মিরসরাইয়ে বৃদ্ধাকে গলা কেটে খুন, নগদ টাকা স্বর্ণালংকার লুট; আটক ১

মিরসরাই প্রতিনিধি
মিরসরাইয়ে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করতে সাজেদা আক্তার (৫৮) নামে নারীকে হাত পা বেঁধে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে উপজেলার মিরসরাই পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের বন্ধন ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি ভাড়া বাসায় এই হত্যার ঘটনা ঘটে। পরে বিকেলে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই নারীর বড় ছেলের স্ত্রীর ভাই তারিফুল ইসলামকে (৩০) আটক করেছে। সে মিরসরাই সদর ইউনিয়নের পাত্তার পুকুর এলাকার দ্বীন মোহাম্মদের পুত্র। সাজেদা আক্তার মিরসরাই উপজেলার ১০ নং মিঠানালা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের মলিয়াইশ গ্রামের লাল মোহম্মদ চৌধুরী বাড়ীর এম মামুন চৌধুরী প্রকাশ খান সাহেবের স্ত্রী। তারা বন্ধন ভবনের দ্বিতীয় তলার বি-১ ফ্ল্যাটে প্রায় ৫ বছর যাবৎ ভাড়ায় থাকতেন।

নিহতের স্বামী এম মামুন চৌধুরী জানান, সকালে আমার ছোট ছেলে আমজাদ হোসেন ও তার খালাত ভাই রাকিব আমার গ্রামের বাড়ীতে নির্মাণাধীন নতুন ঘর দেখতে যায়। পরবর্তীতে আমি বাজার করার জন্য মিরসরাই পৌর বাজারে যাই। এসময় বাসায় আমার স্ত্রী ও তার পরিচিত এক মহিলা ছিলেন। আমি বাজার করে নিয়ে বাসায় এসে সামনের কক্ষে রেখে আমার রুমে রেস্ট করতে যাই। রুম থেকে বের হয়ে স্ত্রীর কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে তার কক্ষে গিয়ে দেখি মেঝেতে দুই হাত ও দুই পা প্লাস্টিক দিয়ে বাঁধা অবস্থায় তার গলাকাটা লাশ পড়ে আছে। এসময় আমি ঘর থেকে বের হতে চাইলে দেখি বাসার সামনে দিয়ে দরজা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে বাসার ভেতর থেকে আমি চিৎকার করলে বাসার কেয়াটেকার রুজিনা আক্তার রুমা দরজার লক খুলে দেন।

বাসার কেয়ারটেকার রুজিনা আক্তার রুমা বলেন, দুপুর ২ টার সময় বি-১ ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে আওয়াজ শুনে আমি সামনে দিয়ে লাগানো হুক টেনে দরজা খুলে দিই। এসময় দেখি দরজার পেছনে খান সাহেব দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি প্রচুর ঘামাচ্ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি বলেন, কারা যেন তার স্ত্রীকে জবাই করে দিয়েছে। আমি বিষয়টি তাৎক্ষণিক ভবন মালিক ও অন্যান্য ভাড়াটিয়াদের জানাই।

নিহতের ভাগিনা হাজী আব্দুল মতিন বলেন, বাসায় শুধু মামা আর মামি থাকতেন। মামাতো ভাই বিয়ে করার জন্য গত ৮ জুলাই দেশে আসেন। মামির হাত পা বাঁধা গলাকাটা লাশ দেখে ২ বার স্ট্রোক করা আমার মামা ও মামাতো ভাই আমজাদ হোসেন অসুস্থ হয়ে গেছেন। বাসার আলমারি ভেঙ্গে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা ও ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, সামান্য স্বর্ণালংকার ও টাকার লোভে এভাবে একটা মানুষকে খুন করতে হবে? ভাবতে অবাক লাগে।

মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ সহিদুল ইসলাম বলেন, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সাজেদা আক্তারের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই মহিলার বড় ছেলের স্ত্রীর ভাইকে জোরারগঞ্জ এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। এসময় একটি ব্যাগে থাকা রক্তমাখা জামাকাপড়, একটি চুরি ও লুট হওয়া ১০ ভরি স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যাকান্ডে আরো কেউ জড়িত রয়েছে কিনা জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। হত্যার ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

Exit mobile version