বাজেটে তামাক কর প্রস্তাব : তামাক কোম্পানির লাভ বাড়বে, সরকার ও জনস্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে

২০২২-২৩ অর্থ-বছরের জন্য প্রস্তাবিত

এইড ফাউন্ডেশনের বাজেট প্রতিক্রিয়া

 

 

২০২২-২৩ অর্থ-বছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের কর কাঠামো তামাক ব্যবহার কমাতে কোনো ধরনের ভূমিকা রাখবে না। বরং এ কর ব্যবস্থা তামাক কোম্পানিকে নতুন ধূমপায়ী সৃষ্টি এবং পুরনো ধূমপায়ীকে উৎসাহী করতে সহযোগিতা করবে; সুনির্দিষ্ট কর আরোপ না করে মূল্যের ওপর শতাংশ হারে করারোপ পদ্ধতি অব্যাহত রাখায় কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ থেকে যাবে এবং এতে অনাকাংখিতভাবে তামাক কোম্পানী বিপুল পরিমাণ অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করবে। জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেসনে মাননীয় অর্থমন্ত্রী ঘোষিত বাজেট প্রস্তাবে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ও কর প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় এইড ফাউন্ডেশন এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে।

 

তামাকজাত দ্রব্যের ওপর প্রস্তাবিত মূল্য ও কর প্রস্তাব হতাশাজনক উল্লেখ করে প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, বাংলাদেশে প্রায় ৭২ ভাগ মানুষ নিম্নস্তরের সিগারেট সেবন করে। অথচ এই স্তরের করহার না বাড়িয়ে নামমাত্র মূল্য বৃদ্ধিতে দেশে ধূমপানের পরিমাণ বাড়বে এবং মানুষের ক্রয় স্বামর্থ বৃদ্ধি এবং মূল্য স্ফীতির তুলনায় সিগারেট সহজলভ্য হওয়ায় কিশোর-তরুণরা ধূমপান শুরু করতে উৎসাহিত হবে। একইসাথে জর্দা, গুল ও বিড়ির মূল্য পূর্বাবস্থায় বহাল থাকায় এগুলোর ব্যবহারকারীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক হুমকি বয়ে আনবে, তামাক ব্যবহারজনিত অসুস্থ্যতা ও মৃত্যু মারাত্বক আকার ধারণ করবে। একইসাথে সুনির্দিষ্ট করারোপ পদ্ধতির প্রবর্তন না করায় সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাবে। বিপরীতে তামাক কোম্পানি ধারাবাহিকভাবে লাভবান হবার পাশাপাশি তাদের মুনাফা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে।

 

জর্দা, গুল ও বিড়ির মূল্য বহাল রাখা এবং নিম্ন স্তরের সিগারেটের মূল্য আশানুরূপ বৃদ্ধি না করায় বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যঝুঁকি ভয়াবহভাবে বেড়ে যাবে। একইসঙ্গে তাদের তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হারও বাড়বে। তামাক ব্যবহারজনিত রোগ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার ফলে দেশ বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়বে।

 

দেশে সিগারেটের অধিকাংশই বিক্রি হয় খুচরা শলাকা হিসাবে। সিগারেটের ১০ শলাকার মূল্য প্রিমিয়াম স্তরে ৭ টাকা, উচ্চস্তরে ৯ টাকা, মধ্যম স্তরে মাত্র ২ টাকা এবং নিম্নস্তরে মাত্র ১ টাকা বৃদ্ধিতে খুচরা শলাকার দামে তেমন কোন পরিবর্তন আসবে না। এতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া নিম্নস্তরের প্রতি শলাকার দাম বাড়বে মাত্র ১০ পয়সা বা ২.৫৬% এবং মধ্যমস্তরে ২০ পয়সা বা মাত্র ৩.১৭%। উচ্চ ও প্রিমিয়াম স্তরের ভোক্তারা অবস্থাপন্ন শ্রেণীর হওয়ায় এই স্তরে সামান্য মূল্য বৃদ্ধি ব্যবহার কমাতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে না।

 

যেখানে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব মতে গত এক বছরে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় প্রায় ৯% বৃদ্ধি পেয়েছে, সেই তুলনায় সিগারেটের সামান্য মূল্য বৃদ্ধি এবং জর্দা, গুল ও বিড়ির মূল্য বহাল রাখা তামাকজাত দব্যকে আরো সস্তা করেছে। এর ফল স্বরূপ তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনের লক্ষ্যও বাধাগ্রস্ত হবে।

 

সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সিগারেট বিক্রির কারণে সরকার চলতি অর্থবছরে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব হারিয়েছে। প্রায় প্রতিবছরই তামাক কোম্পানি

Exit mobile version