এ টি এম শামসুজ্জামানের মৃত্যুবার্ষিকী আজ ১১ বার হজ করেছেন এ টি এম শামসুজ্জামান, ইচ্ছা ছিল আরেকবার

বরেণ্য অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামানের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি)। ২০২১ সালের  আজকের এই দিনে ৮০ বছর বয়সে প্রয়াত হোন তিনি। সিনেমায় খল চরিত্রে অভিনয় করলেও ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন খুবই ধার্মিক। ১১ বার হজ করেছেন এ টি এম শামসুজ্জামান। তবে আরেকবার হজে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল জনপ্রিয় এই অভিনেতার।

প্রয়াত হওয়ার মাস খানেক আগে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে তিনি জানিয়েছিলেন, মক্কা ও মদিনার প্রেমে পাগল তিনি। সুস্থ থাকলে আরেকবার হজে যাওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। কিন্তু সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি তার। চিরবিদায় জানিয়েছেন পৃথিবীকে।

এ টি এম শামসুজ্জামান বলেছিলেন, ১১ বার হজ করেছি। আরও অন্তত একবার যাওয়ার ইচ্ছা আছে। তাহলে ১২ বার হজ হবে।

বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান ছিলেন একাধারে পরিচালক, কাহিনিকার, চিত্রনাট্যকার, সংলাপকার ও গল্পকার। অভিনয়ের জন্য একাধিকবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। শিল্পকলায় অবদানের জন্য ২০১৫ সালে পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় সম্মাননা একুশে পদক।

 

এ টি এম শামসুজ্জামান ১৯৪১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর নোয়াখালীর দৌলতপুরে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। পড়াশোনা করেছেন ঢাকার পোগোজ স্কুল, কলেজিয়েট স্কুল, রাজশাহীর লোকনাথ হাইস্কুলে। তাঁর বাবা নূরুজ্জামান ছিলেন নামকরা উকিল এবং শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। মা নুরুন্নেসা বেগম। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে শামসুজ্জামান ছিলেন সবার বড়।

পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর ‘বিষকন্যা’ চলচ্চিত্রে সহকারী পরিচালক হিসেবে এ টি এম শামসুজ্জামানের চলচ্চিত্রজীবনের শুরু ১৯৬১ সালে। প্রথম কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছেন ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রের জন্য। ওই চলচ্চিত্রের পরিচালক ছিলেন নারায়ণ ঘোষ মিতা, এ ছবির মাধ্যমেই অভিনেতা ফারুকের চলচ্চিত্রে অভিষেক। শতাধিক চিত্রনাট্য ও কাহিনি লিখেছেন এ টি এম শামসুজ্জামান।

এ টি এম শামসুজ্জামানের অভিনয় জীবন শুরু হয়েছিল কৌতুক অভিনেতা হিসেবে। সে সময় তিনি বেশ কয়েকটি সিনেমায় কৌতুকাভিনেতার ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। এই চরিত্রে তার অভিনীত সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে—‘জলছবি’, ‘যাদুর বাঁশি’, ‘রামের সুমতি’, ‘ম্যাডাম ফুলি’, ‘চুড়িওয়ালা’ ইত্যাদি। কৌতুক চরিত্রে তিনি সে সময় দারুণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন।

এরপর নিজের অবস্থান আরও বেশি পোক্ত করেন খল অভিনেতা হিসেবে। খল চরিত্রে এ টি এম শামসুজ্জামানের অভিষেক হয় ১৯৭৬ সালে চলচ্চিত্র পরিচালক আমজাদ হোসেনের ‘নয়নমণি’ সিনেমার মাধ্যমে। এই সিনেমার পর তিনি বহু বছর ধরে খল চরিত্রে অভিনয় করেছেন। আর কুড়িয়েছেন প্রশংসা। নেতিবাচক ভূমিকায় এটিএম যেসব সিনেমায় অভিনয় করেছেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে—‘অনন্ত প্রেম’, ‘দোলনা’, ‘অচেনা’, ‘মোল্লা বাড়ির বউ’, ‘হাজার বছর ধরে’ ও ‘চোরাবালি’।

Exit mobile version