Love Story: দূর সম্পর্কের দাদার সঙ্গে ৮ বছরের প্রেম, বিয়ে করতে চাই শুনেই বাড়ির লোক যাতা বলছে, আমি কী দোষ করেছি?

Inter Family Marriage: প্রেমের কি সত্যিই কোনও সীমারেখা হয়? সেখানে বয়স বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে? নাকি অন্য কোনও সম্পর্ক আপনার প্রেমের সম্পর্কটি ভেঙে দিতে পারে? তা হতে পারে না। আমারও মাঝেমধ্যেই সেই কথা মনে হয়। যখন চারপাশের লোকজন শুধুমাত্র আমার সম্পর্কের জন্য আমায় নিচু চোখে দেখে, আমার কান্না পায়। আমার যেন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যায়। কী করব, বুঝতে পারি না। আমি চাকরি করি।

তারপরেও যখন সবাই আমায় চার পাঁচটা কথা শোনায়, আমার মেনে নিতে ভালো লাগে না। আমি আমার প্রেমিককে খুবই ভালোবাসি। তাকে ছাড়া বাঁচব না। এদিকে আমার বাড়ির লোকও যেন কিছুতেই আমাদের সম্পর্কটা মেনে নিতে রজি নয়। কিন্তু কেন এরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে? আমি সেসবই স্পষ্ট করে জানাব। আমার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ চাই। অনুগ্রহ করে আমায় সাহায্য করুন ও এই পরিস্থিতি থেকে বের করে আনুন। আমি বলছি সব… (প্রবন্ধের সব ছবি – প্রতীকী)

প্রেম করি বলে এত দুঃখ?

আমার বয়স ২৬ বছর। চাকরি করি। ইতিমধ্য়েই বিয়ে করব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ চাকরি ক্ষেত্রে আমি সফল। আমি কারও প্রতি নির্ভরশীল হয়। বিগত ৮ বছর ধরে আমার একটি সম্পর্ক রয়েছে। একটি ছেলেকে আমি ভালোবাসি। সেও আমায় খুব ভালোবাসে। এবার আমরা বিয়ে করতে চাই। বিয়ের সিদ্ধান্ত বাড়িতে জানানোর পরেই সমস্যা শুরু হয়েছে। কী কঠিন পরিস্থিতিতে আমি রয়েছি, তা বলে বোঝাতে পারব না।

আসলে আমাদের দুজনের ঠাকুরদা বন্ধু ছিলেন। এই বন্ধুত্ব এতটাই গাঢ় ছিল যে, তাঁরা একে অপরকে ভাই মনে করতেন। সেই থেকে আমাদের দুই পরিবারের মধ্যে এক আত্মীয়তা তৈরি হয়। এই কথা ঠিক যে, আমাদের মধ্য়ে কোনও রক্তের সম্পর্ক নেই। কিন্তু ছেলেটিকে আমায় তুতোভাইয়ের (Distant Brother) চোখে দেখতেই শেখানো হয়েছিল ছোট থেকে। প্রথমে সম্পর্ক ভাই বোনের (Cousin) মতোই ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে আর তা থাকেনি।

কীভাবে বাড়িতে বোঝাব যে ওকে বিয়ে করতে চাই?

আমরা একে অপরের প্রেমে পড়ি(Inter Family Love)। দুজন দুজনকে ভীষণ ভালোবাসি। এবার আমরা বিয়েও করতে চাই। কিন্তু বাধা দিচ্ছে পরিবার। ৮ বছরের সম্পর্কের পর যখন একে অপরের থেকে আলাদা থাকতে হবে ভাবি, মন খারাপ হয়।

কিন্তু বাড়ির লোক কিছুতেই আমাদের প্রস্তাব মানছে না। তাঁরা এই বিয়ের প্রস্তাবকে খুবই খারাপ মনে করছে। আমরা একে অপরের সঙ্গে সারাজীবন থাকব। কী করে দুই পরিবারকে রাজি করাব? কীভাবে তাঁদের বোঝাব। অনুগ্রহ করে পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করুন।

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ(Relationship Tips)

পরামর্শ দিচ্ছেন রচনা আওয়াত্রামনি। আমি আপনার কঠিন পরিস্থিতি বুঝতে পারছি। এই পরিস্থিতিতে, আপনার সম্পর্ক একটি ঝুঁকির মধ্য়ে রয়েছে। পরিবার নিজের ঐতিহ্যকে ত্যাগ করতে চাইছে না। রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও দুই পরিবারের মধ্য়ে আত্ময়ীতা রয়েছে। প্রত্যেক পরিবারেই নানারকম চিন্তাভাবনা থাকে। নিজেদের সম্মান, ঐতিহ্যকে অনেক বেশি গুরুত্ব দেয় তাঁরা। ভারতে এই ছবি কিন্তু খুবই সাধারণ। তাই আপনার পরিস্থিতি কিন্তু বেশ কঠিন।

সবার সঙ্গে আলোচনা করুন

যেহেতু দুই পরিবারের মধ্য়ে একটি ভালো সম্পর্ক আছে, তাই আপনি একটি মিটিং ডাকতে পারেন। দুই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একসঙ্গে কথা বলতে পারেন। সেই মিটিংয়েই নিজের ইচ্ছের কথা জানাতে পারেন। বিয়ের প্রস্তাব দিতে পারেন। এই কথা ঠিক যে, একই সময়ে সবার সঙ্গে কথা বলা বেশ কঠিন কাজ। কিন্তু তা আপনাকে করতেই হবে। আপনাদের দুজনকেই মানসিক ভাবে শক্ত থাকতে হবে।

পরিবারের সদস্যদের পাশে নিয়েই একে অপরকে সাপোর্ট করতে হবে। যদি সবার সঙ্গে একই সময়ে কথা বলতে না পারেন, প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলুন। এক একজনের সঙ্গে কথা বলে নিজের ইচ্ছের কথা জানান। এটাও বুঝিয়ে বলুন যে, আপনার ও আপনার প্রেমিকের মধ্যে কোনও রক্তের সম্পর্ক নেই।

এগুলো খেয়াল রাখুন

আপনার পরিবারের পরিস্থিতিও বুঝুন। তাঁদের বিচার করবেন না। তাঁদের সব কথা জানানোর পর একটু সময় দিন। তাঁদেরও স্পেস দিন এবং ভাবার সুযোগ দিন। সময় পেলে তাঁরাও হয়তো এই বিষয়টি নিয়ে ভাববেন। ভাবনার একটা জায়গা তৈরি হবে। প্রথমেই তাঁরা রাগ প্রকাশ করবেন। মতামত দেবেন। সেগুলো ঠান্ডা মাথায় শুনুন। তারপর নিজের কথা জানান।

একে অপরের প্রতি বিশ্বাস আছে?

নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন। নিজের কাছে স্পষ্ট থাকুন। কারও মতামত যেন আপনার চিন্তাভাবনায় কোনও পরিবর্তন করতে না পারে। আপনারা দুজনে যা চান, তাতেই বিশ্বাস করুন। ভরসা রাখুন। যেন কোনও কঠিন পরিস্থিতি আপনাদের আলাদা করে না দিতে পারে। দুজনে বসে আলোচনা করুন। কী কী খারাপ পরিস্থিতি আসতে পারে, তা আগে থেকেই মাথায় রাখুন।

দুজনে দুজনকে এই প্রমিস করুন যে, যে কোনও খারাপ পরিস্থিতি এলেও একে অপরের পাশে আপনারা থাকবেন। সিদ্ধান্তের দায়িত্ব নেবেন দুজনেই। নিজের সিদ্ধান্তে বিশ্বাস রাখুন। কথা বলুন ও ভালো থাকুন।

Exit mobile version