কলেজে পরীক্ষার ডিউটি দিচ্ছেন  । হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চলতি মাসের উপস্থিত হাজিরা সিটে দেখা যায়, তার ২৮দিনের মধ্যে ২৫দিনের উপস্থিতি স্বাক্ষর দেয়া আছে। কিন্ত বায়োমেট্রিক ফিঙ্গার প্রিন্ট পদ্ধতির হাজিরা সিটে ১৪দিন অনুপস্থিতি দেখা যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সহকর্মী জানান, তিনি (আজিজুল হক) বড় স্যার পক্ষে থাকায় প্রায়শ:ই একাধারে ৫/৭ দিন উপস্থিত না থেকে একদিন এসেই সব স্বাক্ষর করে নেন। বেতনও নেন ফুল মাসের।
এবিষয়ে অভিযুক্ত এস এম আজিজুল হক অনুপস্থিতির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, বায়োমেট্রিক ফিঙ্গার প্রিন্টে সমস্যা থাকার কারণে সঠিক উপস্থিতি আসেনি এবং  কাজের ব্যস্ততায় অনেক সময় হাজিরা সিটে স্বাক্ষর করতে ভুলে যাই। তাই ৪/৫ দিনের স্বাক্ষর একবারে দিয়ে নেই। প্রাইভেট কলেজে পাঠদান প্রশ্নে বলেন, আমি ছুটি নিয়ে যে কোনো যায়গায় যেতে পারি- এটা কোন বিষয় না। গাজী মুনিবুর রহমান নার্সিং কলেজের পরিচালক মোঃ জাকির হোসেন জানান,  তিনি প্রতিদিন আসেন না। মাঝে মধ্যে এসে ক্লাস নেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) ডা. মীর শহীদুল হাসান শাহীন অফিস ম্যানেজ’র বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করে বলেন, তাকে (সিনিয়র স্টাফ নার্স) একাধিকবার তাগিদ দেয়া সত্যেও তিনি মানছেন না। এর পরেও অনুপস্থিত থাকলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আল ইমরান বলেন, কয়েকদিন পূর্বে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন কালে অনেক গড়মিল পরিলক্ষিত হয়েছে। এবং অভিযোগের তদন্ত চলছে। প্রমান পেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Exit mobile version