“কাল তোমাকে আমার বন্ধুর ছেলে দেখতে আসবে মেঘ৷ কাল কলেজ যেওনা বুঝলে?”

“কাল তোমাকে আমার বন্ধুর ছেলে দেখতে আসবে মেঘ৷ কাল কলেজ যেওনা বুঝলে?”
বাবাইয়ের কথা শুনে মাথা নাড়ালাম। যার অর্থ আচ্ছা।
বাবাই রুম থেকে যেতেই দরজা লাগিয়ে তাড়াতাড়ি কল দিলাম সাদমানকে। ওপাশ থেকে কল ধরতেই সাদমান মলিন কন্ঠে বললো,
” বলো মেঘ।”
আমি ভেজা কন্ঠে বললাম, “এইবারও চাকরিটা হলোনা?”
ওপাশ থেকে শুনতে পেলাম সাদমানের হতাশ কন্ঠ। তারপর বললো, “আমিতো চেষ্টার কোনো খামতি রাখছিনা মেঘ। ” “মেঘ আরও কিছুদিন বিয়েটা আটকে রাখো। আমি কয়েকদিনের মধ্যেই চাকরি পেয়ে তোমার বাবা-মায়ের কাছে যাবো তোমাকে চাইতে।”
আমি এইবার কেঁদেই দিলাম। কেঁদে বললাম,
“এইবার আর আটকানো যাবেনা সাদমান। এইবার বাবাই খুব কঠিন করে বলেছে, ” এইবার আর কোনো না শুনবোনা।”
ওপাশ থেকে সাদমান কিছু না বলে কল কেটে দিলো। আমি জানি ছেলেটা এখন ভীষণভাবে খোদাকে বলবে, “হে খোদা..পৃথিবী এতো নিষ্ঠুর কেনো? কেনো বেকারত্বের কাছে হেরে যায় ভালোবাসা? কেনো খোদা? কেনো? আমি চাপা আর্তনাদে কেঁদে উঠলাম। এইবার কি তবে সত্যি সত্যি বিয়েটা হয়েই যাবে?”
আজ আমার বিয়ে। হ্যাঁ..বাবাইয়ের বন্ধুর ছেলের সাথেই। শত চেষ্টা করেও আটকাতে পারিনি বিয়েটা। চোখ বেয়ে পানি ঝড়ছে। শেষ বারের মতো সাদমানকে দেখতে খুব ইচ্ছে করছে কিন্তু, উপায় যে নেই। সবার আড়ালে গিয়ে কল দিলাম। ওপাশ থেকে কল ধরতেই কান্না করতে করতে বললো,
” পারলাম না মেঘ, আমি পারলাম না তোমাকে নিজের করে রাখতে। হেরে গেছি আমি নিজের ভালোবাসার কাছে।” ছেলেটার এমন মেয়ে কান্না আমার সহ্য হচ্ছিলোনা। কেটে দিলাম কল। কান্না ভেজা অবস্থায় ভাবলাম, “কোনো একদিন সাদমানও প্রতিষ্ঠিত হবে। গাড়ি, বাড়ি ওর’ও হবে। কোনো একদিন আবার হয়তো আমাদের দুজনেরই দেখা হবে।। কিন্তু, সেইদিন আমরা একে অপরের কাছে থাকবোনা। থাকবো, দুজন ভিন্ন ব্যক্তির পাশে। কেনো সত্যি কারের ভালোবাসাগুলো হেরে যায় পরিবারের কাছে? কেনো হেরে যায় বেকারত্বের কাছে? এইসব ভাবতেই গাল বেয়ে চোখের পানি ঝরছে।
Exit mobile version