অন্তর্বাস মেয়েদের একটি ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ পোশাক, যেটা ছাড়া বলা যায় জীবন অচল। যেটা রোজ দরকার পড়ে। কিন্তু মহিলাদের ব্রা এতটা অপরিহার্য? কেনই বা পরেন? কিংবা আদৌ কি সবসময় ব্রা পরা উচিত? জানুন বিস্তারিত।
ব্রা স্তনকে সুরক্ষিত রাখে। বাইরের যেকোনো আঘাত থেকে স্তনকে সুরক্ষিত রাখে। এছাড়াও নানারকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় নারীদের। অনেক সময় ঝুঁকে নীচু হয়েও নানারকম কাজও করতে হয়। সেক্ষেত্রে নানারকম অস্বস্তিকর পরিস্থিতি এড়াতে ব্রা পরা দরকার।
স্তনকে সঠিক সাপোর্ট দিতে: অনেক সময় নানারকম দৌড়-ঝাঁপের কাজ থাকে। আবার শরীরচর্চার সময়ও স্তনকে সাপোর্ট দেওয়ার দরকার পড়ে। নাহলে এই দৌড়ঝাঁপ বা শরীরচর্চার সময় স্তনের লেগে যাবার সম্ভাবনা থাকে। আবার আকারও নষ্ট হতে পারে। তাই ব্রা স্তন দুটিকে সঠিক সাপোর্টে রাখে। দৌড়-ঝাঁপ বা সাধারণ ভাবে হাঁটলেও, স্তনের অনিচ্ছাকৃত মুভমেন্ট, বা নীচের দিকে ঝুলে থাকা যেগুলো খুবই অস্বস্তিকর। এছাড়াও শরীরচর্চা বা খেলার সময় ব্রা না পরলে স্তনের অনিচ্ছাকৃত নানারকম মুভমেন্ট অতিরিক্ত হয়, ফলে স্তনে ব্যথাও হয়। তাই ব্রা স্তনকে সঠিক সাপোর্টে রাখে।
পোশাকের সাথে মানিয়ে নিতে: অনেকেরই স্তনের আকার সঠিক নয়। মানে অনেকেরই লম্বাটে ধরণের হয়। নীচের দিকে ঝুলে থাকে। বা সামনের দিকে অতিরিক্ত উঁচু হয়ে থাকে। এছাড়াও নিপল পোশাকের ওপর দিয়ে বোঝা গেলে বেশ অস্বস্তির কারণ সেটি। তাই পোশাকের সাথে ব্রা না পরলে দেখতে বেশ দৃষ্টিকটু লাগে। ব্রা পরলে স্তন টাইট থাকে। সঠিক জায়গায় থাকে। দেখতে ভালো লাগে। তাই যতই সুন্দর পোশাক পরুন না কেন, ব্রা না পরলে দেখতে মোটেই ভালো লাগবে না। স্তন দুটিকে পোশাকের সাথে ফিট করা দরকার। আর সেটাই করে ব্রা।
স্তনের ওজনকে ধরে রাখে: ব্রা স্তনের ওজন ধরে রাখে। ব্রা স্তনের ওজনকে ব্রেস্ট লাইন ও কাঁধের মধ্যে ভাগ করে দেয়। তার মধ্যে ব্রা প্রায় ৮০% ওয়েট বহন করে। বাকি ২০% বহন করে কাঁধ। তাই সঠিক মাপের ব্রা পরা খুব দরকার। ব্রা ঠিকমত ফিট না হলে, সেই ওজনটা পুরোটাই পরে কাঁধের ওপর। এর ফলে কাঁধে, ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। স্তনেও ব্যথা হতে পারে। এরজন্য সঠিক সাইজ এবং সঠিক কাপ সাইজ আগে দেখে নিন কোন সাইজটা একদম ফিট করছে। সঠিক সাইজ পরলে যথেষ্ট আরামদায়ক।
ব্রা পরার এই সুবিধাগুলো থাকলেও সবসময় কিন্তু ব্রা পরে থাকা একদমই ভালো না। বিভিন্ন নিউ স্টাডি থেকে দেখা যাচ্ছে, সবসময় ব্রা পরে থাকার তুলনায়, যারা কম ব্রা পরেন তাদের ব্রেস্ট যথেষ্ট সুগঠিত হয় এবং ব্রেস্ট নিপল সঠিক আকার পায়। অন্যদিকে সবসময় ব্রা পরলে ব্রেস্ট চেপে থাকে, তার ফলে রক্ত সঞ্চালন সঠিকভাবে হতে পারে না। তাই ব্রা কম পরে থাকলে রক্ত সঞ্চালন সঠিকভাবে হতে পারে, তার ফলে ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেকটা কম থাকে এবং এটা ব্রেস্ট টাইট রাখতেও সাহায্য করে। তবে সবসময় তো ব্রা ছাড়া থাকে সম্ভব নয়, সেক্ষেত্রে স্পোর্টস ব্রা বেশ ভালো স্তনের আকার ঠিক রাখতে।
প্রেগন্যান্ট অবস্থায় কি ব্রা পরবেন?
প্রেগন্যান্ট অবস্থায় ব্রেস্টের নানারকম পরিবর্তন আসে। ব্রেস্ট অনেক বেশী সেনসিটিভ হয়ে যায়। ব্রেস্ট এই সময় একটু বড়, হেভি ও খুব নরম হয়ে যায়। এই অবস্থায় ব্রা ব্রেস্টকে সঠিক সাপোর্ট দেয়। এছাড়াও এই সময় একটা খুব সাধারণ সমস্যা মাঝে মাঝে হয়। ব্রেস্ট মিল্ক পড়তে থাকে। তাই ব্রা না পরলে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির তৈরি হয়। ব্রেস্ট হেভি হয়ে যাবার কারণে, ব্রা না পরলে ব্রেস্টে ব্যথা হবার সম্ভাবনা থাকে। কাঁধেও ব্যথা হতে পারে। যেহেতু কাঁধের ওপরই ব্রেস্টর পুরো ওয়েটটা পড়ে তাই ব্রা পরলে সেটা হয় না, এবং এই সময় ব্রা না পরলে বেবি হবার পরও ব্রা পরতে পারবেন না। তখন ব্রা পরতে খুব কষ্ট হবে। তাই ব্রা পরুন। তবে মায়েদের জন্য স্পেশাল ভাবে ডিজাইন করা ব্রা এখন বাজারে এসে গেছে। বেবি হবার আগে এমনি যেকোনো ব্রা-ই পরতে পারেন। বেবি হবার পর নার্সিং ব্রা, মেটারনিটি ব্রা পরতে পারেন সুবিধার জন্য।
তাহলে জেনে নিলেন তো ব্রা কেন পরা দরকার। এবার সঠিক সাইজের ব্রা পরুন আর দেখুন আপনার সৌন্দর্যকে বিকশিত হতে।