লোকমুখে শুনে, আন্দাজে কোন ধারনা করবেন না। বিশ্বের ইতিহাসে কেউ কোনদিন বিজ্ঞান পড়ে নাস্তিক হয়নি। যে নাস্তিক হয়, সে এমনিতেই নাস্তিক। বিজ্ঞান পড়ুক বা না পড়ুক ; সে এমনিতেই নাস্তিক। কারো নাস্তিক হবার সাথে বিজ্ঞান পড়ার কোন সম্পর্ক নেই। অনেকের ধারনা, নাস্তিকতা এক ধরনের অনুধাবন। বিজ্ঞান পড়তে পড়তে একসময় কারো মনে হয় – ইশ্বর বলে কিছু নেই। এমন অনুধাবনের পরে একজন নাস্তিক হয়।
নাস্তিকতার ব্যাপারে মানুষের এই ধারনাটা সম্পুর্ন ভুল। নাস্তিকতা কোন অনুধাবন নয়। নাস্তিকতা হলো ইচ্ছা করে সৃষ্টিকর্তাকে অস্বীকার করা। নাস্তিকতা হলো একটা গভীর বিশ্বাস। মনে রাখবেন – নাস্তিকরা ইচ্ছা করেই অস্বীকার করে। ইচ্ছা করে সৃষ্টিকর্তা অস্বীকার করলেও, নাস্তিকরা বিজ্ঞানের অজুহাত দেয়।
নাস্তিকরা যে বিজ্ঞানের অজুহাত দেয়, সেটা বুঝতে বিজ্ঞান-মনস্ক লোকজন দেখুন। দেশের যত বিজ্ঞান-মনস্ক নাস্তিক আছে, তাদেরকে জিজ্ঞাসা করুন – কোন বিষয়ে লেখাপড়া করেছেন? উত্তরে জানবেন, তারা সাহিত্য, শিল্পকলা, চারুকলা, ইতিহাস, সমাজ-কল্যান, ইত্যাদি লেখাপড়া করেছে। যারা নিজেকে বিজ্ঞানমনস্ক দাবী করে, তাদের মধ্যে একজনও বিজ্ঞানে লেখাপড়া করেনি। বিজ্ঞান পড়ে বিজ্ঞান-মনস্ক হওয়া যায় না।
বিজ্ঞান পড়ে যে বিজ্ঞান-মনস্ক হওয়া যায় না, সেটা বুঝতে ছবির ওই দুইজনকে দেখুন। ডঃ জাফর ইকবাল নিজেকে নাস্তিক দাবী করেন না। তবে, তিনি বিভিন্নভাবে নাস্তিকদের সমর্থন করেন। তিনি কখনোই নিজেকে বিজ্ঞান-মনস্ক দাবী করেন নি। কারন, তিনি বিজ্ঞানের প্রফেসর। তিনি একজন বিজ্ঞান জানা লোক। বিজ্ঞান জানা লোক বিজ্ঞান-মনস্ক হয় না। তসলিমা নাসরিন একজন গর্বিত নাস্তিক। তিনি নিয়মিত ইসলামের বিরুদ্ধে বাজে কথা বলেন। তবে, তসলিমা নাসরিন কখনো নিজেকে বিজ্ঞান-মনস্ক দাবী করেন নি। কারন, তিনি ডাক্তার, বিজ্ঞান পড়া মানুষ। বিজ্ঞান পড়া মানুষ কখনো বিজ্ঞান -মনস্ক হয় না।
বিজ্ঞান পড়ে বিজ্ঞান মনস্ক হয় না। বিজ্ঞান পড়ে কেউ নাস্তিক হয় না। যেসব বিজ্ঞান জানা মানুষ নাস্তিক হয়েছে, তারা ইচ্ছা করেই স্রিস্টিকর্তাকে অস্বীকার করে। ওই অস্বীকার করার পেছনে বিজ্ঞানের কোন ভুমিকা নেই।
প্রশ্নের দ্বিতীয় অংশ – নাস্তিকদের ব্যাপারে ইসলামে কি বলা আছে।
কোরআনের ভুমিকা হলো সুরা ফাতিহা। ফাতিহা কথাটির অর্থ প্রারম্ভিকা (শুরু)। পরবর্তি সুরা বাকারা থেকেই কোরআনের মুল আলোচনা শুরু হয়েছে। সুরা বাকারার ৬-৭ নম্বর লাইনঃ
- নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে, তুমি তাদেরকে সতর্ক কর কিংবা না কর, উভয়ই তাদের জন্য বরাবর, তারা ঈমান আনবে না (সুরা বাকারা -৬)। আল্লাহ তাদের অন্তর ও কানের উপর মোহর করে দিয়েছেন, আর তাদের চোখে আছে আবরণ আর তাদের জন্য আছে মহা শাস্তি (সুরা বাকারা – ৭)।
উপরের কথাগুলো কোরআনের প্রথম পৃষ্ঠায় ৬ ও ৭ নম্বর লাইন। একেবারে প্রথম পৃষ্ঠায় ওদের কথা লেখা আছে। ওরা কারা? যারা সতর্কতার পরেও অস্বীকার করবে। যাদের চোখ, কান, অন্তর সবই বন্ধ হয়ে আছে। হ্যাঁ, ওরা হলো সেই নাস্তিক যারা ইচ্ছা করে অস্বীকার করে, বিজ্ঞানের অজুহাত দেয়। কোরআনের প্রথম পৃষ্ঠাতেই ওদের কথা বলা আছে। সেই সাথে এটাও বলা আছে – তাদের জন্য আছে মহা শাস্তি।