তুরস্কের বরেণ্য বুদ্ধিজীবী আহমেত জোসকুনাইদিনের নাগরিক সংবর্ধনা

‘বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষতা শুধু বাংলাদেশেই নয় বহির্বিশ্বের জন্যও সমান প্রয়োজন’

 

‘বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষতা শুধু বাংলাদেশেই নয় বহির্বিশ্বের জন্যও সমান প্রয়োজন’

 

আজ ৬ এপ্রিল ২০২২, বিকেল ৫টায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি রাজশাহী, বাংলাদেশ-এর আয়োজনে তুরস্কের বরেণ্য লেখক, সাংবাদিক, গবেষক আহমেত জোসকুনাইদিনকে রাস কনভেশন সেন্টার, রাজশাহীতে এক নাগরিক সংবর্ধনা দেয়া হয়। বরেণ্য এ তুরস্কের নাগরিক সর্বাধিক সংখ্যক বিষয়ে ¯œাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের জন্য তিনি গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডধারী। তিনি এখন পর্যন্ত ৭০টিরও বেশি দেশ ভ্রমণ করেছেন। বর্তমানে তিনি ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক বিষয়ে গবেষণা করছেন।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক ড. সুজিত সরকার-এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির মাননীয় উপাচার্য ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল খালেক। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও হেরিটেজ আর্কাইভ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ড. মো. মাহবুবর রহমান, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ-এর সাবেক সাধারণ সম্পাদক জনাব মো. আসাদুজ্জামান, কবিফুঞ্জের সাধারণ সম্পাদক জনাব কবি এএমএন আরিফুল হক কুমার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নির্মূল কমিটির নেতা তামিম সিরাজী

অনুষ্ঠানে স্বাগত শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন নির্মূল কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ কামরুজ্জামান এবং নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সাইফ রায়হান।

সভায় উপস্থিত সকলকে অগ্রিম বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে আহমেত জোসকুনাইদিন বলেন, ‘গত সাতদিনের ভ্রমণে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশকে অপ্রতিরোধ্যভাবে এগিয়ে যেতে দেখেছি। প্রায় ৫৫০ কি.মি. ভ্রমণের পরও আমার ভ্রমণ তৃষ্ণা মেটেনি। বঙ্গবন্ধু যে অর্থনৈতিক মুক্তির কথা বলেছিলেন তার লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ বহুদূর এগিয়েছে, কিন্তু বঙ্গবন্ধুর চেতনা বাস্তবায়ন এখনো পিছিয়ে। বঙ্গবন্ধু ও মহান মুক্তিযোদ্ধারা বাংলাদেশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন যেখানে ধর্ম-বর্ণ-জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সমান অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে জীবনযাপন করতে পারবে। বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষতা শুধু বাংলাদেশেই নয় বহির্বিশ্বের জন্যও সমান প্রয়োজন। আজ সমগ্র বিশ্বে জাতি-ধর্ম-মতবাদ নিয়ে যে হানাহানি চলছে তা বঙ্গবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষকতার মাধ্যমে নিরসন করা সম্ভব।’

তিনি বাংলাদেশে ও তুরস্কের জনগণের মধ্যে সাংস্কৃতিক সম্পর্কের মিলবন্ধন সৃষ্টি করার আগ্রহ প্রকাশ করে আরও বলেন, ‘তুরস্ক-বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সুসম্পর্ক বজায় রেখে দু’দেশের জনগণের মধ্যেও দ্বিপাক্ষিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক তৈরি করতে হবে।’

নির্মূল কমিটির নেতা সাইফ রায়হান বলেন, ‘দু’দেশের জনগণের মধ্যে যে সম্পর্কের সূচনা আজ হলো তার উত্তরাত্তর সমৃদ্ধি কামনা করি।’

দুদেশের জনগণের মাঝে সুসম্পর্ক জোরদার করার আহŸান জানিয়ে নির্মূল কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ কামরুজ্জামান বলেন, ‘আজ আহমেত জোসকুনাইদিনকে নাগরিক সংবর্ধনা দেয়ার মাধ্যমে দুদেশের জনগণের মধ্যে যে সম্পর্কোত্তর সূচনা হলো তা আগামী দিনে উত্তরাত্তর সমৃদ্ধ হবে।’

ঐতিহাসিকভাবে বাংলাদেশ ও তুরস্কের জনগণ সম্পকৃত উল্লেখ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও হেরিটেজ আর্কাইভ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবর রহমান বলেন, ‘এদিনটি ইতিহাসের পাতায় উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। আজ তুরস্ক-বাংলাদেশের জনগণের সম্পর্কের নবদিগন্ত সূচিত হলো।’

বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্কের বিভিন্ন দিক উল্লেখ করে নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটির মাননীয় উপাচার্য ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল খালেক বলেন, ‘তুরস্কের কামাল আতাতুর্ক যেমনিভাবে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন তেমনি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। আমরা দুদেশের জনগণ পুনরায় একত্রে বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িকভাবে গড়ে তুলব।’

কবিকুঞ্জের সাধারণ সম্পাদক জনাব কবি এএমএন আরিফুল হক কুমার বলেন, নির্মূল কমিটিকে এমন অসাধারণ উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে দুদেশের জনগণের সম্পর্কের সমৃদ্ধি কামনা করে তার বক্তব্য শেষ করেন।

Exit mobile version