মিতু হত্যা ৭ বছর নানা বেশে পালিয়ে বেড়ান কালু

চট্টগ্রামের আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি মো. খাইরুল ইসলাম ওরফে কালুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

শুক্রবার রাতে নগরের আকবরশাহ থানার ছিন্নমূল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত কালু রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বাসিন্দা।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের এসপি নাইমা সুলতানা বলেন, মিতু হত্যাকাণ্ডের পর থেকে নানা ছদ্মবেশে সাত বছর ধরে বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন কালু। সবশেষ আকবরশাহ থানা এলাকায় একটি ভবনে নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি নেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার পাশাপাশি বিদেশযাত্রা ঠেকাতে পাসপোর্ট জব্দের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। গ্রেফতারের পর তাকে রাঙ্গুনিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি মাহবুব মিল্কি বলেন, পাঁচলাইশ থানা ও রাঙ্গুনিয়া থানার মামলায় খাইরুল ইসলাম কালুর বিরুদ্ধে দুইটি গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল। সেই দুইটি পরোয়ানামূলে শনিবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরের জিইসি মোড়ের কাছে ওআর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে গুলি ও ছুরিকাঘাতে নির্মমভাবে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ঐ ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন তার স্বামী তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার। মামলাটি তদন্ত করছিল নগর ডিবি পুলিশ। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ‘আদালতের নির্দেশে’ মামলার তদন্তভার পায় পিবিআই।

এরপরই ঘুরতে থাকে মামলার গতিপ্রকৃতি। পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে আসতে থাকে স্ত্রী হত্যার সঙ্গে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার নানা দিক। ২০২১ সালের ১০ মে মামলার বাদী হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবুল আক্তারকে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো কার্যালয়ে ডেকে নেয়া হয়। এরপরই তাকে হেফাজতে নেয় পিবিআই। পরে ১২ মে দুপুরে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে নগরের পাঁচলাইশ থানায় আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন।

বাবুল আক্তার ছাড়া মামলার সাত আসামি হলেন- কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা, এহতেশামুল হক ভোলা, মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু, সাইদুল ইসলাম সিকদার ওরফে সাক্কু ও শাহজাহান মিয়া।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর ঐ মামলায় বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে দুই হাজার ৮৪ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ১০ অক্টোবর অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেন আদালত। অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের মধ্যে বাবুল আক্তার, মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, শাহজাহান মিয়া ও আনোয়ার হোসেন কারাগারে রয়েছেন। জামিনে রয়েছেন এহতেশামুল হক ভোলা। এছাড়া খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু গ্রেফতার হলেও কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা পলাতক রয়েছেন।

Exit mobile version