১৯৭১ এর বৃহত্তর বরিশালের ২৫ এপ্রিল সর্ব প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ ও মুক্তিবাহিনী গঠনে সৈয়দ আবুল হোসেন

১৯৭১ এর বৃহত্তর বরিশালের ২৫ এপ্রিল সর্ব প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ ও মুক্তিবাহিনী গঠনে বেইজ কমান্ডার মরহুম সৈয়দ আবুল হোসেন (সেনা সার্জেন্ট) এর ভূমিকা। স্মারক গ্রন্থে ঠাই পাওয়ার জন্য। পরিচিতি

“সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত”
১৯৭১ এর বৃহত্তর বরিশালের ২৫ এপ্রিল সর্ব প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ ও মুক্তিবাহিনী গঠনে বেইজ কমান্ডার মরহুম সৈয়দ আবুল হোসেন (সেনা সার্জেন্ট) এর ভূমিকা। স্মারক গ্রন্থে ঠাই পাওয়ার জন্য।
পরিচিতি

মরহুম সৈয়দ আবুল হোসেন, সেনা সার্জেন্ট।
পিতাঃ মরহুম সৈয়দ মোন্তাজ উদ্দিন দারোগা।
মাতাঃ লায়লী বেগম সেরনিয়াবাত বংশের মেয়ে।
জন্ম: ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৩২ সাল
মৃত্যু: ৪ মার্চ ২০০০ সাল
সেনাবাহিনী গেজেট নং :১৪২৭৪, ব্যক্তিগত নং ৬৫৬৮৯৮১
লাল মুক্তিবার্তা ক্রমিক নং : ০৬০১১০০৬৫২।
সমন্বিত পরিচিতি নং- ০১০৬০০০৬৬৭১।
প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষরিত সনদ ক্রমিক: ৪১২৯৪/১১ জুন-২০০১

বর্তমান বরিশাল জেলাধীন গৌরনদী উপজেলার অন্তর্গত উত্তর নাঠৈ গ্রামের পল্লী অঞ্চলে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে এ ক্ষণজন্মা পুরুষের জন্ম হয়। তার সহধর্মিনী সৈয়দা রওশন আরা বেগম। তার তিন পুত্র, ৬ কন্যা। তিনি পাকিস্তান রাওয়ালপিন্ডির সেনা নিবাসে কর্মরত ছিলেন। সেখানে বসেই শুনতে পেলেন তাঁর নিজ মাতৃভূমি একটি অনিবার্য যুদ্ধের দিকে যাচ্ছে। তিনি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে ছিলেন স্বাধীনচেতা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার। তিনি বহুগুনের অধিকারী ছিলেন। বাল্যকাল থেকে তার সততা,মহানুভবতা, দুঃসাহসীকতা,ও জনসেবামূলক কর্মকান্ড ছিলো সকলের দৃষ্টি কাড়ার মতো। তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কৌশলে ছুটি নিয়ে ১৯৭০ সনের ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে নিজ বাড়িতে চলে আসেন। বাড়িতে এসে দেখলেন দেশ নিশ্চিতভাবে একটি মুক্তিযুদ্ধের দিকে যাচ্ছে। পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে তিনি আর গেলেন না। অপেক্ষায় থাকলেন তাঁর প্রিয় নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কখন মহান স্বাধীনতার ডাক দেবেন। এভাবে অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকেন। আসলো সেই কাক্সিক্ষত সময়, ১৯৭১ সনের ৭মার্চ। প্রিয় নেতার রেসকোর্স ময়দানের সেই মহান স্বাধীনতার ডাক ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম’। এই কথা শুনা মাত্রই সৈয়দ আবুল হোসেন যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। দৃঢ় অঙ্গিকার করলেন নিজের প্রাণের বিনিময় হলেও এদেশকে স্বাধীন করবেন। ছুটে গেলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভগ্নিপতি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের কাছে। সেরনিয়াবাতের গ্রামের ভাগিনা সৈয়দ আবুল হোসেন। তিনি একজন সৈনিক ছিলেন। সৈনিকের জিবনই প্রকৃত পক্ষে মানব সেবার বিশেষ সুযোগ। বন্যা,খড়া,ভূমিকম্প,যুদ্ধ,বা যে কোনো মহামারীর মতো কঠিন সময় একমাত্র সৈনিকেরাই সাহসের সাথে সব কিছু মোকাবিলা করার সুযোগ পায়। তাই শহিদ মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সৈয়দ আবুল হোসেনকে পেয়ে ভরসা পেলেন। তখন তিনি অন্য কাউকে দায়িত্ব না দিয়ে বৃহত্তর গৌরনদী বরিশাল সহ দক্ষিন বঙ্গের স্থল পথের যুদ্ধ মোকাবিলার দায়িত্ব দুঃসাহসী সৈয়দ আবুল হোসেনকে বুঝিয়ে দিলেন,এবং উৎসাহিত করলেন। মাননীয় শহিদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে ১ এপ্রিল তখনকার গণ্যমাণ্য রাজনৈতিক নেতাদের সহযোগিতায় গৌরনদীতে মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প গঠন করেন। কলেজ মাঠে সৈয়দ আবুল হোসেনের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী গঠন ও অস্ত্র প্রশিক্ষণের খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে বৃহত্তর গৌরনদী (আগৈলঝাড়া) উজিরপুর, বাবুগঞ্জ সহ বিভিন্ন পাড়া মহল্লা থেকে দলে দলে ছাত্র,জনতা, আর্মি, পুলিশ, বিডিআর ও আনসার গৌরনদী ক্যাম্পে এসে যোগদান করেন। কয়েক দিনের মধ্যে গৌরনদীতে বিশাল মুক্তিবাহিনী গড়ে ওঠে। প্রথম অবস্থায় অস্ত্র না থাকার কারনে বন্দুকের মতো করে সকলকে বাশের লাঠির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এবং সশস্র বাহিনীর সদস্যদের বিভিন্ন দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়। ওখানের ইউনিট কমান্ডর ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবেদার মোস্তফা। সেকেন্ডইন কমান্ড ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আ,ন,ম আব্দুল হাকিম। কোৎ কমান্ডার ছিলেন যুদ্ধাহত জাতীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম মন্টু মোল্লা।
১৬ এপ্রিল কমান্ডারের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনীর একটা দল বিভিন্ন কলা কৌশলের মাধ্যমে থানার অস্ত্রাগারের তালা ভেঙ্গে ৩০টি থারটি থ্রি বন্দুক ও ৮ পেডি গুলি উদ্ধার করে আনেন। এই অস্ত্র দিয়েই যুদ্ধের প্রস্তুতি বেগবান হয়ে ওঠে। ১৭ এপ্রিল হঠাৎ করে দ’ুটি বিমানের বিকট শব্দে পুরো গৌরনদী প্রকম্পিত হলো। আকাশের দিকে তাকাতেই দেখে বোমারু প্লেন ক্যাম্পের দিকে ধেয়ে আসছে। তড়িৎ গতিতে যোদ্ধা বাহিনীকে নির্দেশ দিলেন সাড়াঁশি ফায়ার দিয়ে বিমানকে পাল্টা আক্রমণ করে বিধ্বস্ত করার জন্য। ফায়ার ওপেন করা মাত্রই বিমানটি সোজা দক্ষিণ দিকে চলে যায়। শোনা গেছে ওটা বিমান হামলা ছিলোনা। এটা ছিলো বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চলে স্থল পথে পাক সেনাদের প্রবেশের রাস্তা কিলিয়ারেন্সের মহড়া। ১৯ এপ্রিল চারদিক থেকে বিপুল পরিমাণ মুক্তিবাহিনী হরলাল গাঙ্গুলির বাড়িতে সংগঠিত হলো। এই মুক্তিবাহিনী পরিচালনার দায়িত্ব ছিলেন রাজনৈতিক নেতারা। তাঁরা হলেন-
১। বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি দক্ষিণ বঙ্গের কর্ণধার
আব্দুুর রব সেরনিয়াবাত।
২। এম. পি করিম সরদার।
৩। মধুমির সাহেব।
৪। কেশব বাবু।
৫। মতিয়ার রহমান তালুকদার সহ অন্যান্যরা।
২৫ এপ্রিল খুব ভোরে লক্ষন দাসের ছেলে অরুন দাসের মাধ্যমে জানতে পেলেন মাদারীপুর পর্যন্ত পাক সেনারা চলে এসেছে। যে কোনো মুহূর্তে বরিশালে প্রবেশ করবে। কমান্ডার তার বাহিনীকে তড়িৎ সিদ্ধান্ত দিলেন প্রত্যেককে একটি করে রাইফেল ও ১০ রাউন্ড গুলি নিয়ে দ্রুত গতিতে ভুরঘাটা গিয়ে ব্রিজ ও রাস্তা ভেঙ্গে ফেলে পাক সেনাদের প্রতিরোধের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য। কমান্ডারের নির্দেশ পেয়ে ৬০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা দুই তিন ভাগে ভাগ হয়ে যায়। উনারা সদলবলে গৌরনদী হাইওয়ে উঠে দ্রুত মার্চ করে কটকস্থল সাউদের খাল ব্রিজের পূর্ব, পশ্চিম, ও দক্ষিনে ভাগ হয়ে বিশ্রামে বসলেন। ব্রিজ ভেঙ্গে ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বেলা তখন প্রায় ১২টা। এরিমধ্যে গুলির শব্দ শুনা গেলো। পাক সেনারা মাদারীপুর থেকে আসার সময় প্রথমেই তারা বার্থী কালি মন্দিরে আক্রমন করে। তারপর ঘ্যাট ঘ্যাট শব্দ করে পাকসেনাদের গাড়ী বহর সাউদের খালের ব্রিজের দিকে দ্রুত চলে এসেছে। ঐ বহরের সামনেই ছিলো পতাকাবাহী অফিসারের গাড়ী। আর পিছনে ছিলো ২২ গাড়ি পাকসেন হেভী আগ্নেয়াস্ত্র, অত্যাধুনিক মেশিনগান, চায়নিস রাইফেল ও গোলাবারুদ নিয়ে। সাউদের খালের চারিপাশে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান টের পেয়েই হিংস্র পাকসেনারা গুলি ছুড়তে থাকে। এদিকে কমান্ডারের নির্দেশে তার মুক্তিবাহিনীরাও পাক সেনাদের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন এবং ফায়ার ওপেন করেন। ফলে দুপক্ষের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। মুহূর্তের মধ্যে কটকস্থল রণক্ষেত্রটি লন্ডপন্ড হয়ে যায়। কামান মেশিনগান আর গোলাগুলির শব্দে পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়েছিল। নিরস্ত্র বেসামরিক বহু লোক ও রিক্সাওয়ালা সেদিন মারা গিয়েছিল। আশেপাশের প্রচুর ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট, বিধ্বস্ত হয়েছিল। কামান্ডারের কমান্ডিং-এ তার বাহিনীরা দুই তিন ঘন্টা বীরত্বের সাথে সম্মূখ যুদ্ধ করেন। এক পর্যায়ে কমান্ডারের চারজন মুক্তিযোদ্ধা গুলির আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে ধান ক্ষেতে,বেত ঝোপে, লুটিয়ে পড়েন। তাঁদের নাম যথাক্রমেঃ
১। শহিদ মোক্তার হেসেন (দেওপাড়া, বাটাজোড়, গৌরনদী)
২। শহিদ সৈয়দ হাসেম আলী (উত্তর নাঠৈ, গৌরনদী)
৩। শহিদ পরিমল মন্ডল ( চাঁদশী, গৌরনদী)
৪। শহিদ আলাউদ্দিন সরদার (গৈলা, আগৈলঝাড়া)
চোখের সামনে সহযোদ্ধাদের করুণ ও মর্মান্তিক মৃত্যুর দৃশ্য দেখে কমান্ডার ক্রোধে হিংস্র রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মতো ঘাতকদের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন। তিনি মৃত্যুর পরোয়া করলেন না। তিনি তাঁর হেভী আগ্নেয়াস্ত্র হাতে উঠিয়ে শত্রু সোনাদের দিকে এগিয়ে গিয়ে ফায়ার করে তাঁদের ভীতকে কাঁপিয়ে দিলেন। এই যুদ্ধে পাক বাহিনীর সাজোয়া যান, অত্যাধুনিক মেশিনগান, ও গোলাবারুদের কাছে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ছিলো অসহায়। তাদের কাছে পর্যাপ্ত অস্ত্র গোলাবারুদ ঐ মুহূর্তে ছিলোনা বললেই চলে। তার পরেও কমান্ডারের রনকৌশল ও দুঃসাহসী নেতৃত্বের ফলে সেদিন শত্রু সেনাদের দুটি গাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছিল এবং ৮ জন পাক সেনাকে হত্যা করতে সক্ষম হয়েছিল। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ১০ রাউন্ড গুলি ফুরিয়ে গেলে তারা কৌশল অবলম্বন করে পিছু হটতে বাধ্য হন।
এই সুযোগে পাকসেনারা ব্রাশ ফায়ার করে রাস্তার দুধারে আগুন জ্বালাতে জ্বালাতে বার্থী টরকী গৌরনদী হয়ে বরিশালের দিকে চলে যায়। পরের দিন কিছু পাক সেনারা গৌরনদী মুক্তিযোদ্ধাদের কলেজ ক্যাম্পে এসে নিজেদের ঘাঁটি বানায়। এই যুদ্ধ ছিলো বৃহত্তর দক্ষিণ বাংলার স্থল পথের পাক সেনাদের প্রবেশের সর্বপ্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ। এই যুদ্ধের গুরুত্ব ছিলো অপরিসীম। এই যুদ্ধ ছিলো একটি ভয়ানক ও আলোড়ন সৃষ্টিকারী যুদ্ধ। এই যুদ্ধের পরে কমান্ডার সৈয়দ আবুল হোসেনের বীরত্ব নেতৃত¦ আর দুঃসাহসিকতার খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এই যুদ্ধের পরে শহিদ আব্দুল রব সেরনিয়াবাতের নির্দেশে কমান্ডার নিজের জীবনকে বাজি রেখে তার সহধর্মীনি অর্থাৎ জাতীর জনক বঙ্গবন্ধুর বোন আমেনা বেগম সহ তার পরিবারের স্বজনদে হিংস্র পাক সেনাদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কোলকাতায় নিরাপদে পৌঁছাতে গিয়ে যশোরের কালিগঞ্জে গ্রেফতার হন ও রক্তাক্ত হন তাসত্বেয় তাৎক্ষনিকভাবে সুকৌশলে পাক সেনাদের আহত নিহত করে কোলকাতায় পৌঁছিয়ে তাদের জীবনের সুরক্ষা করেন। নিজে ভারতের হেডকোয়াটার এ চলে যান উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য। পরবর্তীতে অস্ত্র, গোলাবারুদ, গ্রেনেড ও সৈন্য বাহিনীসহ দেশে ফেরার সময় নদী পথের অসংখ্য জায়গায় ভারতিয় ফরেষ্ট বাহিনীর প্রশংসিত সফল যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন এবং বরিশালের প্রধান যুদ্ধ ঘাঁটি উজিরপুর বড়াকোঠা দরগা বাড়িতে এসে অবস্থান নেন। তারপর দীর্ঘ ৯ মাস দক্ষিনবঙ্গের জলে স্থলে তার বিশাল সৈন্য বাহিনীরা বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেন। তিনিই ছিলেন নবম সেক্টরের অধীনে বৃহত্তর বরিশালের সর্বপ্রথম মুক্তিবাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা। সম্মুখ যুদ্ধের যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা। প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধ সহ অসংখ্য যুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী। তার স্বীকৃতি ছিলো সব কমান্ডারের উপরে। কেননা তাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন বাঙ্গলী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু’র ভগ্নিপতি, দক্ষিন বঙ্গের অবিসাংবাদিত নেতা, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত। যুদ্ধ শেষে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করেন। অবসর জীবনে গ্রামে এসে তিনি নিবেদিত হয়ে সমাজ সেবা করেন। ১৯৯৬ সালে নির্বাচনেও তিনি মাননীয় এম.পি ও জননেতা হাসানত আব্দুল্লাহ্ ভাইয়ের বিজয় সিনিয়ে আনার জন্য বেইজ কমান্ডার তার বৃদ্ধ শরীরের সর্বশেষ শ্রম, ঘাম, ত্যাগ ও ভালবাসা উজার করে দিয়েছিলেন ২০০০ সালের ৪ঠা মার্চ মুক্তিযুদ্ধাদের যাচাই বাচাই ও মূল্যায়ন হওয়ার আগেই তিনি না ফেরার দেশে চলে যান। তার কপালে, পায়ে, বাহুতে তিনটা গুলির চিহ্ন ছিলো। তিনি ১৫ বছরের সেনা অভিজ্ঞ, ৪৩ বছর বয়স্ক, সৎ,নির্লোভ,নীতিবান, ব্যক্তিত্ববান ত্যাগি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অকুতভয় লড়াক দেশ প্রেমিক ছিলেন। অতএব,এই যুদ্ধকে আলোকিতও গৌরবান্বিত করার জন্য গৌরনদীর কটকস্থলে কমান্ডার সহ তার শহিদ ৪ মুক্তিযোদ্ধা ও বাহিনীর নামের স্মৃতিস্তম্ভ করা হলে বরিশালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পূর্ণতা পাবে এবং এই বীরের প্রতি যথাযত সম্মান প্রদর্শন করা হবে। ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বেইজ কমান্ডারের বিরত্ব কথা বই প্রনয়ন করে সাবেক ও বর্তমান দুই জেলা প্রশাসক দ্বারা তার বইয়ের মড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু,বাংলাদেশ চিরজীবী হউক।

প্রনয়নকারী

সৈয়দা নাসিমা পুতুল (শিক্ষক ও লেখক)
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বেইজ কমান্ডার কন্যা

 

Exit mobile version