হার দিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু বাংলাদেশের

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের জন্য দিনটি হতাশারই কাটল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ ‘এ’ তে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ২২৮ রানের সংগ্রহ দাঁড় করিয়েও ছয় উইকেটে হেরে গেল টাইগাররা। তবে বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয়ের মধ্যে একাই লড়লেন তাওহীদ হৃদয়, দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করেও পারলেন না দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে।

টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ, কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত যেন বুমেরাং হয়ে ফিরে আসে। প্রথম ওভারেই শূন্য রানে বিদায় নেন সৌম্য সরকার। এরপরের ওভারেই দলীয় অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও শূন্য রানে ফিরলে চাপে পড়ে যায় দল।

ছয় ওভার শেষে স্কোর ছিল মাত্র ২৬/৩, যেখানে মেহেদী হাসান মিরাজও ৫ রান করে বিদায় নেন। তানজিদ হাসানের ২৫ রানের ইনিংস কিছুটা স্থিতিশীলতা আনলেও, একবার সেট হয়ে যাওয়ার পর তিনিও উইকেট দিয়ে আসেন। ৩৫ রানের মাথায় অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম আউট হলে বাংলাদেশের ইনিংস আরও গভীর সংকটে পড়ে।

তবে সেই বিপর্যয়ের মাঝেই এক প্রান্ত ধরে রেখে ব্যাট চালিয়ে যান তৌহিদ হৃদয়। ১১৮ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় অসাধারণ ১০০ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। জাকের আলীও ৬৮ রানের মূল্যবান ইনিংস খেলেন, কিন্তু দলীয় ১৮৯ রানের মাথায় তার বিদায়ের পর আর কেউ দাঁড়াতে পারেননি। শেষদিকে রিশাদ হোসেনের ১৮ রান ছাড়া কেউ দুই অঙ্কে যেতে পারেননি, ফলে ৪৯.৪ ওভারে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ, স্কোরবোর্ডে মাত্র ২২৮ রান।

বাংলাদেশের ব্যাটিং ধসের মূল কারণ ছিলেন মোহাম্মদ শামি। তিনি একাই ৫৩ রানে ৫ উইকেট তুলে নেন এবং ওয়ানডে ইতিহাসে সবচেয়ে কম বলে ২০০ উইকেট নেওয়ার বিশ্বরেকর্ড গড়েন। বিশেষ করে, পাওয়ারপ্লেতে সৌম্য ও মিরাজকে ফিরিয়ে শুরুতেই বাংলাদেশকে বড় ধাক্কা দেন। এরপর জাকের, তানজিম এবং তাসকিনের উইকেট নিয়ে নিজের পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন এই ভারতীয় পেসার।

২২৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই আত্মবিশ্বাসী ছিল ভারত। রোহিত শর্মা ৩৬ বলে ৪১ রান করেন, তবে তাসকিন আহমেদ তাকে ফিরিয়ে দেন। এরপর বিরাট কোহলি (২২) ও শ্রেয়াস আইয়ার (১৫) দ্রুত ফিরে গেলে কিছুটা চাপে পড়ে ভারত।

কিন্তু একপ্রান্ত আগলে রেখে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেন শুভমান গিল। ১২৯ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ১০১ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জয় এনে দেন তিনি। তাকে সঙ্গ দেন কেএল রাহুল, ৪৭ বলে ৪১ রানে অপরাজিত থেকে ভারতের জয় নিশ্চিত করেন তিনি।

বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন রিশাদ হোসেন, ৩৮ রানে ২ উইকেট নেন তিনি। তবে মোস্তাফিজ ও তাসকিন ১টি করে উইকেট পেলেও, ব্যাটসম্যানদের দেওয়া কম রানের লক্ষ্য রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

এই পরাজয়ের ফলে বাংলাদেশের সুপার ফোরে ওঠার সমীকরণ কঠিন হয়ে গেল। গ্রুপ পর্বে তাদের পরবর্তী ম্যাচ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে, যেখানে জয়ের বিকল্প নেই। তৌহিদ হৃদয়ের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি দলের জন্য কিছুটা আশার আলো জাগালেও, ব্যাটিং লাইনআপের বাকি অংশের ব্যর্থতা এবং বোলিং আক্রমণের ধার কম থাকা দলকে বিপদে ফেলেছে।

Exit mobile version