উলিপুরে ইউপি নির্বাচনে আওয়ামীলীগের জয়ে বাঁধা বিদ্রোহীরা

উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী থাকলেও চমক দেখাতে পারেন বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে প্রচার প্রচারণা জমে উঠছে। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী থাকলেও চমক দেখাতে পারেন বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। দলীয়ভাবে বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। তবে অধিকাংশ ইউনিয়নে বিএনপিপন্থি প্রার্থীরা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। হেভিওয়েট ও জনপ্রিয় প্রার্থী না থাকায় এ উপজেলায় নৌকার ভরাডুবির আশংকা করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
আওয়ামীলীগ দলীয় সূত্রে জানা গেছে, স্বজনপ্রীতি ও মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণে তুলনামূলক কম জনপ্রিয় ব্যক্তিদের প্রার্থী করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এতে আওয়ামীলীগের মনোনীত নৌকা মার্কার প্রার্থী ছাড়াও দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন এবং নিজেদের মধ্যে কাঁদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত থাকার ফলে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীদের ভরাডুবির সম্ভবনা রয়েছে।
উপজেলা আওয়ামীলীগ সূত্রে জানা গেছে, গুনাইগাছ ইউনিয়ন পরিষদে নৌকার প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুর রউফ রিজু, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে লড়ছেন সাবেক ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান, দলদলিয়া ইউনিয়ন পরিষদে নৌকার প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের মৌজা কমিটির সদস্য লিয়াকত আলী সরকার, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান মুন্সী রানা, বুড়াবুড়ি ইউনিয়ন পরিষদে নৌকার প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আসাদুজ্জামান খন্দকার, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে আনারস প্রতীক নিয়ে লড়ছেন ওই ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সদস্য সাবেক চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকার, তবকপুর ইউনিয়ন পরিষদে নৌকার প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মোখলেছুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে লড়ছেন সাবেক জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা কৃষকলীগের সদস্য এবং বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াদুদ হোসেন মুকুল, থেতরাই ইউনিয়ন পরিষদে নৌকার প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল জলিল সরকার, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে লড়ছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ বদিউজ্জামান, ধামশ্রেনী ইউনিয়ন পরিষদে নৌকার প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সিরাজুল হক সরদার, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে লড়ছেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য কবীর উদ্দিন সরকার, এই ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ ঘরোনার আরও তিনজন প্রার্থী রয়েছেন। ধরনীবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদে নৌকার প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল গফফার সরকার, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে লড়ছেন উপজেলা কৃষকলীগের সদস্য এরশাদুল হক, দূর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদে নৌকার প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি খাইরুল ইসলাম বাবলু সরকার, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন উপজেলা কৃষকলীগের সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সাঈদ। বজরা ইউনিয়ন পরিষদে নৌকার প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য ও বর্তমান চেয়ারম্যান রেজাউল করিম আমিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ঘোড়া প্রতীক নিয়ে লড়ছেন বজরা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সদস্য আব্দুল কাইয়ুম সরদার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। অধিকাংশ ইউনিয়নে তুলনামূলক কম জনপ্রিয় নেতা নৌকা প্রতীক পাওয়ায় এবং আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় নৌকা প্রতীকের ভরাডুবির আশংকা করছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
জানা গেছে, উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৯টি ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে। এককভাবে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী রয়েছে সাহেবের আলগা, বেগমগঞ্জ, হাতিয়া ও পান্ডুল ইউনিয়নে। এছাড়া জাতীয় পাটি ৯টি ইউনিয়নে, বিএনপিপন্থী স্বতন্ত্র প্রার্থী ৯টি ইউনিয়নে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৮টি ইউনিয়নে, কৃষক শ্রমিক জনতালীগ ২টি ইউনিয়নে ও বাংলাদেশ ওয়াকার্স পাটির ১টি ইউনিয়নে প্রার্থী রয়েছে। আগামী ২৬ ডিসেম্বর উলিপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেন মন্টু বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন তাদের নামের তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তাদের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় কমিটি ব্যবস্থা নিবেন। তিনি আরও বলেন, তৃনমূলের ভোটে যারা জয়ী হয়েছেন, তাদের নামের তালিকা কেন্দ্রে জমা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে তৃনমূলের মতামতকে উপেক্ষা করে একাধিক ইউনিয়নে প্রার্থী পরিবর্তন করায় নেতাকর্মীরা হতাশ হয়েছেন। যার ফলে ভোটের মাঠে বিরুপ প্রভাব পড়েছে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি, নৌকার প্রার্থীদের বিজয়ী করতে। #
Exit mobile version