রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধি: দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ওজন করে কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয়। হাটের ঝামেলা এড়াতে এবং স্টেরয়েড মুক্ত পশু ক্রয় করেতে ক্রেতারা ভিড় করছে ওজনে বিক্রয় করা হচ্ছে এমন গরুর ফার্মে। রংপুর মহানগরীর মাহিগঞ্জের দেওয়ানটুলি এলাকায় জমজম ক্যাটল ফার্ম নামে একটি গরুর খামারে ওজনে ক্রয়-বিক্রয় করা হচ্ছে কোরবানির পশু। ৪৫০ টাকা কেজি দরে খামারেই বিক্রয় করা হচ্ছে গরু। গত দুই বছর ধরে এ পদ্ধতিতে গরু বিক্রয় করা হচ্ছে এ খামারে। জানা যায়, প্রায় প্রতিদিনই খামারে আগ্রহী ক্রেতারা আসছে এবং গরু দেখে পছন্দ হলে ওজন স্কেলে উঠিয়ে পরিমাণ করে খামারেই গরু রেখে যাচ্ছেন। ঈদুল আজহার এক দিন বা দুই দিন আগে গরু নিয়ে যাবেন ক্রেতাগণ। কোরবানির ঈদের জন্য ১২০টি গুরু প্রস্তুত করা হয়েছে এ খামারে। ওজনে গরু ক্রয়-বিক্রয় ক্রেতাদের মধ্যে বেশ সাড়া পড়েছে। ক্রেতারা ঝামেলা মুক্ত গরু ক্রয় করতে ছুটছেন এমন খামারে। ক্রেতারা বলেন, ওজন স্কেলে গরু ক্রয়-বিক্রয়ের সুবিধা অনেক। ওজন স্কেলে গরু পরিমাপ ক্রয়-বিক্রয় করার কারণে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের ঠকার সুযোগ কম। বাজেট অনুযায়ী পশু ক্রয় করতে পারছে তারা। জমজম ক্যাটল ফার্মে গরু ক্রয় করতে আব্দুস সামাদ মন্ডল বলেন, বেশ কিছু হাটে দেথেছি। এখনও পছন্দসই গরু ক্রয় করতে পারিনি। এ কারণে খামারে এসেছি। ওজনে করে পছন্দমতো গরু ক্রয়-বিক্রয় করার পদ্ধতিটি ভালো লেগেছে। তিনি আরও বলেন, আমার উদ্দেশ্য এবং নিয়ত স¤পর্কে আল্লাহ সবকিছুই জানেন। কোরবানির উদ্দেশ্য থেকে গরু ক্রয় করতে এসেছি। যদি পছন্দ হয় ক্রয় করবো ইনশাআল্লাহ। খামারি বলেন, হাট থেকে গরু ক্রয় করতে গেলে ঝুঁকি থেকে যায়। কারণ, দূরদূরান্ত থেকে আসা গরুকে স্টেরয়েড বা মোটাতাজাকরণ ঔষধ খাওয়ানো হয়েছে কিনা এটা গরু দেখে বোঝার উপায় নেই। এই পদ্ধতিতে গরু ক্রয় করে কোরবানি করা যাবে কিনা এ নিয়ে অনেকের মনে নানাবিধ প্রশ্ন রয়েছে। যদিও খামার মালিকের দাবি তারা ইসলামী শরিয়াহ অনুসরণ করে গরু বিক্রয় করছে। জমজম ক্যাটল ফার্মের স্বত্বাধিকারী আব্দুল মতিন আজিজ বলেন, খামারে থাকা সব গরু শাহিওয়াল জাতের। এসবের জন্য ফিড ও নিয়মিত দেশি খাবারের পাশাপাশি পরিচর্যার কোনো কমতি নেই। একেকটার ওজন ও আকৃতি একেক রকম। গরুগুলো লালনপালন করে ঈদে বিক্রয় করার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে যেসব গরু বিক্রয় করা হয়েছে, সেগুলো তার খামারেই রয়েছে। এসব গরুর খাওয়া, দেখাশোনা এবং ঈদের আগে ক্রেতাদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার সব খরচ খামার থেকে ব্যয় করা হবে। কোনো গরুকে ইনজেকশন দিয়ে মোটাতাজা করা হয়নি। যারা গরু ক্রয় করেছেন তাদের গরুর শরীরে একটি নম্বর লেখা রয়েছে। যাতে সহজেই চেনা যায়। ইসলামী শরিয়ত সম্মত বিধি মেনে ওজনে মেপে গরু বিক্রয় করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে কোরবানির জন্য রংপুর বিভাগের আট জেলায় প্রায় ১৪ লক্ষ পশু প্রস্তুত করেছেন খামারি ও কৃষকগণ। ভালো দামের আশায় কোরবানির বাজার ধরার জন্য এসব পশু যত্ন সহকারে লালন-পালন করছেন তারা। ভারত থেকে গরু না এলেও এ অঞ্চলের চাহিদা পূরণ করে পশু অন্য এলাকায় সরবরাহ করা যাবে। রংপুর প্রাণিস¤পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কোরবানির পশু বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে রংপুর বিভাগের আট জেলায় দেড় লাখের বেশি খামারি প্রায় পাঁচ লক্ষ গরু বাণিজ্যিকভাবে বিক্রয়ের জন্য প্রস্তুত করেছেন। এছাড়া দুই লক্ষ গৃহস্থ প্রায় ৯ লক্ষ গরু ও খাসি বাজারে বিক্রয়ের করার জন্য উপযুক্ত করেছেন। এর মধ্যে রংপুর জেলায় সবচেয়ে বেশি প্রায় ৩৩ হাজার খামারে দুই লক্ষের বেশি গরু রয়েছে। গত বছর কোরবানি উপলক্ষ্যে ১৩ লক্ষ গরু-খাসি প্রস্তুত থাকলেও চাহিদা মিটিয়ে আড়াই লক্ষের বেশি পশু ছিল। এবার ১৩ লক্ষ ৭০ হাজার গরু-খাসি কোরবানির উপযুক্ত রয়েছে। রংপুর বিভাগীয় প্রাণিস¤পদ কার্যালয়ের উপ পরিচালক আব্দুল হাই বলেন, এ অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে আরও প্রায় তিন লক্ষ পশু থাকবে।
লক্ষ্মীপুরে ১৬ জেলে আটক, ৪২ মণ জব্দ ইলিশ মাছ দেয়া হল এতিমখানায়
লক্ষ্মীপুর: কমলনগরে মেঘনা নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকারের দায়ে ১৬ জেলেকে আটক করা হয়েছে। এসময় তাদের থেকে সাড়ে ৪২...