মোঃ আশরাফুল আলম দিনাজপুর প্রতিনিধি ঃ
চিকিৎসা জগতে যন্ত্রণামুক্ত পরিশুদ্ধ এবং সর্বকনিষ্ঠ চিকিৎসা বিজ্ঞান ‘হোমিওপ্যাথি’। ক্ষণজন্মা উচ্চ মেধা সম্পন্ন চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডা. স্যামূয়েল হ্যানিম্যানের হাত ধরে প্রকৃতির অজানা অন্ধকারের আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে রোগের যন্ত্রণায় দিশেহারা পীড়িত অসহায় বিশ্ববাসীর সামনে স্বাস্থ্য ঝুঁকিমুক্ত অনবাদ্য এক চিকিৎসা কলার দ্বার উন্মুক্ত করেছে এই হোমিওপ্যাথি।
হোমিও চিকিৎসকদের সর্বপ্রথম প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ পেশাজীবী সংগঠন- বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক পরিষদ (বাহোপ) এর রাজশাহী ও রংপুর বিভাগীয় সম্মেলন ও বিজ্ঞান সেমিনারে প্রধান অতিথি ও প্রবন্ধকার বাহোপের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি প্রখ্যাত হোমিও গবেষক ও লেখক ড. শেখ ফারুক এলাহী আলোচনায় উপরোক্ত কথা বলেন। তিনি চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে বলেন, চিকিৎসকদের পাঁচটি বৈশিষ্ট থাকতে হবে- প্রথমত পরিশুদ্ধ ক্লাসিক্যাল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হতে হবে, হোমিও শিক্ষক হয়ে শেখাতে হবে, চিকিৎসককে লেখক হতে হবে, গবেষক হতে হবে এবং ইয়ং সংগঠক হতে হবে। হোমিওপ্যাথির মৌলিক নীতিমালার গ্রন্থ ‘অর্গানন অব মেডিসিন’ এর সর্বশেষ ৬ষ্ঠ সংস্করণের শিক্ষাকে ধারণ করে শহর থেকে প্রত্যন্ত জনপদে পরিশুদ্ধ হ্যানিম্যানিয়ান হোমিওপ্যাথির প্রচার-প্রসার এবং মান উন্নয়নে কাজ করতে হবে। ১০মার্চ সকাল ১০টায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী শহীদ স্মৃতি আদর্শ ডিগ্রি কলেজ মিলনায়তনে আয়োজিত এ সম্মেলনের উদ্বোধক ছিলেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ওয়াসিকুল ইসলাম। সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন, বাহোপ কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব সংগঠক ডা.অঞ্জন কুমার দাশ। দিনাজপুর জেলা শাখার সভাপতি অধ্যা. অবণীকান্ত মন্ডলের সভাপতিত্বে এবং প্রভাষক ডা. চন্দনা রাণী মন্ডল ও ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় মনোজ্ঞ আলোচনা সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন, কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী-রংপুর বিভাগের সমন্বয়কারী ডা.এস.এম হাবিবুর রহমান (মার্শাল)। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজের অধ্যক্ষ মো. জিল্লুর রহমান শাহ, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি ডা. গোলাম ইয়াজদানী ও ডা. নাজির হোসেন। বক্তারা বলেন, ১৯৭০ সাল থেকে জাতীয় হোমিওপৗাথিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক পরিষদ’ দেশব্যাপি নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে হোমিওপ্যাথির রুপরেখাকে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভুমিকা রেখে চলেছে এবং বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে সংগঠনটি একটি সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর শক্তভাবে দাঁড়িয়ে পরিশুদ্ধ ক্লাসিক্যাল হোমিও জাগরণ তৈরি করেছে। অনুষ্ঠানের প্রারাম্ভে অতিথিদের ফুল, ব্যাজ ও উত্তরীয় দিয়ে বরণ করা হয়। সম্মেলনে দুুই বিভাগের নিবন্ধিত বিজ্ঞান সেমিনারে অংশগ্রহণকারী প্রায় তিনশত চিকিৎসক, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সনদ প্রদান করা হয়। রাজশাহী-রংপুর বিভাগ ছাড়াও ঢাকা, কুমিল্লা ও চাঁদপুরের নেতৃবৃন্দরাও উপস্থিত ছিলেন। অভ্যাগত অতিথিদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে প্রাঙ্গন। মিলন মেলায় পরিনত হয় এ সম্মেলন। সাংস্কৃতি অনুষ্ঠানসহ বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয় ক্লাসিক্যাল হোমিওপ্যাথির এই সম্মেলন।
