লামায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিরোধপুর্ণ জায়গায় জোরপুর্বক ঘর নির্মাণ

 

সাহাব উদ্দিন রিটু,লামা(বান্দরবান) প্রতিনিধি:বান্দরবানের লামায় নিষেধাজ্ঞা
অমান্য করে বিরোধপুর্ণ জায়গায় জোরপুর্বক ঘর নির্মাণ করার অভিযোগ
পাওয়াগেছে।ঘটনাটি ঘটেছে পৌরসভা এলাকার সরকারী মাতামুহুরী কলেজের উত্তর
পার্শ্বে।দিন দুপুরে ফিল্মি স্টাইলে টিনের ঘর নির্মাণ করে ফরিদ আহমদ ও এরশাাদ
উল্লাহ নামের দুই সহোদরের জমি জবর দখলের অভিযোগ উঠে পৌরসভার কলেজগেট
পাড়ার বাসিন্দা আবুল হাসেম ও তার ছেলে-মেয়েসহ সংঘবদ্ধ একটি চক্রের
বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে এরশাদ উল্লাহর স্ত্রী বাদী হয়ে আবুল
হাসেমসহ ৪০-৫০ জনের বিরুদ্ধে লামা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।অভিযুক্তরা
হলেন,একই এলাকার মৃত হাকিম আলীর ছেলে আবুল হাসেম,আবুল হাসেমের
ছেলেমো.লিটন,সরোয়ার,মো.কায়সার,
মো.সেলিম,মো.ছোটন,গুরা মিয়া ও মেয়ে শাহিনা আক্তার।জমি দখলকে কেন্দ্র করে
দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা যে কোন মুর্হুতে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে
আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
অভিযোগে জানা যায়,পৌরসভার কলেজ গেইট এলাকায় ১একর ৩০ শতক জমির উপর
মো.এরশাদ উল্লাহ ও ফরিদ আহমদ নামে দুই সহোদর র্দীঘ বছর ধরে ভোগ করে
আসছেন।২০২২ সালে আবুল হাসেম নামের এক ব্যক্তি এ জমি দাবী করে বিভিন্ন
ভাবে জবর দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন।এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট
ও জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে উভয় পক্ষের মামলা চলমান রয়েছে।এক র্পযায়ে
চলতি বছরের ৪ আগস্ট আবুল হাসেমের নেতৃত্বে ৪০-৫০ জন সংঘবদ্ধ হয়ে ফরিদ
আহমদদের জমি জবর দখলের চেষ্টা করে।এ সময় ফরিদ আহমদরা তাৎক্ষনিক লামা থানায়
একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এ নিয়ে বৈঠকের পর বিবাদী আবুল হাসেমরা
থানা পুলিশের সিদ্ধান্ত অমান্য করে পুণরায় জমি দখল করতে যায়।পরে ফরিদ আহমদরা
সহকারী পুলিশ সুপার বরাবরে অভিযোগ করেন।অভিযোগের প্রেক্ষিতে তৎকালীন
সহকারী পুলিশ সুপার হস্তক্ষেপ করলে আবুল হাসেমরা জমি জবর দখল করতে
পারেনি।এতে প্রতিপক্ষ আবুল হাসেমরা ক্ষিপ্ত হয়।গত এক মাস আগে প্রতিপক্ষ
আবুল হাসেমরা ফরিদ আহমদের বিরুদ্ধে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে
একটি মামলা ও গত ১৮ মার্চ জমিতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট
আদালতে ১৪৫ ধারায় একটি মামলা করেন।দায়েরকৃত মামলায় ফরিদ আহমদরা জামিন
চাইলে বিজ্ঞ আদালতের বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে এরশাদ উল্লাহ ও ফরিদ আহমদকে
জেল হাজতে প্রেরণ করেন।এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আবুল হাসেমের
নেতৃত্বে আরও ৪০-৫০ জন সংঘবদ্ধ হয়ে গত ৭ নভেম্বের দিনে দুপুরে নিজের করা

নিষেধাজ্ঞা মামলা অমান্য করে বিরোধীয় জায়গার উপর ফিল্মি স্টাইলে জোর র্পূবক
টিনের ঘর নির্মাণের পাশাপাশি জমিতে কলাগাছ রোপন করে দখল করে নেন।জমি
জবর দখলে বাধা দিলে আবুল হাসেমরা এরশাদ উল্লাহর স্ত্রী মরয়িম বেগমকে প্রাণ
নাশের হুমকি দেন।এর আগে এরশাদ উল্লাহর বিরুদ্ধে আবুল হাসেমরা একটি
সিআর মামলা করেন। মামলাটি আদালত খারিজ করে দেন।
ভুক্তভোগী এরশাদ উল্লাহর স্ত্রী মরিয়ম বেগম জানান,আবুল হাসেমরা আনু মিয়া
থেকে ৬০ শতক জমি কিনেছেন ৯১ হোল্ডিং এর ১৪৫নং খতিয়ান ও ২৭০ নং হোল্ডিং
থেকে।কিন্তু তারা ওই হোল্ডিং এর জমি দখল না করে,গায়ের জোরে আমার স্বামী-
দেবরের নামীয় ও ভোগদখলীয় জমি জবর দখল করছে।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইয়াছিন আরাফাত,এনামুল, রুহুল আমিন ও ফাতেমা বেগম
বলেন,দিন দুপুরে ফিল্মি স্টাইলে জমি জবর দখলের ঘটনা যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী
সংঘর্ষে রুপ নিতে পারে।
তবে অভিযুক্ত আবুল হাসেমরা জানায়,ফরিদ আহমদদের বাবা আনু মিয়ার কাছ
থেকে ২০০৬ সালে ৬০ শতক প্রথম শ্রেণীর জমি কিনেছি। যার হোল্ডিং নং ৯১,
খতিয়ান নং ১৪৫ ও হোল্ডিং নং জি ২৭০।কিন্তু আনু মিয়া মারা যাওয়ার পর ওয়ারিশ
ফরিদ আহমদরা আমাদেরকে জমি দখলে না দিয়ে নানান তাল বাহানা করেন।তাই আমার
ক্রয়কৃত জমি দখলে নিয়েছি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানা পুলিশের এএসআই রিয়াজ উদ্দিন
বলেন,পৌরসভার কলেজ গেট এলাকার ফরিদ আহমদদের জমি দখলের ঘটনায় মরিয়ম
বেগম নামের এক নারী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।অভিযোগের প্রেক্ষিতে
তাৎক্ষণিক প্রতিপক্ষ আবুল হাসেমদেরকে বিরোধীয় জমিতে জোর করে ঘর নির্মাণ
না করার জন্য নিষেধ করা হয়।পাশাপাশি বাদী পক্ষ মরিয়ম বেগমকে আদালতের আশ্রয়
নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

Exit mobile version