আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার ও ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী বলেছেন, আপনাদের জন্যই আজ আমি নিক্সন চৌধুরী। আমাকে এই জায়গায় আনতে আপনারা অনেক কষ্ট করেছেন। আপনাদের কষ্টের ফসলই কিন্তু নিক্সন চৌধুরী। ২০১৪ সালে ২৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে আমাকে বিজয়ী করেছিলেন। ২০১৮ সালে ৫৩ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী করেছেন। আর এবার ইনশাল্লাহ এক লাখ ভোটের ব্যবধানে জয়যুক্ত করবেন আশা করি।বুধবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণপাড়া নিজ বাড়ির আঙিনায় নারী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী।
একই সমাবেশে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে রাজনীতির মাঠে নামলেন নিক্সন চৌধুরীর মেয়ে নাজুরা মুজিব চৌধুরী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৪ আসনে পিতার জন্য ভোটের মাঠে নেমেছেন তিনি।
মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, আজকে থেকে আমার মেয়ে নাজুরা মুজিব চৌধুরীর রাজনীতিতে অভিষেক হলো। আমরা মতো আমার মেয়েও সবসময় আপনাদের পাশে থাকবে। আজ তার রাজনীতির হাতেখড়ি হলো। আজকে এখান থেকেই তার রাজনৈতিক জীবন শুরু। ভোট চাইতে আপনাদের সাথে যাবে সে।
তিনি আরও বলেন, ওর জন্য সবাই দোয়া করবেন। নাজিরা দেশের বাইরে পড়ালেখা করছে, ও যেন ডাক্তার হয়ে এসে আপনাদের সেবা করতে পারে, সকলে ওর জন্য দোয়া করবেন। আমি এলাকায় যে হাসপাতাল বানাবো, সেই হাসপাতালে ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলার মানুষ বিনা পয়সায় চিকিৎসা নিতে পারবেন। ওই হাসপাতাল পরিচালনা করবে আমার মেয়ে।
নিক্সন চৌধুরী বলেন, এবার আরও একটা মজার জিনিস আছে। এই জিনিসটা স্বাধীনতার আগে-পরে কোনদিন হয়নি। বাংলাদেশের ইতিহাসে নেই। স্বতন্ত্র, তিন তিন বার নির্বাচিত, হ্যাটট্রিক। আরও একটা মজার জিনিস, সেটা হলো এক খেলায় দুই হ্যাটট্রিক। জয়ের হ্যাটট্রিক, পরাজয়ের হ্যাটট্রিক। ইনশা আল্লাহ জয়ের বাতাস বইছে।
তিনি বলেন, কিছু মোনাফেক আছে, এদের চরিত্র বের হয়ে আসছে। কিছু আমার দলের ভেতরে আছে। অনেক ছোটবেলা থেকে রাজনীতি করি। আব্বার হাত ধরে ধরে রাজনীতি শিখছি। চোখের দিকে তাকালে, যত অভিনয়ই করুক, যত নাটকই করুক- আমি বুঝে ফেলতে পারি।
নিক্সন বলেন, তারা আমার সাথে খেলে, আমি তাদের সাথে খেলি। আমার মুরব্বি কাজী জাফর উল্লাহ সাহেব কিছু মোনাফেক কিনছে, কিছু নিয়া গেছে, কিছু রাইখা গেছে। আমি চাচারে বলবো, চাচা আপনি আমার থেকে অনেক বয়স্ক মানুষ, আমি সালাম দিয়েই বলবো, যেখানে আপনি খেলা শেষ করেন, আমি নিক্সন চৌধুরী সেখান থেকে শুরু করি।
তিনি উপস্থিত নারীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা এগুলো নিয়ে চিন্তা করবেন না। দু’একটা দালাল-মোনাফেক, এই ভোটের জোয়ার আটকাতে পারবে না। আমাদের সাথে খেললে, আমরাও ভালো প্লেয়ার। ছাত্র রাজনীতি করছি, যুব রাজনীতি করছি, মামলা খাইছি, আকাশ থেকে টপকে পড়ি নাই। এই বয়সে রাজনৈতিক অনেক অভিজ্ঞতাই আছে। অতএব, মোনাফেকদের চোখের সাথে চোখ মিলাইলে, গা হাত পা নাড়াইলে বোঝা যায়- কোনটা মোনাফেক আর কোনটা না।
মজিবুর রহমান নিক্সন বলেন, এমন কোনও জায়গা নেই যেখানে নিক্সন চৌধুরীর উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। আমরা রাজনীতি করি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে, আমরা রাজনীতি করি গরিব-দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। এটাই আমাদের শিক্ষা। আমরা এমন রাজনীতি করি না যে, টাকা-পয়সা লুটপাট করে পানামার ব্যাংকে পাচার কইরা, ওই রাজনীতি আমরা করি না। তাই ওইসব দুর্নীতিবাজ, চোর, বাটপার, রাজাকারদের বিরুদ্ধে আগামীকাল থেকেই আপনারা গ্রামে-গঞ্জে ভোট চাইতে নামবেন।
তিনি বলেন, আপনারা গ্রামে নামবেন নিক্সন চৌধুরীকে এমপি বানানোর জন্য নয়, আপনারা গত ৪০ বছর যে কষ্ট করেছেন; সেই কষ্ট যেন আপনাদের সন্তানদের করতে না হয়। আপনার সন্তানেরা যেন অন্ধকারে বিদ্যুৎ ছাড়া না থাকে, আপনার সন্তানেরা যেন বর্ষাকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে কাদা মারাতে না হয়, সন্তানেরা যেন এমন স্কুলে না পড়ে, যে স্কুলের চাল দিয়ে পানি পড়ে। আপনার সন্তানরা যেন ভালো একটি জীবন পায়, এর জন্যই আপনাদের মাঠে নামতে হবে।
সমাবেশে সহস্রাধিক নানা বয়সী নারী অংশ নেন। এ সময় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন, ভাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম হাবিবুর রহমান, নিক্সন চৌধুরীর মেয়ে নাজিরা মুজিব চৌধুরীসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।