শতকোটির মাইলফলকে পদ্মা সেতুর টোল

যানবাহন পার হয়েছিল ৯ লাখ ৯৩ হাজার ১৮টি। প্রকৌশলীদের দেওয়া তথ্যমতে গতকাল পর্যন্ত ৫৮ দিনে মোট যানবাহন পার হয়েছে ১০ লাখ চার হাজার ২৮৩টি।

পদ্মা সেতুতে দিনে ২ কোটি ২৯ লাখেরও বেশি টোল আদায় পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে এ পর্যন্ত দশ লাখের বেশি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায়ের পরিমাণও দিনে দিনে বাড়ছে। গতকাল সোমবার পর্যন্ত ১৩৩ কোটির বেশি টোল আদায় হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সে হিসেবে গড়ে দৈনিক ২ কোটি ২৯ লাখ টাকার বেশি টোল আদায় হয়েছে পদ্মা সেতু থেকে।

তথ্য অনুযায়ী, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ঈদের আজহার দিন পর্যন্ত টোল আদায় হয়েছে চার কোটি টাকার বেশি। অন্যান্য সময় ১ কোটি ৮০ লাখ, ২ কোটির বেশি টোল আদায় হয় এই সেতু দিয়ে। বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বা বেশি ছুটি হলে তখন যানবাহনের চাপ বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের গণমাধ্যমকে বলেছেন, সোমবার পর্যন্ত যানবাহন পারাপার ১০ লাখ ছাড়িয়েছে। আর এই সময়ে টোল আদায় হয়েছে ১৩৩ কোটি টাকারও বেশি।

গত ২৫ জুন স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের পরদিন থেকে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় সেতু।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবুল হোসেন জানান, সবশেষ সোমবার সেতু দিয়ে মোট যানবাহন পার হয়েছে ১১ হাজার ২৬৫টি। আর মোট টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৮২ লাখ পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা।

অন্যদিকে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, গত রোববার (২১ আগস্ট) পর্যন্ত মোট যানবাহন পার হয়েছিল ৯ লাখ ৯৩ হাজার ১৮টি। প্রকৌশলীদের দেওয়া তথ্যমতে গতকাল পর্যন্ত ৫৮ দিনে মোট যানবাহন পার হয়েছে ১০ লাখ চার হাজার ২৮৩টি।

ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, পদ্মা সেতু দিয়ে সবচেয়ে কম যানবাহন পার হয়েছে গত ১৬ আগস্ট। ওই দিন সেতু দিয়ে মাত্র ১০ হাজার ৭৬৩টি যানবাহন পার হয়। আর সবচেয়ে বেশি যানবাহন পার হয়েছে প্রথম দিন। ২৬ জুন মোট ৫১ হাজার ৩১৬টি যানবাহন পার হয়। গড়ে যানবাহন পার হয়েছে ১৭ হাজার ৩১৫টি।

দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো পদ্মা সেতু ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার লম্বা। এটি ঢাকা বিভাগের দুই জেলা মুন্সীগঞ্জ আর শরীয়তপুরকে সংযুক্ত করেছে। সেতুর ভাঙার অংশ যোগ করলে মোট দৈর্ঘ্য ৯ কিলোমিটার। স্টিল আর কংক্রিটের তৈরি দ্বিতল সেতুর ওপরের স্তরে রয়েছে চার লেনের সড়ক আর নিচে একক রেলপথ।

৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা বহুমুখী সেতু রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য বড় শহরের সঙ্গে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সড়ক ও রেল যোগাযোগ স্থাপন করবে।

বিশ্বের খরস্রোতা নদীর তালিকায় আমাজনের পরেই পদ্মার অবস্থান। এমন খরস্রোতা নদীর ওপর বিশ্বে সেতু হয়েছে মাত্র একটি। তাই সেতুকে টেকসই করতে নির্মাণের সময় বিশেষ প্রযুক্তির পাশাপাশি উচ্চমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়।

পদ্মা সেতুর পিলার সংখ্যা ৪২ আর স্প্যান ৪১টি। খুটির নিচে সর্বোচ্চ ১২২ মিটার গভীরে স্টিলের পাইল বসানো হয়। অর্থাৎ প্রায় ৪০তলা ভবনের উচ্চতার গভীরে পাইল নিয়ে যেতে হয়। বিশ্বে এখন পর্যন্ত কোনো সেতুর জন্য এত গভীর পাইলিং হয়নি।

Exit mobile version