মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে বিজ্ঞানাগার নির্মাণ কাজে বালু সরবরাহ নিয়ে বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষেও ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৬ জানুয়ারি) বেলা ১২ টার দিকে উপজেলার জোরারগঞ্জ বাজারে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সামনে এই সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় দলের ৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আহতরা হলেন সাবেক শিবির নেতা জামাল উদ্দিন (৩৯), জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব মাসুকুল আলম সোহান (৪৮), য্বুদল কর্মী মামুন (৩৫), জামায়াত কর্মী আলা উদ্দিন (৩৬), মোহাম্মদ আলী (৩৪)। এদের মধ্যে গুরুতর আহত হওয়া জামাল উদ্দিনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। বিকেল সাড়ে ৫ টায় এই সংবাদ লিখার সময় সংঘর্ষের ঘটনাস্থল জোরারগঞ্জ বাজারে আতঙ্ক বিরাজ করছে এবং সেনাবাহিনী ও জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জোরারগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বিজ্ঞানাগার নির্মাণ কাজের বালু সরবরাহ নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের সাথে সোমবার সকালে কথাকাটি হয়। পরে ২ গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে জোরারগঞ্জ বাজারের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করে। পরে সেনাবাহিনী ও জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এর আগে রবিবার রাতে জেএস এন্টারপ্রাইজ বালু সরবরাহ করলে বিএনপি নেতাকর্মীরা বালুর ট্রাক আটকে রাখে।
এই বিষয় বিজ্ঞানাগার নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনিয়ার মাহবুব আলম বলেন, ‘নির্মাণ কাজের বালু ভরাটের কাজ কোন গ্রুপের লোকদের দেওয়া হয়নি। স্যাম্পলের জন্য বালু নিয়ে আসলে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতে নেতাকর্মীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে।’
জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব মাসুকুল আলম সোহান জানান, বালু ভরাটের কাজ তাদের লাইসেন্স জোরারগঞ্জ এন্টারপ্রাইজকে দেওয়া হয়েছে। জামায়াতের নেতাকর্মীরা বালু ভরাটের সময় বাধা সৃষ্টি করে। পরে মোটরসাইকেল নিয়ে জামায়াতের হেলমেট বাহিনী, প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে হামলা করে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর। এতে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী আহত হয়।
জোরারগঞ্জ থানা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মাঈন উদ্দিন জানান, এটি ব্যবসায়ীক ঘটনা। হামলার বিষয়ে নিন্দা জানাই। বিএনপির নেতাদের সাথে বসে সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জোরারগঞ্জ থানা জামায়াতের আমীর নুরুল হুদা হামিদী বলেন, নির্মাণ কাজের বালু সরবরাহের দায়িত্ব পায় জেএস এন্টারপ্রাইজ। কিন্তু বালু পাঠানোর পর বিএনপির লোকজন আটকে দেয় এবং নেতাকর্মীদের উপর হামলা করে। এতে জামাল, আলী ও আলা উদ্দিনসহ কয়েকজন আহত হয়। বিষয়টি নিয়ে আমরা বিএনপির সাথে বসবো।
জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটিএম শিফাতুল মাজদার বলেন, ‘জোরারগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সামনে রাজনৈতিক ২ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশের টিম এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’