এশার নামাজের পর মসজিদে মসজিদে ছিল পবিত্র শবে বরাতের তাৎপর্য ও ফজিলত নিয়ে আলোচনা। এরপর মিলাদ মাহফিল, দরুদ, জিকির, কিয়াম, দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনায় মোনাজাত।
তারপর সমবয়সীদের সঙ্গে দলবেঁধে যাচ্ছেন মুরুব্বি ও প্রিয়জনদের কবর জেয়ারতে। দেখা গেছে অনেকে রাত জেগে কোরআন তেলাওয়াত, নামাজসহ বিভিন্ন নফল এবাদতের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বাদ এশা সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়। এছাড়া মসজিদের সামনে আতর, টুপি, মেসওয়াক, তসবিহ, মাস্ক, আগরবাতি, মোমবাতি, জায়নামাজ, পাঞ্জাবি, পাজামা, নামাজ শিক্ষা ও দোয়া-দরুদের বই, মুখরোচক নানা খাবার, শরবত, চায়ের স্টলসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা
এদিন এশার নামাজে প্রায় সব মসজিদেই ছিল উপচেপড়া ভিড়। নানা বয়সী ধর্মপ্রাণ মুসল্লি আসেন জামাতে নামাজ আদায় করতে। শহরের অনেক মসজিদ বর্ণিল বাতি দিয়ে সাজানো দেখা গেছে। কিছু মসজিদে বাড়তি মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে মসজিদের ছাদ, বারান্দা ও সড়কের একপাশে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে।
নামাজ শেষে ফেরার পথে কথা হয় দবির মিয়া নামে এক মুসল্লির সাথে। তিনি বলেন, হুজুরদের মুখে শুনেছি ফারসি ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত। ‘বরাত’ শব্দের অর্থ সৌভাগ্য। আরবিতে বলা হয় ‘লাইলাতুল বরাত’ বা সৌভাগ্যের রাত। এ রাতে নফল ইবাদত বন্দেগিতে ধর্মপ্রাণ মুসলিম মহান আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের চেষ্টা করেন। আমাদের বিশ্বাস বান্দাদের জন্য আল্লাহ তাআলা রহমতের দরজা খুলে দেন।
মোহাম্মদ মিরাজ নামে আরেকজন বলেন, মা-বাবাকে দেখতাম শবে বরাত এলে নফল রোজা রাখতেন। রাতে কোরআন তেলাওয়াত করতেন, দুই রাকাত করে নফল নামাজ পড়তেন। তাহাজ্জুত নামাজ পড়তেন। হালুয়া, আটার রুটি, গরুর মাংস ইত্যাদি নিকটাত্মীয় ও প্রতিবেশীদের জন্য পাঠাতেন। বলতেন, আত্মীয়দের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন যাতে না হয় তাই এগুলো পাঠাতে হয়। তারাও রাত জেগে এবাদত করবেন আর আমাদের জন্যও দোয়া করবেন। এখন মা বাবা নেই। তাদের শেখানো ভালো কাজগুলো অনুসরণ করে চলার চেষ্টা করছি। আল্লাহ আগামী এক বছরের রিজিক ও ভাগ্য নির্ধারণ করেন এ রাতে।