Site icon দৈনিক দেশের সংবাদ deshersangbad.com

মেধাবীদের অবমূল্যায়ন বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ -শিবির সভাপতি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বলেছেন, মেধাবীরা একটি জাতির উন্নতি অগ্রগতির নিয়ামক। যে জাতি মেধাবীদের যত মূল্যায়ন করেছে সে জাতি ততবেশি এগিয়ে গেছে। অন্যদিকে মেধাবীদের অবমূল্যায়ন বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ।

তিনি রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলামের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সেক্রেটারি জেনারেল রাজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, পুরস্কার বিজয়ী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন।

শিবির সভাপতি বলেন, স্বাধীনতার ৫০টি বছর পেরিয়ে গেলেও এদেশ এগিয়ে যাওয়ার মত অবলম্বন খোঁজে পায়নি। যে মেধাবীরা দেশকে উন্নতি ও সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাওয়ার কথা সেই মেধাবীদের মূল্যায়ন নেই। যতটুকু আছে তা’ও লোক দেখানো। মেধাবীদের অবমূল্যায়ন বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ। শিক্ষাব্যবস্থার এমন বেহাল দশা হয়েছে যে, শিক্ষকরা পর্যন্ত বলতে বাধ্য হচ্ছেন যে, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের মত জায়গা থেকে আমরা চোর তৈরি করছি। এমনকি শিক্ষকরা পর্যন্ত গভেষণা কর্ম চুরি করেন। এমন করুণ পরিস্থিতিতে আজ দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে শত প্রতিকূলতার মাঝেও ইসলামী ছাত্রশিবির স্বপ্ন দেখে। এখনো যদি মেধাবীদের মূল্যায়ন করা যায় তাহলে বাংলাদেশে শিক্ষা, গভেষণাসহ অনেক সংকট কাটিয়ে উঠা যাবে।

তিনি বলেন, আজকে মাতৃভাষা দিবস শুধু বাংলাদেশে নয় বরং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। যা বিশে^র সকল ভাষার জন্য মাতৃভাষা দিবসে পরিণত হয়েছে। এখন লক্ষণীয় যে, মাতৃভাষা দিবসকে আন্তর্জাতিকীকরণের উদ্দেশ্যে ছিলো সবাই মায়ের ভাষা বা নিজের ভাষায় প্রাণ খুলে কথা বলতে পারবে। ইচ্ছামত তার মত প্রকাশ করতে হবে। কিন্তু আজ দেশে জাতীয়ভাবে মাতৃভাষা দিবস পালন হচ্ছে সাথে সাথে মন খুলে যেনো কথা বলতে না পারে সে ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। আমাদের চিন্তা চেতনা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও মূল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক একটি সংস্কৃতি মাদককে আইন করে বৈধ করা হচ্ছে। এর অর্থ হচ্ছে ব্যক্তির যে স্বাধীনতা আছে, স্বকীয়তা আছে তা দাবিয়ে দেয়া। অথচ স্বাধীনতার মূল বিষয়ই ছিলো মানুষ যেনো তার স্বকীয়তা বজায় রেখে এগিয়ে যেতে পারে। সেই জায়গা থেকেই ছাত্রশিবিরের আজকের এই আয়োজন। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো, আমরা যেনো আমাদের স্বকীয়তা তুলে ধরতে পারি নিজের ভাষায় নিজের মত করে। এ প্রেরণাকে সাথে নিয়ে আজকে যারা তরুণ, যুবক, কিশোর রয়েছে তাদের মাথা উচু করে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা বিশ^াস করি, রক্ত নদীকে ভয় না করেই এদেশে স্বাধীনতা এনেছি। সুতরাং আজকে যারা তরুণ যুবক তারাও সকল রক্তচক্ষু, রক্ত সাগর, বাধা-বিপত্তি একপাশে রেখে মেধার চর্চা বাড়িয়ে, মিথ্যার বেড়াজাল ছিন্ন করে আলোর মিছিল বয়ে নিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

তিনি আরো বলেন, এদেশ আমাদের। এদেশে চিন্ত চেতনা লালনকারি হিসেবে আমাদের বেড়ে উঠতে হবে। ইসলামী ছাত্রশিবির যে নীতি নৈতিকতার চর্চা করছে, সমাজ ব্যবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা করছে তার মধ্যে দিয়ে একটি কাঙ্খিত নেতৃত্ব গড়ে উঠবে যারা আগামীর প্রত্যাশিত বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিবে। সেই লক্ষ্যে পৌছার ক্ষেত্রে আজকের আয়োজন যদি সামান্যতম ভূমিকা রাখতে পারে তাহলে কেয়ামতের দিনে ছাত্রশিবিরের জন্য নাজাতের জারিয়াহ হবে।

তিনি দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছাত্র ও অভিভাবকদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, মেধার যে আলোকোজ্জ্বল রশ্মি রয়েছে ছাত্রশিবির সেটা উপস্থাপন করতে চায়। আমরা আশাকরি আগামী দিনে ছাত্রশিবিরের পথচলায় সবাই উৎসাহ যোগাবেন ও পাশে থাকবেন ইনশাআল্লাহ।

Exit mobile version