রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধি: অবশেষে দীর্ঘ চার বছর পর শুধু বহির্বিভাগ চালু হচ্ছে রংপুর বিশেষায়িত শিশু হাসপাতালে। চার বছর আগে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হস্তান্তর করলেও এখনো শুরু হয়নি চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম। রংপুরবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রায় দুই একর জমির ওপর অত্যাধুনিক শিশু হাসপাতালের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। চাহিদা অনুযায়ী জনবল নিয়োগ না হওয়ায় রংপুর বিভাগের দীর্ঘ প্রত্যাশার এই চিকিৎসালয়ে আপাতত বহির্বিভাগের কার্যক্রম চালুর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পূর্ণাঙ্গভাবে চালু না হলেও বহির্বিভাগের কার্যক্রম চালুর বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা এসেছে বলে জানিয়েছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ ইউনুস আলী। রমেক হাসপাতালের পরিচালক বলেন, গত ১৫ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নবনির্মিত ১০০ শয্যার শিশু হাসপাতালের কার্যক্রমের চালুর বিষয়ে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পেয়েছি। আপাতত বহির্বিভাগের কার্যক্রম চালু হবে। কার্যক্রম চালুর জন্য সর্বাত্নক চেষ্টা করা হচ্ছে। জানা যায়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব, হাসপাতাল ও ক্লিনিক সমূহ) ডা. আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারভিত্তিক প্রকল্প হিসেবে নবনির্মিত ১০০ শয্যাবিশিষ্ট শিশু হাসপাতাল চালুর জন্য বলা হয়েছে। শিশু হাসপাতালটিকে অস্থায়ীভাবে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্ধিত শিশু ওয়ার্ড অথবা শিশু বহির্বিভাগ হিসেবে চালুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শুধু বহির্বিভাগ নয়, ১০০ শয্যাবিশিষ্ট শিশু হাসপাতালের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চালুর দাবি জানিয়েছেন রংপুরের সচেতন মহল। হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে শিশুদের জটিল সার্জারিসহ সাধারণ সব রোগের চিকিৎসা স্বল্পমূল্যেই দেওয়া যাবে এবং ভোগান্তি কমে আসবে বলে মনে করেন সমাজ পরিবর্তন ও উন্নয়ন ফোরাম রংপুরের সংগঠক সাব্বির মোস্তফা পিয়াল। রংপুরের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, রংপুরের সাবেক সদর হাসপাতালের ১ দশমিক ৭৮ একর জমির মধ্যে শিশু হাসপাতাল নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০১৭ সালের ২১ নভেম্বর। ৩১ কোটি ৪৮ লক্ষ ৯২ হাজার ৮০৯ টাকা মূল্যের কাজটি করেছেন ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মল্লিক এন্টারপ্রাইজ ও মেসার্স অণিক ট্রেডিং কর্পোরেশন। ভবন নির্মাণের জন্য দুই বছরের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হলেও নির্ধারিত সময়ের আড়াই মাস আগে কাজ শেষ করে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে নতুন এই হাসপাতালটিতে বহির্বিভাগ চালুর উদ্যোগকে অনেকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে শিশু বিশেষজ্ঞদের দাবি, রমেক হাসপাতালে একটি মাত্র শিশু বিভাগ দিয়ে এ অঞ্চলের চিকিৎসা প্রত্যাশী সব শিশুকে সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ১০০ শয্যাবিশিষ্ট শিশু হাসপাতালটিতে পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হলে শিশুদের জটিল সার্জারি ও সাধারণ সব ধরনের রোগের চিকিৎসা স্বল্প খরচে দেওয়া যাবে। পাশাপাশি চিকিৎসার জন্য ঢাকা অথবা পাশের দেশে যাওয়ার প্রবণতাও কমে আসবে।