শিশুর সুন্দর ভবিষ্যৎ ও সঠিক বিকাশের জন্য ছোটবেলা থেকেই শিষ্টাচার শেখানো প্রয়োজন। নাহলে একরোখা হয়ে চলতে শিখবে শিশুরা।
ধরে ধরে বা খাতা কলমে শিষ্টাচার শেখানো যায় না। শিষ্টাচার শেখাতে হলে পরিবারের সবাইকেই পজিটিভ আচরণ করতে হবে। কারণ শিশু যা দেখবে তাই শিখবে।
ছোট বাচ্চাদের শিষ্টাচার শেখাতে হলে বাবা-মাকে আগে জানতে হবে, শিশুদের সঠিক বিকাশে কোন কাজগুলো করতে হবে আর কোনগুলো এড়িয়ে যেতে হবে। বাবা-মার আচরণেই শিশু প্রভাবিত হয় এবং সেরকম আচরণ করে।
বাবা মাকে যে কাজগুলো করতে হবে
চিৎকার না করা
পরিবারের কারও ওপর চিৎকার করবেন না। শিশুরা এই স্বভাব চট করে আত্মস্থ করে ফেলে।
বড়দের সম্মান করা
বাড়িতেই হোক বা বাড়ির বাইরে, বয়সে বড় যে কোনো মানুষকে সম্মান করা প্রাথমিক কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। তাই সন্তানের মধ্যে সেই অভ্যাস রপ্ত করাতে গেলে অভিভাবকদেরও এই নিয়ম মেনে চলতে হবে।
ধন্যবাদ দেওয়া
সাহায্য পেলে ধন্যবাদ জানাতে শেখান। ছোটরা কোনো জিনিস এগিয়ে দিলে বা কথামতো কাজ করে রাখলে ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ বলুন। আবার ওর ‘থ্যাঙ্ক ইউ’র উত্তরে ওয়েলকাম বলতে ভুলবেন না।
টেলিভিশন বা মোবাইলে কি দেখছে
মোবাইল ফোন বা টেলিভিশনে এমন উত্তেজক কোনো অনুষ্ঠান যেন তারা না দেখে, সে দিকেও নজর রাখতে হবে। শিশুদের সাথে নিয়ে এমন অনুষ্ঠান দেখা থেকে বিরত থাকুন।
খাবার টেবিলে ভদ্রতা
একবেলা খাবার টেবিলে একসঙ্গে খান। সবাই খেতে শুরু করলে তারপর খেতে শেখান। শব্দ করে খেতে বারণ করুন। অল্প করে খাবার নিতে বলুন। খাওয়া শেষে আগে উঠে যেতে হলে সবাইকে বলে উঠতে হয় এটা শিখিয়ে দিন।
ভুল স্বীকার
ভুল স্বীকার করুন এবং শিশুকেও করতে শেখান। এটা শেখানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো, আপনার নিজের ভুল স্বীকার করতে কখনো কুণ্ঠাবোধ করবেন না। বাচ্চাকে সরি বলতে পিছপা হবেন না।
অলসতা কাটানো
আপনি যদি সারাক্ষণ শুয়ে-বসে, টেলিভিশন দেখে সময় কাটান, বাড়ির খুদে সদস্যটিও কিন্তু সেই অভ্যাসেই বড় হবে। সুস্থ জীবনযাপন করতে যা যা করা প্রয়োজন, ছোট থেকে তেমন অভ্যাস করাতে না পারলে ভবিষ্যতে তাদেরই সমস্যায় পড়তে হবে।
কাজের লোকের সঙ্গে
কাজের লোককে নাম ধরে ডাকা ঠিক নয়। সম্ভাষণে আপনি বা তুমি বলতে শেখান। বাড়িতে কাজের লোক থাকলেই হুটহাট তাকে ফরমায়েশ করা ঠিক নয়। নিজেরাও করবেন না আর এটা ওকে বুঝিয়ে বলুন। বাড়িতে কোনো খাবার এলে কাজের লোককেও দিন। এতে শিশুও শিখবে। কাজের লোকের বিশ্রামের সময় খুব জরুরি না হলে তাকে না ডাকবেন না।
নাকে আঙুল না দেওয়া
কথায় কথায় নাকে আঙুল দেওয়ার স্বভাব ছোটদের মধ্যে প্রায়ই দেখা যায়। কিন্তু এই অভ্যাস অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। বাড়ির কাউকে দেখে এই অভ্যাস শিশুদের মধ্যে গড়ে উঠতেই পারে।
অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে যাওয়া
ছোট থেকে যদি খুদেরা মা-বাবাকে অস্বাস্থ্যকর খেতে দেখে, তা হলে তাদের মধ্যেও সেই একই অভ্যাস গড়ে উঠবে। কৈশোরে বেশিরভাগ ছেলেমেয়ের মধ্যে মদ্যপান বা ধূমপানের মতো অভ্যাসও কিন্তু মা-বাবাদের দেখেই শুরু হয়।
সহমর্মিতা ও পরোপকার
নিজেরা পরের জন্য কাজ করুন, চিন্তা করুন। তাদের কষ্টে পাশে যান, তাদের সাহায্য করুন । দেখবেন শিশুরাও এটাই শিখবে।