১৭ জন শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ করে প্রায় দেড় কোটি টাকার বানিজ্যের অভিযোগে
রাজাপুর পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সহকারি শিক্ষকের সংবাদ সম্মেলন, গুম ও খুনের হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় পরিবার
ঝালকাঠি প্রতিনিধি
ঝালকাঠির রাজাপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ১৭ জন শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ করে প্রায় দেড় কোটি টাকার বানিজ্যের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই স্কুলের শিক্ষক মো: মাহাবুব মোর্শেদ সোহেল। রোববার বিকেল ৩ টায় তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করে জানান, রাজাপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জাহিদুল ইসলাম ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে রাতের আধারে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে একজন সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিলে তিনি তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ করেন। জাহিদুল ইসলাম ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১৭ জন শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ করে প্রায় দেড় কোটি টাকার বানিজ্য করেছে। তাছাড়া তিনি বিদ্যালয়ের ও সরকারি কোষাগারের অনেক টাকা আত্মসাৎ করছেন। এসব বিষয় নিয়ে প্রধান জাহিদুল ইসলামের সাথে শিক্ষক সোহেলের মনক্ষুন্ন হলে রাজাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাসিম উদ্দিন আকনের মধ্যস্থতায় বিষয়টি গত ২৪ আগষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনে মীমাংসা হয়। কিন্তু অতিব দুঃখের বিষয় এই যে, তিনি তার টাকার গরম দেখিয়ে বিভিন্ন এলাকা থেকে সন্ত্রাসী বাহিনী ও তার ছেলে আদির, ভাইয়ের ছেলে অভি, ছোট ভাই ইন্দ্রপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অলিউল ইসলাম মিরন সরকারি বিধি মোতাবেক সকাল ৯টার সময় বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও না মেনে তিনি সন্ত্রাসী কার্যক্রমে অংশ নিয়ে সকাল সাড়ে ১০ টায় মিছিল সহকারে শিক্ষক সোহেলের বাসার সামনে থেকে বিভিন্ন প্রকার দেশীয় অস্ত্রসহ তাকে, তার বাবা, ভাই ও ছেলে মেয়েকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে মিছিল সহকারে সিএন্ডবি রোড প্রদক্ষিণ করে বাগড়ী বাজারের দিক চলে যায়। এ সময় আমার মেয়ে ও স্ত্রীকে প্রধান শিক্ষক মোঃ জাহিদুল ইসলামের ছেলে আদিব ও ভাইয়ের ছেলেরাসহ তারলোকজন শিক্ষক সোহেল ও তার পরিবারকে গুম, খুন করবে বলে হুমকি দেয়। এতে নিরাপত্তহীনতায় ভুগছেন। তিনি পরিবার নিয়ে যাহাতে নিরাপদে বেঁচে থাকতে পারেন এবং তাদের হাত থেকে যাতে রক্ষা পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ প্রসাশনের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন। এদিকে বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে রাজাপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহিদুল ইসলাম পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ মিথ্যা ও মনগড়া ভীত্তহীন আক্রোশমূলক দাবি করে জানান, সহকারি প্রধান শিক্ষক নিয়োগসহ সকল শিক্ষক সচ্ছভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ৫ আগষ্ট সরকার পরিবর্তনের পর শিক্ষক সোহেলে আচরনে পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। বিভিন্ন সময় প্রধান শিক্ষক ও এক শিক্ষিকাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে হুমকি দিচ্ছে, যা একজন শিক্ষকের আচরন হতে পারে না। নিয়োগ ও আয় ব্যয়ের সকল হিসাব নিয়ে যে অভিযোগ করেছেন তা মিথ্যা ভীত্তিহীন। তার ছেলেকে জড়িয়ে তার বাসায় হামলার যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা সিসি ক্যামেরা দেখে সত্যতা যাচাইয়ের দাবি করেন তিনি।
ঠাকুরগাঁওয়ে বালিয়াডাঙ্গীর হলদিবাড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম-দুরনীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে জসীমউদ্দীন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উপস্থিত নেই ,কিন্তু শিক্ষক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেছেন । কিভাবে করেছেন, এমন প্রশ্ন উঠেছে জনমনে । ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার কয়েকটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বিষয়টি অনিয়ম দুর্নীতি আর অপরাধ বলে মনে করছেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ এলাকাবাসী। এতে করে ভেঙ্গে পড়েছে শিক্ষা কার্যক্রম । আবার কোথাও কোথাও ঘুরছে অপ্রীতিকর ঘটনা। এমন চিত্র দেখা গেছে ,বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হলদিবাড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে। ঘুষ বাণিজ্যেরও অভিযোগ উঠেছে ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তিনি এখনো তার মামলার পলাতক আসামী। ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্তে মোট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৫টি । গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর গা ঢাকা দিয়েছেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০-২৫ জন প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক । কিন্তু তারা বিদ্যালয়ে উপস্থিত না থাকে হাজিরা খাতায় দিয়ে যাচ্ছেন আগাম স্বাক্ষর । এতে করে একদিকে যেমন ভেঙ্গে পড়েছে শিক্ষা কার্যক্রম, ঘটছে অপ্রীতিকর ঘটনা লাঞ্ছিত হচ্ছেন শিক্ষক -কর্মচারী অপরদিকে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে জনমনে । বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হলদিবাড়ি গ্রামের ইসমাইল হোসেন বলেন, এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্কুলে উপস্থিত থাকেন না । গত ১৭ বছর ধরে স্কুলটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে । কর্মচারী – শিক্ষক নিয়োগের দুটি টাকাও স্কুলের ফান্ডে জমা করেনি । এই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ আছে । পরে তিন লাখ টাকা দিয়ে মিটিয়ে ফেলেছেন । নজরুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসে না । রাতের বেলা এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে। দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে টাকার বিনিময়ে ২০২০ সালে নিয়োগ ২০২৪ সালে দিয়েছেন । এমপির পরিবারের সাথে সম্পর্ক থাকায় প্রধান শিক্ষক দুর্নীতিবাজ হয়ে ওঠে । হলদিবাড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজিজুর রহমান -(১) বলেন, প্রধান শিক্ষক না থাকায় স্কুলটিতে কোন ডিসিপ্লিন নাই । যে যার মতো করে স্কুলে আসছে আর যাচ্ছে । প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী ফাতেমা জান্নাত অফিস সহকারি । তিনি হাজিরা খাতাকে কেন্দ্র করে আমার শার্টের কলাট ধরেছেন আমাকে লাঞ্ছিত করেছেন । আমি ইউএনও কাছে অভিযোগ দিয়েছি । ঐ স্কুলের সহকারী শিক্ষক শাহাদাত হোসেন বলেন, আমাদের প্রধান শিক্ষক আওয়ামী লীগের একটি পদে ছিলেন । সে কারণে গত ১৪ বছরে যা খুশি তাই করেছেন । স্কুলে আসেন না, সব সময় দলের কাজে ব্যস্ত থাকতেন । ২৩-২৪ অর্থ বছরে ৪টি পদে নিয়োগ দিয়েছেন। তাদের কাছে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা নিয়েছেন আবার ২০১৯ সালের নিয়োগ ২০২৪ সালে দিয়েছেন । যাকে আমরা আজ পর্যন্ত স্কুলে আসতে দেখি নাই। একই কথা বলেন, বিদ্যালয়ের আরেক সহকারী শিক্ষক, হলদিবাড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, বিগত তিন মাস ধরে আমরা স্কুলে আসছি কিন্তু ক্লাস ঠিকমতো হচ্ছে না । প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসে না, অন্যান্য বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে, কিন্তু আমাদের বিদ্যালয়ে এখনো শুরু হয়নি, অনেকেই এই বিদ্যালয় ছেড়ে অন্য স্কুলে ভর্তি হচ্ছেন । আমরা এই নিয়ে হতাশাই আছি। অনুমতি না নিয়ে স্কুলে প্রবেশ করাই সাংবাদিকদের দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন, হলদিবাড়ির বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজিজুর রহমান ( ২) তিনি প্রধান শিক্ষকের কাছের মানুষ বলে জানা গেছে, তিনি নিজেকে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দাবি করেছেন। অপরদিকে বিদ্যালয়ের গিয়ে দেখা গেছে , হাজিরা খাতা নিয়ে প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী অফিস সহকারী ফাতেমা জান্নাত লাঞ্ছিত করেছেন ঐ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজিজুর রহমান (১) কে । কিন্তু এ ব্যাপারে কোন কথা বলতে রাজিহননি তিনি । মামলার আসামি পালিয়ে বেড়ানো হলদিবাড়ি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল হোসেন এর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি । বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আলী শাহারিয়ার বলেন, যেহেতু অভিযোগ পাওয়া গেছে ,পরিদর্শন করে দেখবো। ম্যানেজিং কমিটি কতৃক পরিচালিত যেহেতু সেক্ষেত্রে দেখার দায়িত্ব ম্যানেজিং কমিটির । আর ২০-২৫ জন শিক্ষক মামলার শিকার হয়ে কেউ পালাতক কেউ মেডিকেলে ভর্তি আছেন । বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ কুমার দেবনাথ বলেন, আমি এটা ব্যবস্থা নেব। উনার স্ত্রী এক সহকারী