রংপুরে বোরো ধানের বা¤পার ফলন

রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধি: শস্যভান্ডার বলে পরিচিত রংপুরে চলতি মৌসুমে বোরো ধানের বা¤পার ফলন হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে য়েতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে জেলার চাহিদা মিটিয়ে প্রায় তিন লক্ষ মেট্রিক টন চাল অতিরিক্ত থাকবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। তবে বা¤পার ফলনেও ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছে কৃষকগণ। চাষিগণ বলেন, বাজারে যে দামে ধান-চাল বিক্রয় করা হচ্ছে তাতে উৎপাদন খরচ উঠবে না। সরকার ধান-চালের যে মূল্য নির্ধারণ করেছে, তাতেও পোষাবে না। উৎপাদন বেশি হলে কম দামে ধান চাল বিক্রয় করতে হচ্ছে। রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে এক লক্ষ ৬৬ হাজার ৬৩৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে এক লক্ষ ৬৬ হাজার ৯৪০ হেক্টরে চাষ করা হয়েছে। এরই মধ্যে ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। কৃষকরা বলেন, চড়া সুদে দাদন নিয়ে বেশি দামে সার-ডিজেল ক্রয় ও সেচসহ ধান চাষে এবার অতিরিক্ত টাকা খরচ হয়েছে। তবে বাজারে যে দামে ধান-চাল বিক্রয় করা হচ্ছে তাতে উৎপাদন খরচ উঠবে না। ধানের বা¤পার ফলনেও ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছে চাষিগণ। পীরগঞ্জ উপজেলার ভেন্ডাবাড়ি, চতরা, পীরগঞ্জ সদর, মিঠাপুকুর উপজেলার রানীপুর ও বলদিপুকুর এলাকা দেখা যায়, সোনালী ধানে ভরপুর ফসলি মাঠ। প্রতিটি গাছের থোকায় থোকায় ঝুলছে ধান। কোনও কোনও কৃষক ইতোমধ্যে ধান কাটতে শুরু করেছেন। ভেন্ডাবাড়ি গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, বা¤পার ফলন হয়েছে। তবে সারের দাম বেড়েছে। সেইসঙ্গে জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য ডিজেলসহ অন্য সব সামগ্রীর দাম বেশি ছিল। ধান রোপণ থেকে কাটা পর্যন্ত শ্রমিকদের মজুরি বেশি। ধান কাটতে একজন শ্রমিককে ৬০০-৭০০ টাকা মজুরি দিতে হয়। ফলে ধান চাষ করতে যে টাকা খরচ হয়, তা উঠছে না। দাদন ব্যবসায়ী ও এনজিও থেকে চড়া সুদে ঋণ দিয়ে ধান চাষ করতে হয়েছে। ফলে ন্যায্যমূল্য না পেলে তাদের লোকসানে পড়তে হবে। রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো.ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, চলতি মৌসুমে রংপুরে বোরো উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। জেলার খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে প্রায় তিন লক্ষ মেট্রিক টন চাল অন্য জেলায় সরবরাহ করা যাবে। জেলায় চালের চাহিদা প্রায় আড়াই লক্ষ মেট্রিক টন। এবার উৎপাদন হবে পাঁচ লক্ষ মেট্রিক টনের বেশি। কৃষকরা যাতে ন্যায্যমূল্য পান সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেবো।

 

Exit mobile version