পৃথিবীতে এসে সর্বপ্রথম ছাড়তে হয়েছিল মায়ের দুধ
তারপর যা যা খেলাম সব ভেজাল
আরেকটু বড় হতে ছাড়তে হয়েছিল দূরন্ত কৈশোর, শৈশব
তারপর যা যা পেলাম সব দুঃখ
একদিন খবর এলো দূর দেশে যেতে হবে জ্ঞানার্জনের জন্য
তারপর যা যা শিখলাম সব আবর্জনা
শিখলাম স্বার্থ, রাজনৈতিক বক্তৃতা। দেখলাম কবিতার কাছে দেহ বিক্রি
বিত্তের মত্ত মোহে ভাইয়ে ভাইয়ে সংঘাত-দ্বন্দ্ব, খুন-যখম
অথচ দুই ভাইকে এক থালায়, এক হাতে খাওয়াতেন মা!
একদিন কাগজে বেরুলো একটা চেয়ার পেয়েছি
তারপর যা যা করলাম সব নিজের জন্য
আরেকদিন সকালে পেনশানের খতিয়ান নিয়ে বসলাম
তারপর পিছনে ফিরে যা যা দেখলাম সেখানে আমি একা, মস্তবড় শূন্য
ভোরবেলা মাইকে ঘোষণা এলো, 'ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন'
অতঃপর কবরে শোয়ানো হল। মায়ের পেটের মত মাটির পেট শান্তির হলো না
সাপ-বিচ্ছু ততোদিন পিছু ছাড়েনি যতোদিন দেহে এক টুকরো মাংস ছিল
পচানো রস মাটি শুষে খেলো। হাড়গুলোও রক্ষা পেল না অথচ কত শক্ত ছিল
আমিও পিছু ছাড়তাম না দুনিয়ার যেখানে যেখানে আমার জন্য স্বার্থ ছিল!
একদিন খোদার সাথে কথা হলো, জমিয়ে আড্ডা হলো অতঃপর রায় ঘোষণা হল
আমৃত্যু আগুনের লেলিহানে আমাকে জ্বালানি হতে হবে
কয়েক মুহুর্তের জন্য সবশেষে মুক্তি পেয়েছিলাম, যতোটুকু মনে পরে
আহ! কী আরাম! কী আরাম। হারামের পথে না চললে কতো ভালো হত
জীবনে যদি আরেকবার ফিরে যাওয়া যেত। সব ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতাম
সব মানুষের ঋণ ফিরিয়ে দিয়ে আরেকবার তাঁর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে স্বস্তি চাইতাম
আফসোস! মায়ের দুধের মত কোথাও খাঁটি কিছু নাই। বাকি সব ভেজাল; চিন্তাও রুগ্ন
রাজু আহমেদ।