কক্সবাজারে যৌতুকের মামলায় প্রতিবন্ধী নূর আলীর দুই বছরের কারাদণ্ড!

বেলাল আজাদ, কক্সবাজার:
শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী  আলী নূর আলী জানে না বুঝে না যে, সাজা বা কারাদণ্ড কী! তবুও তার বিরুদ্ধে স্ত্রীর দায়ের করা একটি যৌতুকের মামলায় দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ হয়েছে। কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪র্থ আদালত সি.আর-১৫/২০২৩ (ধারা: যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারা) নম্বর মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে গত ১২ নভেম্বর দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন। সাজাপ্রাপ্ত নূর আলী (৪০) কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাইছড়ি গ্রামের মৃত ইউছুপ আলীর পুত্র। সে একজন শারীরিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী।
জানা যায়, গত ১ জুন ২০০৫ সালে উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের লম্বরীপাড়া গ্রামের ফকির আহমেদের কন্যা দিলোয়ারা বেগম (৩০) কে কাবিননামা মূলে সামাজিক ভাবে প্রতিবন্ধী নূর আলীর বিয়ে হয় এবং তাদের দীর্ঘ কালের দাম্পত্যে ৩ পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে তাদের সংসারে কলহ হওয়ায় গত ৫ জানুয়ারী ২০২৩ সালে স্ত্রী তার বিরুদ্ধে যৌতুক দাবীর অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। সেই (সি.আর-১৫/২০২৩) মামলায় আসামী নূর আলী একবার গ্রেফতার হয়ে কয়েক দিন কারাবাসের পর জামিনে মুক্তি পেয়ে তার পরবর্তীতে মামলায় পলাতক ছিলেন। দীর্ঘ দিন মামলাটি বিচারাধীন থাকার পর গত ১২ নভেম্বর আসামীর অনুপস্থিতিতে (পলাতক থাকাবস্থায়) আসামী নূর আলীর বিরুদ্ধে রায় প্রচার করা হয়। রায়ে আসামীর বিরুদ্ধে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। বিজ্ঞ আইনজীবীগণের মতে, বিচারিক আদালতের কাছে আসামীপক্ষে আসামী যে একজন প্রতিবন্ধী তা  উপস্থাপন না করলে, ‘আদালত আসামী প্রতিবন্ধী তা জানার কথা নয়। আর বিচার কার্যক্রমেও অনুপস্থিত (পলাতক) ছিল। সুতরাং আসামীর শাস্তি যথাযথ আইনী প্রক্রিয়ায় হয়েছে”। এদিকে মামলাটির বাদী ও আসামীর সহিত এই প্রতিবেদক যোগাযোগ করলে; বাদী জানান, আসামী আংশিক প্রতিবন্ধী হলেও সে ঘর-সংসার ও স্ত্রী-সন্তান নির্যাতন ঠিকই করতে পারে আর আসামী জানান, তিনি মামলার সাজা বা কারাদণ্ড কি জানেন বুঝেন না!
অন্য দিকে, এলাকার লোকজন প্রতিবন্ধী নূর আলীর দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের খবর শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
Exit mobile version