প্রেস বিজ্ঞপ্তি
ঊর্ধ্বতন র্যাব কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণার দায়ে ০১ জন প্রতারক’কে আটক এবং প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ও প্রতারণার মাধ্যমে গৃহিত টাকা উদ্ধার করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম।
১। “বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোাগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোড়ালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাব সৃষ্টিকাল থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। র্যাব-৭, চট্টগ্রাম অস্ত্রধারী সস্ত্রাসী, ডাকাত, ধর্ষক, দুর্ধষ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, খুনি, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও প্রতারকদের গ্রেফতার এবং বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মাদক উদ্ধারের ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করায় সাধারণ জনগনের মনে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
২। প্রতারণার স্বীকার ভুক্তভোগী ভিকটিম একজন তালাক প্রাপ্ত মহিলা। তার ০৮ বছরের দাম্পত্য জীবনে ৬ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তার স্বামী মোঃ ইলিয়াস এর সাথে পারিবারিক বিভিন্ন কলহের কারণে বনিবনা না হওয়ায় মনোমালিন্যের সৃষ্টি এবং স্বামী তাকে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। অতঃপর ভিকটিম তখন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে চট্টগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী ভিকটিম গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক ১৩২০ ঘটিকায় চট্টগ্রাম বিজ্ঞ আদালতে উক্ত মামলা সংক্রান্ত ব্যাপারে জানতে আসলে মোঃ আমান উল্লাহ নামক এক ব্যক্তির সাথে তার পরিচয় হয় এবং সে নিজেকে একজন র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে দাবি করেন ও বিজ্ঞ আদালতে কি কারণে এসেছেন জিজ্ঞাসা করলে ভিকটিম তখন তাকে বিস্তারিত বলে। তখন মোঃ আমান উল্লাহ উক্ত মামলা তদন্তের সকল কাজ করে দিবে এবং আসামীর নামে ওয়ারেন্ট বের করে আসামীকে গ্রেফতার করার ব্যবস্থা করে দিবেন বলে ভিকটিমকে আশ্ব^স্থ করে। ভিকটিম তার সকল কথা সরল মনে বিশ^াস করে মামলা তদন্ত ও আসামী গ্রেফতার সংক্রান্তে সাহায্য চাইলে মোঃ আমান উল্লাহ মামলাটি র্যাব দিয়ে তদন্ত করিয়ে দিবে এবং তার ডিভোর্সী স্বামী’কে গ্রেফতার করিয়ে দিবে মর্মে ০১ লক্ষ টাকা দাবি করে। ভিকটিম তখন তার কথায় বিশ^াস করে বিভিন্ন সময় মোঃ আমান উল্লাহ কর্তৃক ব্যবহিত দুইটি মোবাইল নাম্বারে সর্বমোট ৩৭,৫০০/- প্রদান করে। পরবর্তীতে ভিকটিম মোঃ আমান উল্লাহ’কে তার মামলা সংক্রান্তে এবং তার ডিভোর্র্সি স্বামীকে গ্রেফতার সংক্রান্ত ব্যাপারে জানতে চাইলে আমান উল্লাহ তখন ভিকটিমের নিকট পুনরায় আরো ২০ হাজার টাকা দাবি করে। এছাড়াও ভিকটিমকে বলে যে, যদি তাকে আরও ২০ হাজার টাকা না দেয়া হয় তাহলে তার মামলাটি ভিকটিমের বিপক্ষে যাবে এবং উল্টা তাকেই গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে বলে ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। ভিকমিট তখন বিষয়টি তার আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের লোকজনকে জানালে তারা তাকে নিকটস্থ র্যাব অফিসে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেয়।
৩। পরবর্তীতে ভিকটিম তার আত্মীয়-স্বজন ও পরিবারের কথা মতো র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বরাবর একটি লিখিত আবেদন দাখিল করেন। উক্ত আবেদনের বিষয়টি র্যাব-৭, চট্টগ্রাম মানবিকতার সহিত আমলে নিয়ে উল্লেখিত ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিকে সনাক্ত ও গ্রেফতারের জন্য ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার অব্যাহত রাখে। এরই প্রেক্ষিতে গত ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ খ্রিঃ আনুমানিক ১৬২০ ঘটিকায় চট্টগ্রাম জেলার ভূজপুর থানাধীন ভূজপুর ইউনিয়নস্থ কাজীর টিলা (পাগলীছড়ি) নামক এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আসামী ১। মোঃ আমান উল্লাহ @ মানিক (২৯), পিতা- মৃত আবুল কালাম, সাং- পশ্চিম সিংহরিয়া (দক্ষিণ ভূইয়াবাড়ি), থানা- ভূজপুর, জেলা- চট্টগ্রাম কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে সে উপরে উল্লিখিত প্রতারণার কথা অকপটে স্বীকার এবং সে জ্ঞাতসারে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে জানায়। অতঃপর আসামীর পরিহিত প্যান্টের পকেট হতে প্রতারণার কাজে ব্যবহিত ০১ টি এনড্রয়েড মোবাইল এবং প্রতারণামূলকভাবে অর্জিত নগদ ৩০ হাজার টাকা উপস্থিত স্বাক্ষীদের সামনে উদ্ধার করা হয়।
৪। উল্লেখ্য, সিডিএমএস পর্যালোচনায় ধৃত আসামী মোঃ আমান উল্লাহ @ মানিকের বিরুদ্ধে সিএমপি এর চান্দগাঁও থানার মামলা নং-১৯/৪১৫, তারিখ-১২/০৯/২০১৯ ইং, ধারা-মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ১০(২)-এ ০১ টি মামলা পাওয়া যায়।
৫। গ্রেফতারকৃত আসামী সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে চট্টগ্রাম জেলার সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।