সবার জীবনেই ভালোবাসা আসে কেউ সেটা প্রকাশ করে আবার কেউ সেটা প্রকাশ করে না,তফাৎ শুধু এটুকুই। কাউকে ভালোবাসার ক্ষেত্রে প্রথম ধাপ হলো মানুষটাকে আগে পছন্দ করা। তুমি কাউকে পছন্দ করতেই পারো, কিন্তু সে তোমাকে পছন্দ করে কিনা সেটা আগে বুঝতে হবে। এটাই কিন্তু আজকের মূল বিষয়।।
দেরী না করে দেখে নাও কয়েকটি লক্ষণ সে আপনাকে মনে মনে পছন্দ করে কিনা। আর যদি মিলে যায় তাহলে তো কোনো কথাই নেই।
এই ১১ টি লক্ষণ দেখে বুঝতে পারবেন সে তোমাকে মনে মনে পছন্দ করে :
যত্ন নেওয়া :-
যত্ন শব্দটা ছোট হলেও বেশ কিন্তু অর্থবহ। একটি স্বচ্ছ কাঁচের গ্লাসকে যত্ন না নিলে সে কিন্তু অল্পদিনেই ঘোলাটে হয়ে যায়। ঠিক যেকোনো সম্পর্ক তৈরির জন্য বা সম্পর্ককে পরবর্তীতে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যত্ন নেওয়া বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যত্ন যেকোনো ছোটোখাটো বিষয়তেও হতে পারে, যেমন ধরো, শরীর খারাপের খবর পেয়ে ঘনঘন খোঁজ নেওয়া কিংবা বৃষ্টিতে ছাতা নিয়েছো কিনা; এই সকলই যত্নের একেকটা অঙ্গ।
এবার বোঝার চেষ্টা করো তোমার বিপরীত মানুষটা তোমার যত্ন নিচ্ছে কিনা।
গুরুত্ব দিয়ে কথা শোনা :-
যে মানুষটা তোমাকে পছন্দ করবে,সেই মানুষটাকে তোমার প্রতিটা কথা ভীষণ ভাবে প্রভাবিত করবে। তুমি যা কিছুই বলোনা কেন তোমার প্রতিটা কথাই সে খুব আগ্ৰহ নিয়েই শুনবে। তোমাকে এখন শুধু একটু খেয়াল করে দেখে নিতে হবে তোমার উল্টোদিকের মানুষটা তোমার কথা কীভাবে শুনছে উৎসাহিত হয়ে নাকি অনুৎসাহিত হয়ে!
তবে এই সময় চোখ কিন্তু ভীষন গুরুত্বপূর্ণ। কথা শোনার সময়ে তার চোখ তোমার দিকে নাকি অন্য দিকে এটাও ভালো করে বুঝে নিতে হবে। কারণ আমরা যাকে খুব পছন্দ করি তার যেকোনো কথাতেই তীব্র মনোযোগী হয়ে যাই। আর যাকে পছন্দ করিনা তার কথা মন দিয়ে শুনিনা আর তার দিকে অপলক ভাবে কখনোই তাকিয়েও থাকিনা।
সব কিছু মনখুলে শেয়ার করা:-
আমাদের জীবনে ছোটো বড়ো যাই ঘটুক না কেন আমরা কিন্তু বিশেষ কোনো মানুষের সাথেই মনখুলে সব শেয়ার করি। আমরা তার সাথেই শেয়ার করি যাকে আমরা পছন্দ করি বা যাকে আমাদের সব বলতে ভালো লাগে। আর বলতে ভালো লাগে মানেই তাকে আমরা ভরসা করি।
আর এটা যদি মিলে যায় তার মানে বুঝতে হবে তোমার বিপরীত মানুষটা তোমাকে ভরসার জায়গা হিসেবে মেনে নিয়েছে।
যেমন ধরো, আজকে সারাদিন সে কি করেছে বা সারাদিনের ভালোলাগা বা মন্দলাগার বিষয় গুলো তোমার সাথে শেয়ার করছে, তখন তোমাকে বুঝে নিতে হবে তোমার বিপরীত মানুষটা তোমাকে অবশ্যই গুরুত্ব দিচ্ছে।
বিশ্বাস করা:-
যেকোনো সম্পর্ক তৈরির জন্য সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো এই বিশ্বাস নামক শব্দটা। তোমার যদি তোমার বিপরীত মানুষটার প্রতি বিশ্বাসই না থাকে তাহলে কোনোদিন কোনো সম্পর্ক এগোবেই না।
এবার তোমাকে বুঝে নিতে হবে তোমার উল্টোদিকের মানুষটা তোমাকে বিশ্বাস করছে কিনা। বিশ্বাস যেকোনো রকমের হতেই পারে। যেমন ধরো তোমার উল্টোদিকের মানুষটা তোমাকে তার জীবনের কিছু কিছু কথা বিশ্বাস করে বলতে শুরু করেছে, যেগুলো হয়তো সে আগে অন্য কাউকে এতো অনায়াসে বলেনি।
যদি মিলে যায় তাহলে সে তোমাকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছে।
এক সাথে সময় অতিবাহিত করতে পছন্দ করা:-
তুমি যদি অনুভব করো তোমার বিপরীত মানুষটা তোমার সাথে সময় কাটাতে পছন্দ করছে কিনা তাহলেই তুমি বুঝবে সে তুমি মানুষটাকে কতটা পছন্দ করছে।
আর বিপরীত মানুষটা যদি তোমাকে পছন্দ করে তাহলে তাকে তুমি বাইরে ঘুরতে নিয়ে যাবার কথা বললে যে দুইবার ভাববে না, অনায়াসে রাজি হয়ে যাবে।
কারুর সঙ্গে মিশতে দেখলে অপছন্দ করা :-
তুমি তোমার বিপরীত লিঙ্গের কারুর সাথে তোমাকে কথা বলতে দেখলে তোমার উল্টোদিকের মানুষটার হিংসা হবে। এই হিংসাটির ক্ষেত্রে নারী বা পুরুষ দুই ই কিন্তু সমান সমান।
তুমি বুঝতে পারো তোমার বিপরীত মানুষটা তোমাকে অন্য কারুর সাথে মিশতে দেখলে হিংসা করে, তাহলে বুঝে নিতে হবে তোমাকে সে পছন্দ করে।
প্রশংসা করা:-
যাকে আমাদের ভালো লাগে তার সব ভালো লাগে। বিপরীত মানুষটা যখন তোমাকে পছন্দ করতে শুরু করবে, তখন তোমার প্রতিটা অভ্যেস, প্রতিটা আচরণ সেই মানুষটার ভালো লাগবে। আর এই বিষয়গুলি নিয়ে তোমাকে প্রশংসা করা শুরু করবে।
বিপরীত মানুষটা যখন এই আচরণটা শুরু করবে তখন তোমাকে বুঝতে হবে তার তোমার প্রতি ভালোলাগা শুরু হয়েছে। আমাদের তাকেই ভালো লাগে , যাকে আমরা পছন্দ করি।আমরা কিন্তু অপছন্দের লোকের প্রশংসা করিনা।
অপেক্ষা করা:-
ফোন বা মেসেজের জন্য অপেক্ষা এটাও কিন্তু পছন্দ করে কিনা বোঝার অন্যতম দিক। আমরা যখন প্রিয় বা পছন্দের মানুষের সাথে সময় কাটাই,ওই সময় গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয় আমাদের কাছে। আমরা তখন মাঝে মধ্যে বলেও ফেলি এই সময়টা আমাদের জীবনের অনেক মূল্যবান সময় বা ইত্যাদি।আমরা তখন তার অবর্তমানে এই সময় ভীষণ মিস করতে থাকি।
ঠিক তেমন বিপরীত মানুষটার সকালের ফোন কলটি তুমি রিসিভ করোনি,সে আবার পরে ফোন করছে কিনা তোমার সাথে কথা বলার জন্য। অথবা তোমার ফোনের জন্য সে অপেক্ষারত কিনা এটাও কিন্তু তোমাকে বুঝে নিতে হবে।
কখনো তার ফোন না রিসিভ করলে পরবর্তী সময়ে কথা হবার পর সে তোমাকে শেয়ার করছে কিনা তুমি কেন ফোন তোলোনি বা তোমার ফোনের জন্য সে অপেক্ষা করছিল , অপেক্ষার এই দিক গুলো ভালো করে যাচাই করে নিতে হবে।আর যদি সে তোমার ফোনের বা মেসেজের অপেক্ষা করে তাহলে বুঝে নিও সে তোমাকে খুব পছন্দ করে।
তোমাকে গভীর ভাবে জানতে চাওয়া:-
আমরা যখন কাউকে পছন্দ করি, তখন আমরা মানুষটাকে ভিতর থেকে জানতে চাই। বিপরীত মানুষটার ছোটোবেলা কেমন ছিল,তার সমস্ত অভ্যেস তার খুঁটিনাটি সবকিছুই। মানুষটা অবসর কীভাবে কাটায় বা তার বাড়িতে কে কে আছে ইত্যাদি। তবে এগুলো কিন্তু আমরা যার যার বিষয়ে এই আগ্ৰহ দেখাই না। আমরা যাকে পছন্দ করি তার বিষয়েই তুমুল আগ্ৰহী হই।
ঠিক তেমনি তোমার বিপরীত মানুষটা যখন তোমাকে গভীর ভাবে জানতে চাইবে বা জানার চেষ্টা করবে বিভিন্ন ভাবে, তখন বুঝতে হবে সে তোমাকে পছন্দ করে।
পছন্দ অপছন্দকে প্রাধান্য দেওয়া:-
যে মানুষটা তোমাকে পছন্দ করবে সে তোমার পছন্দ বা অপছন্দকে অবশ্যই প্রাধান্য দেবে। তুমি কি পোশাক পছন্দ করো বা কি রং তোমার ভালো লাগে বা তুমি কি খেতে ভালোবাসো এই বিষয়গুলিকে দৈনন্দিন জীবনে প্রাধান্য দেওয়া শুরু করবে। যেমন ধরো তোমার পছন্দের রং হলুদ;সে যখন তোমার সামনে আসবে সে ওই হলুদ রঙের পোশাক পড়ে আসবে। এছাড়াও কোথাও খেতে গিয়ে যখন তোমার পছন্দের খাবারগুলো সে অর্ডার করবে, তখন তোমাকে বুঝে নিতে হবে সে তোমাকে মনে মনে পছন্দ করে ।
সাহায্য করার মনোভাব:-
তোমার বিপরীত দিকের মানুষটি তোমাকে সর্বদা সাহায্য করার অঙ্গীকার করে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখা খুবই জরুরি। আমরা যখন কাউকে পছন্দ করতে শুরু করি তখন আমরা তাদেরকে কোনো ধরনের সমস্যার মধ্যে দেখতে চাইনা।তাই আমরা সবসময় তাকে বলি যেকোনো সমস্যা দ্বিধাহীন ভাবে বলার জন্য।
এখন তুমি যদি বুঝতে পারো তোমার বিপরীত মানুষটা তোমার উদ্দেশ্যে সাহায্যের হাত সর্বদা বাড়িয়ে দিয়েছে তাহলে বুঝে নিও সে তোমাকে খুবই পছন্দ করে।