Site icon দৈনিক দেশের সংবাদ deshersangbad.com

রৌমারীতে আ’লীগের কমিটি গঠন  নিয়ে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ!

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি গঠন নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও অর্থ-বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে । নবগঠিত আংশিক কমিটিতে দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত ত্যাগী অনেক নেতাদেরকে রাখা হয়নি। একটি গ্রুপ নিজেদের পছন্দের লোকদের দিয়ে কমিটি সাজিয়েছেন। ফলে তৃনমুল পর্যায়ে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়,  দীর্ঘ ৭ বছর পর রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় গত ২৯ শে নভেম্বর। সম্মেলনের প্রথম পর্ব শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্ত হলেও দ্বিতীয় পর্বে সাধারণ সম্পাদক পদ কেন্দ্র করে প্রার্থীর নাম দফায় দফায় পরিবর্তন, হট্টগোল, অবরুদ্ধ, নেতাদের দরজায় লাথি, দেহরক্ষী আহত, পথরোধ, জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে অশোভন আচরণের ঘটনা ঘটে৷ পরে কমিটি না ঘোষনা করে ভোরে পুলিশ পাহারায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতারা। গত ৬ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ ভবনের পার্লামেন্ট মেম্বার্স ক্লাবে বসে কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা ও উপজেলার নেতাদের উপস্থিতিতে সভাপতির নাম ঘোষণা করেন প্রাথমিক ও গন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন এমপি ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু হোরায়রার নাম। অথচ সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। তিনি রৌমারী উপজেলার সিজি জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও জালিয়াতি মামলার আসামী। কমিটি ঘোষনার এক সপ্তাহ পর আংশিক কমিটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশ হওয়ার পর থেকে বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ দলের ত্যাগী এবং পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া কমিটিতে অনেক বিতর্কিত ও জুনিয়র নেতাকে সম্পাদকীয় পদে রাখা হয়েছে। যেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
মোটকথা কমিটি গঠনে রয়েছে অর্থ বানিজ্য ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগও। আংশিক কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক  হয়েছেন মাইদুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি থাকাকালীন সময়ে ভর্তি বানিজ্যে কেন্দ্র করে বর্তমান প্রাথমিক ও গন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেনের ছেলের সাথে হাতাহাতি ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর কলেজ ছাত্রলীগের এই বিতকৃত নেতাকে ১ নং আসামী করে মামলা করেন তৎকালীন সংসদ সদস্য ও বর্তমান প্রাথমিক ও গন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন। শুধু তাই নয় বিতকৃত নেতা হওয়ায় রৌমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে কমিটি স্থগিত করে দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তিনি রৌমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মিনুর ঘনিষ্ঠ হওয়ায় পেয়েছেন সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ৷ বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক পদ পেয়েছেন উপজেলার গয়টাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এ.টি.এম সুলতান মাহমুদ। জীবনে কোনদিন ছাত্রলীগ/যুবলীগ করেননি অথচ তাকে রাখা হয়েছে আওয়ামী লীগের এই মুল কমিটিতে। আইন বিষয়ক সম্পাদকের পদ পেয়েছেন এ্যাডভোকেট ফেরদৌস আল মাহমুদ পলাশ। এখনো তার ছাত্রলীগের বয়স যায়নি। টাকার বিনিময়ে পদ ভাগিয়ে নিয়েছেন এই ছাত্রলীগ নেতা। সহ দপ্তর সম্পাদক পদ পেয়েছেন সুমন মিয়া। তিনি ঢাকার এক নেতার ছেলেকে পড়াতেন সেই নেতার আর্শীবাদে পেয়েছেন পদ। অথচ কোন দিন ছাত্রলীগ /যুবলীগ করেননি তিনি। ত্রান ও সমাজকল্যান সম্পাদকের পদ পেয়েছেন রোকনুজ্জামান রোকন নামের এক বিতকৃত সেনা সদস্য। জীবনে তিনিও কোনদিন ছাত্রলীগ/যুবলীগ করেননি। অর্থের বিনিময়ে ভাগিয়ে নিয়েছেন পদ৷ যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদকের পদ পেয়েছেন আফজাল হোসেন বিপ্লব তিনি কোনদিন ছাত্রলীগ / যুবলীগ করেননি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তিনি সদর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। অল্পদিন রাজনীতি করে ভাগিয়ে নেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ।
কমিটি নিয়ে ক্ষোভ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। পদপ্রত্যাশী অনেকেই থাকেন। কিন্তু সবাইকে পদ দেয়া সম্ভব হয় না। যারা পদ পান না, তারা নানা অভিযোগ করেন। এসবের সত্যতা নেই।’
Exit mobile version