আমার স্ত্রীকে শুধু বলেছিলাম তুমি আমাকে আগের মতো ভালোবাসো না। কেয়ার করো না।

একথায় সে কেঁদে দিল।

জানতে চাইলাম কাঁদার কারণ কি? (উচু কণ্ঠে)

উত্তর দিল,,,,,,,,,

সকালে গ্যাস থাকেনা তাই ভোরে উঠে রান্নাবান্না করা। থালাবাসন ধোয়া। আমি অফিসে যাই আমাকে যাওয়ার অব্ধি প্লেটে খাবার বেরে খাওয়া শেষ করে উঠা। আবার সবাই এক সাথে খাবার খেতে আসলে সবাইকে খাওয়ানো। রুম ধোয়ামোছা করা। আমার শার্ট পেন্ট ধোয়া। আমার জামাকাপড় ইস্ত্রি করা। পারিবারের সমস্ত কাজ নিজের যথেষ্ট শ্রম দিয়ে করা। গোসল করা। আবার দুপুরবেলা বাকি সব কিছু করা। রাতে সবাই এক সাথে খেতে আসলে সবাইকে আবার একত্রে খাওয়ানো। থালাবাসন গুছানো। ইত্যাদি…

নিজের চেষ্টার শেষটুকু দিয়ে কাজ করে আসলে ভুল ধরলে আবার করা।

পারিবারিক ছোটখাটো ঝামেলা মানসিক শান্তি হারিয়ে যায়।

যেটা আমি সহ্য করে নিতে পারি সেটা একজন মেয়ে এতকিছু করেও হাসিমুখে সহ্য করে নেওয়া।

স্ত্রীকে গতমাসে টেস্ট করালাম। আলহামদুলিল্লাহ পজিটিভ। বাবা হতে যাচ্ছি।

সে কোনকিছু খেতে পারেনা। এক প্লেটের হাফ প্লেট খাবার খায়। মাছ একদম খেতেই পারেনা। বমি হয়। জোর করে খেতে চাইলে বমি হয়।

এই সবকিছু মিলিয়ে সে নাকি নিজেকে নিজেই ভালো রাখতে পারছেনা। নিজেকে ভালোবাসতেও পারছেনা। তাই আমাকেও আগের মতো ভালোবাসতে পারেনা।

আমি তার কথাগুলো শুনে জোরে নিশ্বাস ফেললাম। মনে হচ্ছে আমার বুকের ভিতরে হাহাকার করছে। কাঁদতে চাই কিন্তু চোখ দিয়ে জল আসছেনা।

সে এত কষ্ট করে সবকিছু মানিয়ে নেয়।

তবুও চোখে তাকালে আমি দেখি তার কোন চেষ্টা কমতি নেই আমাকে হ্যাপী রাখার।

আমার গলা শুকিয়ে গেল। চোখভেজা অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে তাকে জড়িয়ে ধরে বললাম…

‘আমাকে মাফ করে দিও। এভাবে বলা আমার ঠিক হয়নি। তুমি যে আমাকে এভাবেও আরালে থেকে এতটা ভালোবাসো সেটা ভেবে দেখেনি।’ আমাদের সবার ভালোর জন্য কতকিছু করো। অথচ নিজের ভালো থাকাটাও ভুলে গেছো। প্লিজ মাফ করে দিও। কপালে চুমু দিয়ে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে অনেকক্ষণ প্রশান্তি নিলাম।

জরিয়ে ধরে শুধু ভাবতে লাগলাম ‘একটা মেয়ে কতকিছুই না করে পরিবারের জন্য’।

************************************(Respect স্ত্রী)।।।

Exit mobile version