হক গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলোচিত ব্যবসায়ী আদম তমিজী হককে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশের একটি টিম।
ডিবিতে নেওয়ার সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি অনেক খুশি হয়েছি। আমাকে অনেক সম্মান দিয়ে ডিবিতে আনা হয়েছে। আই অ্যাম হ্যাপি।’
ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে দায়ের করা মামলায় আদালত থেকে জারি করা পরোয়ানার ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবি পুলিশপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডিবি কর্মকর্তা বলেন, ‘তার সঙ্গে তো কারও কোনো শত্রুতা নেই। হঠাৎ করে তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসে বলা শুরু করলেন, তার মা হাফ ইসরায়েল। ইসরায়েল সরকারকে তিনি আহ্বান করলেন তাকে উদ্ধারের জন্য। বাংলাদেশ সরকার যদি গ্রেপ্তারই করত, তাহলে তো তিনি যখন বিমানবন্দর দিয়ে এলেন তখনই গ্রেপ্তার করা হতো। আবার তিনি তার বাংলাদেশি পাসপোর্ট আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখাচ্ছেন। এটি দেশের বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র। পাসপোর্ট পুড়িয়ে কেন তিনি আনন্দ-উল্লাস করেছেন, সেসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
ডিবি হারুন বলেন, ‘তমিজি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে থাকলে চিকিৎসার জন্য রিহ্যাবে পাঠানো হবে। সুস্থ করে এনে তাকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তিনি যা করেছেন, তা সুস্থ মস্তিষ্কে করলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এর আগে আদম তমিজী হককে গ্রেপ্তার করতে গত ১৭ নভেম্বর র্যাবের একটি টিম গুলশান-২ নম্বরে ১১১ নম্বর রোডে তার চারতলা বাড়ি ঘিরে ফেলে। কিন্তু তিনি বাড়ির দরজা বন্ধ করে দিয়ে র্যাবের কাছে আত্মহত্যার হুমকি দেন। এরপরই র্যাবের টিম তাকে গ্রেপ্তার না করেই ফিরে যায়।
তমিজি কখনও দেশে, কখনও থাকেন বিদেশে। তবে ব্রিটিশ পাসপোর্ট নিয়ে দেশে ফেরার পর গুলশানের বাড়িতে বাস করছেন তিনি।
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে ফের আলোচনায় আসেন তিনি। গত ১৮ সেপ্টেম্বর মক্কা থেকে ফেসবুক লাইভে এসে আওয়ামী লীগের তীব্র সমালোচনা করেন তমিজি হক। তিনি ফেসবুক লাইভে আওয়ামী লীগের এক নেতার বিরুদ্ধে গাজীপুরে তার জমি দখলের চেষ্টার অভিযোগ করেন।
আদম তমিজী হক ঢাকা মহানগর উত্তর তাঁতী লীগের প্রধান উপদেষ্টা এবং ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ছিলেন। পরে সরকারবিরোধী কার্যকলাপ এবং দলীয় শিষ্টাচারবহির্ভূত কাজ করার দায়ে আওয়ামী লীগ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়।